মাদক দিয়ে নিরাপরাধ কাউকে ফাঁসানোর চেষ্টা করলেও, সেই পুলিশ সদস্যকে বিদায় দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হবে জানিয়েছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরপিএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল আলীম মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, এখন পর্যন্ত রংপুরে মেট্রোপলিটন পুলিশের কারো বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে যদি কোন পুলিশ সদস্য নিরাপরাধ কাউকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করে এ ব্যাপারে এক চুল ছাড় দেয়া হবে না।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে বিদায় দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর নগরীর লিটন রংপুর ইন’র কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন আরপিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল আলীম মাহমুদ। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
পুলিশ কমিশনার বলেন,
রংপুর নগরীর মানুষ যাতে নিরাপদে চলতে পারে, বাস করতে পারে সেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান কাজ। মাদকের ব্যাপারে কাউকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। এটা যদি পুলিশও হয়, তবু ছাড় নেই। কোন পুলিশ সদস্য মাদক সেবন করলে প্রথমত তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হবে। দ্বিতীয়ত তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। আবদুল আলীম বলেন, বিগত দুই বছরে মহানগর বাসীর প্রত্যাশা অনুযায়ী তাদের নিরাপত্তা বিধান ও আইনগত সেবাসহ আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হয়েছে।
সব গুরুত্বপূর্ণ ও আলোজিত হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন খুনিদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। গত এক বছরে এক হাজার সাতটি মামলা রুজু হয়েছে। এরমধ্যে ৭৮৩টি মামলার তদন্ত সমাপ্ত করে নিষ্পত্তি করে ১ হাজার ২০১ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ট্রাফিক বিভাগ এক বছরে ৬০ হাজার ৯৪২টি মামলা রুজু করে ২ কোটি দশ টাকা জরিমানা আদায় করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করেছে। এছাড়াও করোনা মহামারীর সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরী, মাস্ক সরবরাহ,
অসহায় দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ, মুজিববর্ষের বিভিন্ন কার্যক্রম ও বৃক্ষ রোপনসহ বিভিন্ন সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ কমিশনার বলেন, রংপুর মেট্রোপলিটন আদালতের গেজেট পাশ হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যক্রমও শুরু হবে। এতে করে মামলার জট কমে আসবে এবং বিচারকার্য আরো সহজ হবে।
এসময় তিনি বলেন, আগামী বছরের প্রথম কাজ হলো পুরো নগরীর রাস্তা বিশেষ করে হাজিরহাট থেকে দমদমা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা। এতে করে সড়ক দূর্ঘটনা রোধসহ ছিনতাই, ডাকাতিসহ অন্যান্য অপরাধে জড়িতদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান, উপ-পুলিশকমিশনার(সিটিএসবি) আবু বক্কর সিদ্দীক,
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মারুফ আহম্মেদ ও উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর দপ্তর ও প্রশাসন) মহিদুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
সাংবাদিক সম্মেলন শুরুর পূর্বে সাফল্য ও গৌরবময় সেবার দুই বছর শিরোনামে একটি থিম সং এবং বিগত দুই বছরের বিভিন্ন কর্মকান্ড, অপরাধ দমন, মাদক উদ্ধার, অভিযানসহ বিভিন্ন অপরাধিদের গ্রেফতার ও পুলিশের সেবামূলক কর্মকান্ডের তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়।