ভারত ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। যেখানে নানা ধর্ম, নানা বর্ণ, নানা জাতি, নানা ভাষার মানুষের বাস। সকলেই একে অপরের সহনাগরিক। কোনওদিনই ধর্মীয় ভেদাভেদ গুরুত্ব পায় না। কারণ, বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যই ভারতের ঐতিহ্য। কিন্তু সত্যি কী তাই? নাকি ধর্মের কারণে মানুষে মানুষে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে দূরত্ব?
বাড়ছে অসহিষ্ণুতা? ঘৃণ্য ধর্মীয় আক্রমণে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে আমাদের ঐতিহ্য? রেডিও সঞ্চালক মীর আফসার আলির মৌলবাদীদের শিকার হওয়ার ঘটনায় এমনই নানা প্রশ্নের ভিড়। বুধবার বিকেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি পোস্ট করেন মীর (Mir Afsar Ali)। টিভির পর্দা হোক কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া সর্বত্রই অনুরাগী প্রচুর। তাই তো তাঁর পাঞ্জাবি, জওহর কোট পরা ছবি ভাইরাল হয়ে যায় নিমেষেই।
মীরের ছবি দেখে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন তাঁর অনুরাগীরা। এ পর্যন্ত বেশ ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু মৌলবাদীদের নজর এড়াল না সেই ছবি। ক্যাপশন দেখে কার্যত রণমূর্তি ধারণ করল মৌলবাদীরা। মীরের ‘অপরাধ’ একটাই তিনি ছবির ক্যাপশনে লিখেছিলেন “ধীরে ধীরে পুজোর মুডে ঢুকছে দেখো কে?”
এই ক্যাপশনেই মৌলবাদীদের চক্ষুশূল হয়ে উঠলেন মীর। একজন মুসলমান (Muslim) পরিবারের সন্তান কিনা দুর্গাপুজো (Durga Puja) নিয়ে ‘আদিখ্যেতা’ করছেন? এই প্রশ্ন তুলতে শুরু করে মৌলবাদীরা। এমনকী তাঁর পরিবার নিয়েও নানা কুরুচিকর আক্রমণ করতে থাকে মৌলবাদীরা। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় মৌলবাদীদের খোঁচা সহ্য করে মুখ বুজে থাকার পাত্র নন মীর। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফেজ টুপি পরা ছবিও পোস্ট করেন তিনি।
সঙ্গে সম্প্রীতির বার্তা দিতে একটি কবিতাও লেখেন। এহেন ‘ঘৃণ্য’ আক্রমণের বিরোধিতায় মীরের পাশে দাঁড়িয়েছেন অনেকেই। মৌলবাদীদের কড়া ভাষায় জবাবও দিয়েছেন তাঁরা। একা মীরই নন। সাম্প্রতিককালে বারবার মৌলবাদীদের রোষের শিকার হয়েছেন অভিনেত্রী-সাংসদ নুসরত জাহান (Nusrat Jahan)। সংসদে শাখা,
সিঁদুর পরে শপথ নেওয়ার পর থেকে বারবার তাঁকে আক্রমণ সহ্য করতে হয়েছে। এমনকী রথের রশিতে টান দিয়েও একই পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছিল নুসরতকে। সত্যিই কী দিন দিন বাড়ছে অসহিষ্ণুতা? একের পর এক ঘটনায় সেই প্রশ্নই যেন আরও জোরাল হচ্ছে।