গরমে ভারি আরামদায়ক, রসালো ও সুমিষ্ট এই ফল তালের শাস। বলদায়ক ও পুষ্টিকারক এ তালের শাস এখন ঝিনাইদহের হাট বাজারে উঠতে শুরু করেছে। জানা যায়, বাংলাদেশে তালের চাষ হলেও ফলটির আদি নিবাস আফ্রিকা। কেউ কেউ বলেন এর জন্মস্থান আমাদের উপমহাদেশেই। তবে এর জন্ম যেখানেই হোক, ফলটি আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে গেছে এটাই সত্য। এই সময়টিতেই বাজারে পাওয়া যায়। কেউ বলে তালের শাস, কেউ বলে তালের আশাড়ি, কেউ বলে তালের আঁটি। গরমের মধ্যে তৈলাক্ত খাবারের চেয়ে তালের শাস অনেক উপকারী। এর রয়েছে অনেক গুনাগুন। তাই জৈষ্ঠের এ মধু মাসে বাজারে নানা ফল উঠলেও জনপ্রিয় তালের শাস।
গ্রীস্মের এই দিনে তালের শাঁস খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার। তাই সবার হাতে কম বেশি পৌছে যায় কঁচি তালের শাস। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রচুর গরমে তালের কচি শাঁস এবং এর ভেতরের মিষ্টি পানি তৃষ্ণা মিটিয়ে শরীরে এনে দেয় আরামদায়ক অনুভূতি। তালের শাসে প্রতি ১০০ গ্রামে ০.৮ গ্রাম খাদ্যপযোগী খনিজ পদার্থ ২০.৭ গ্রাম, শর্করা ০.৮ গ্রাম, আমিষ ০.৫ গ্রাম আঁশ রয়েছে। গরমে শরীরের পানির অভাব পূরণ করতে এর মধ্যে ৭৭.৫ ভাগ জলীয় অংশ রয়েছে। এছাড়া ০.৫ গ্রাম খাদ্য আঁশ থাকায় এটি হজমে সহায়ক। অবাক করার মতো খাদ্যশক্তি রয়েছে তালের শাঁসে। প্রায় ৮৭ কিলো ক্যালোরি। ৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকায় তালের শাঁস হাড় গঠনেও দারুন ভূমিকা রাখে।
জেলার বিভিন্ন এলাকায় তালগাছ রয়েছে। এখন উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও বাসস্ট্যান্ডগুলোতে এবং অলিতে গলিতে তালের শাস বিক্রি করে অনেক হত দরিদ্র মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছেন। সদর উপজেলার ডাকবাংলায় তালশাস বিক্রিতা আরশেদ আলি জানান, প্রতিবছরই তিনি তালের শাস বিক্রি করে সংসার চালান। গ্রামাঞ্চলে ঘুরে ঘুরে তাল কিনে এনে শাস বিক্রি করেন। প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ শাস বিক্রি করেন। একটি শাস আকার ভেদে ৪ থেকে ৫টাকা দরে বিক্রি করছেন। এতে তার বেশ টাকা লাভ হয়। বিক্রি করে সংসার ভালই চলে যায়।
তালের শাসের পুষ্টি গুনাগুণ সম্পর্কে ডা. মেহেদী হাসান বলেন, তালের শাস শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। গরমের দিনে তালের শাসে থাকা জলীয় অংশ পানি শূন্যতা দুর করে। এছাড়া ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, এ, বিকমপে¬ক্সসহ নানা ধরনের ভিটামিন রয়েছে। তালে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। কচি তালের শাস রক্তশূন্যতা দুর করে। চোখের দৃষ্টি শক্তি ও মুখের রুচি বাড়ায়।