প্রবীণ অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা ক্রমশ আরও সঙ্কটজনক হয়ে উঠছে ৷ চিকিৎসকরা এখন তাঁকে নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত ৷ করোনা আক্রান্ত হয়ে গত মঙ্গলবার থেকে তিনি কলকাতার বেলভিউ নার্সিংহোমে ভর্তি ৷ প্রথমে ছিলেন কেবিনে ৷ পরে, শারীরিক অস্থিরতা বাড়ায় তাঁকে আই সি ইউ-তে স্থানান্তরিত করা হয়৷ ৷ কিন্তু, সেখানেও অস্বিরতা কমছে না৷ বরং মাঝেমধ্যেই রেগে যাচ্ছেন ৷ হাত-পা ছুঁড়ছেন ৷ এই অস্থিরতার জন্যই গত দু’দিন যাবৎ তাঁর মাথার এম আর আই করা যাচ্ছে না ৷ চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলা হয়, “কোভিড এনকেলোপ্যাথি” ৷
অর্থাৎ মস্তিস্কে কোভিড সংক্রমণের প্রভাব৷ ৷ আজ অবশ্য চিকিৎসকরা এম আর আই করার চেষ্টা করবেন বলে জানা গেছে ৷ তারপর মাথায় কিছু পাওয়া না গেলে, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে পাঠানো হবে আই টি ইউ-তে ৷
অন্যদিকে, তাঁর মূত্রনালীতেও সংক্রমণ দেখা দিয়েছে ৷ পাওয়া গেছে ইকোলাই-এর জীবাণু ৷ তাঁর শরীরে জ্বর ঘোরাফেরা করছে ১০১ ডিগ্রীর মধ্যে ৷ রক্তে অক্সিজেনের মাত্রাও ৯৫-এর নিচে ৷ প্রতিদিন তাঁকে ১০ লিটারের বেশি অক্সিজেন দিতে হচ্ছে ৷ গত দু’দিন প্লাজমা থেরাপি করা হয়েছে ৷ আজও এক ইউনিট প্লাজমা দেওয়া হবে ৷ প্রতি বছর ভারতে গ্রীষ্মকাল ও তার পরবর্তী সময়ে রক্তের খুব আকাল দেখা দেয় ৷ ফলে, প্লাজমা পেতেও অত্যন্ত অসুবিধা হয় ৷ সেই অবস্থাতে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ এখনও প্লাজমা যোগান দিয়ে যাচ্ছেন৷
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চিকিৎসার ক্ষেত্রে দুটি ব্যাপার বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ দুটিই পুরনো ৷ এক, তাঁর বহু বছরের প্রোস্টেট ক্যানসার ৷ এবং দুই, শ্বাসকষ্টের সমস্যা ৷ তিনি বিদেশে গিয়েও ক্যানসারের চিকিৎসা করিয়েছিলেন ৷ কিন্তু, কোনও ফল হয়নি ৷ আবার, ২০০৬ সাল থেকে তিনি সি ও পি ডি-তে আক্রান্ত ৷ এমনিতেই বয়স্কদের ক্ষেত্রে কোভিড সংক্রমণে অত্যন্ত ঝুঁকি থাকে৷ তার উপর ৮৫ বছরের সৌমিত্রবাবুর অনেকগুলি কো-মর্বিডিটি রয়েছে ৷ তাই, ১৬ জন চিকিৎসকের যে টিম তাঁকে চব্বিশ ঘন্টা পর্যবেক্ষণ করছেন, তাঁরা রীতিমত চিন্তিত ৷
ক্ষপ্রসঙ্গত, সেপ্টেবরের শেষে এবং অক্টোবরের শুরুতে ক্ষতিনি কলকাতার বিভিন্ন স্টুডিওতে শ্যুটিং করেন ৷ তারপর থেকেই তাঁর শরীরে করোনার নানা উপসর্গ দেখা দেয় ৷ শেষে গত মঙ্গলবার তাঁকে অভিজাত নার্সিংহোম বেলভিউ-তে ভর্তি করা হয়৷