যার হাত ধরে বাংলা সিনেমার চরিত্র গুলো অন্যরকম ভাবে কথা বলতে শিখেছে।যার সিনেমায় প্রচলিত সম্পর্কগুলোর বাইরে গিয়ে ও নারী পুরুষের সম্পর্কের টানা পোড়েন, মানুষের ভেতরে যে আরেকটি সত্বা বিরাজমান তার অন্তরদ্বন্দ যার সংলাপ প্রক্ষেপণের মাধ্যমে দর্শক সমালোচক সবার হৃদয় ছুয়েছে, চোখের কোন কখন যে ভিজেছে তা দর্শক নিজেই টের পায়নি।
সিনেমার চরিত্রের সাথে নিজেকে যে কখন একাকার করেছে, নিজেই হয়ে উঠেছে সেই সিনেমার নায়ক বা নাইকা চরিত্র তা বুঝতে পারেন নি সেই সিনেমার যাদুকর ঋতুপর্ণ ঘোষ
সিনেমার ভাষা যেহেতু অন্য সব কিছু থেকে আলাদা, তাই সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করতে সিনেমা আলাদাভাবে এক অনন্য ভূমিকা পালন করে। কিংবা কখনো কখনো নিজস্বতার কারণে খোদ সিনেমাই আলাদা একটি সাহিত্য গড়ে নেয় নিজের মত করে। অথবা সিনেমার ভাষা না জানায় সাহিত্যের গাঁড় মারতেও দ্বিধা করে না এই সিনেমা-ই।
তবে ঋতুপর্ণ ঘোষ নিজস্বতার বলে সিনেমাকেই সাহিত্যে পরিণত করেছেন। ফলে তার নির্মিত সিনেমা মূল্যায়িত হয় ভিন্নভাবে। কলকাতার সিনেমার আমূল পরিবর্তন যে নির্মাতাদের হাত ধরে শুরু হলো তাদের অন্যতম একজন, এ প্রজন্মের পূর্ব-পুরুষ ঋতুপর্ণ ঘোষ। ধারার বিপরীতে দাঁড়িয়ে হেঁটেছেন সিনেমাকে সমৃদ্ধ করতে।
করেছেনও। যার ফলে ঋতুপর্ণ পরবর্তী প্রজন্ম সিনেমাকে ঢেলে সাজিয়েছেন নিজস্ব ভঙ্গিমায়। কিন্তু তাকে তার প্রাপ্য স্থানেই রেখেছেন। অবশ্য না রাখার কোনো কারণও নেই। কেননা কেউ পরিচয় করিয়ে দিক কিংবা না দিক, ঋতুপর্ণের সিনেমা ঋতুপর্ণকে পরিচয় করিয়ে দিবে আলাদাভাবে। তার উল্লেখযোগ্য সিনেমা হচ্ছে চোখের বালি, অন্তরমহল, সব চরিত্র কাল্পনিক, খেলা, তিতলি,
আরেকটি প্রেমের গল্প, বাড়িওয়ালি, আবহমান, দহন, উনিশে এপ্রিল, চিত্রাঙ্গদা, রেইনকোট, দি লাষ্ট লিয়ার, শুভ মহরত, উৎসব, দোসর, নৌকাডুবি,অসুখ ইত্যাদি।
আজ ঋতুপর্ণ ঘোষের জন্মদিন। আমাদের ঋতু সাতটি। তবে সময়ের পরিক্রমায় ছয় ঋতু ঘুরেফিরে এলেও একটি ঋতু আর ফিরে আসে না!
তবুও ঋতু আছে হৃদয়ে।
শুভ জন্মদিন, ঋতুপর্ণ ঘোষ৷