যশোরে গত ২০ দিনে ১৭ টি অবৈধ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ হয়েছে। সামান্য দিনের ব্যবধানে এতোগুলো প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রীতিমতো রেকর্ড সৃষ্টি করেছে যশোর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানিয়েছেন অবৈধ হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারের অনুমোদন না নিয়ে খুলে বসা হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে
চিকিৎসার নামে মহাপ্রতারণার ব্যবসা চলছে। তাদের ফাঁদে পড়ে অনেক রোগী নানা হয়রানি শিকার হচ্ছে। আবার মোটা অংকের টাকা হারিয়েও সঠিক চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত মানুষ। সাইনবোর্ড সর্বস্ব এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়মনীতির বালাই নেই, হাতুড়ে টেকনিশিয়ান দিয়েই চালানো হয় রোগ নির্ণয়ের যাবতীয় পরীক্ষা এবং দেয়া হয় মনগড়া রিপোর্ট।
অপারেশনের জন্য ভাড়া করে আনা হয় চিকিৎসক। পরবর্তী চিকিৎসার জন্য আর চিকিৎসকের খুঁজে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। অবৈধ এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গত ২১ জুলাই থেকে অভিযান শুরু করেছে যশোরের স্বাস্থ্য বিভাগ। ৯ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ করা হয়েছে ১৭ টি হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে. বন্ধ হওয়া হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো হলো যশোর শহরের যশোর শহরের নওয়াপাড়া রোডের ল্যাবজোন হাসপাতাল, দেশ ক্লিনিকের ডায়াগনস্টিক কার্যক্রম, যশোর ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের সততা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, আধুনিক হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক কার্যক্রম, মুজিব সড়কের ল্যাব এইড হাসপাতাল, সদরের বসুন্দিয়ার মহুয়া ক্লিনিক, খাজুরার মাতৃভাষা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফারিহা হাসপাতাল, মণিরামপুর উপজেলার মুন হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার (হাসপাতাল মোড় শাখা), নিউ প্রগতি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিউ লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টার ,
মুন হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার (কুয়াদা শাখা), চৌগাছা উপজেলার কপোতাক্ষ ক্লিনিক, মায়ের দোয়া পাইভেট ক্লিনিক, বিশ্বাস ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও পল্লবী ক্লিনিক।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানিয়েছেন, জেলার অবৈধ হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিদিন কোন না কোন প্রতিষ্ঠান অভিযান বা পরিদর্শন করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠান মালিকরা স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালকের কাছে নতুন লাইসেন্স বা হালনাগাদ লাইসেন্সের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছেন।
কিন্তু নানা কারণে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে এখনো অনুমোদন মেলেনি। লাইসেন্স পাওয়ার আগেই প্রতিষ্ঠানগুলো নানা অনিয়মের মধ্যদিয়ে অবৈধভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে। চিকিৎসার নামে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১৭ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৪ টি প্রতিষ্ঠানে নানা দোষ ত্রুটি সংশোধনের জন্য আল্টিমেটাম হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে মালিকপক্ষ ত্রুটি সংশোধনে ব্যর্থ হলে পরবর্তী পরিদর্শনের সময় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, যশোরে জেলায় মোট বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে ২৬২ টি। এরমধ্যে ২১১ টি হলো অবৈধ।