যশোরে ৪ জন চিকিৎসক ২ জন ব্যাংকার ও ২ জন পুলিশ সদস্যসহ নতুন করে ৪৩ জনের কোভিড-১৯ নভেল করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে ১ জন চিকিৎসকের পরিবারের ৪ জন রয়েছেন। এই নিয়ে বুধবার পর্যন্ত জেলায় করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৯৩৯ জন। এদিকে মঙ্গলবার রাতে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে আসলাম হোসেন (৬০) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে।তিনি শহরের বেজপাড়া এলাকার কাশেমের ছেলে।
যশোর সিভিল সার্জন অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা ডা. রেহেনেওয়াজ জানিয়েছেন, বুধবার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টার থেকে পাঠানো ৯৫ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে ৪৫ জনের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়। এরমধ্যে ৩ জন পুরাতন রোগী রয়েছেন। ফলাআপ পরীক্ষায়ও তাদের পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। আর ১ জন রোগীর নাম আমাদের তালিকায় নেই। অন্য জেলার রোগীর ফলাফল যশোরের তালিকায় চলে আসতে পারে। ফলে নতুন শনাক্ত হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ জন। একই দিন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (খুমেক ) ল্যাব থেকে আরো ২ জনের করোনা শনাক্তের ফলাফল আসে। সেই হিসেবে নতুন শনাক্ত ৪৩ জনের মধ্যে যশোর সদর উপজেলায় ৪০ জন, শার্শা উপজেলায় ১ জন, ঝিকরগাছা উপজেলায় ১ জন ও অভয়নগর উপজেলায় ১ জন। ডা. রেহেনেওয়াজ জানান, বুধবার নতুন করে ৩৬ জনকে করোনামুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আর করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে আরও ১৮৩ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য যবিপ্রবির জেনোম সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য উপজেলার মেডিকেল অফিসার ডা. আদনান ইমতিয়াজ জানান, নতুন আক্রান্তদের ৪১ মধ্যে তাদের মধ্যে ৭ জনকে অন্য জেলায় রেফার্ড করা হয়েছে। আর ৩ জনের হদিস মেলানো যায়নি। বাকি ৩১ জনের মধ্যে যশোর পৌর শহরে ২৩ জন ও সদর উপজেলার ৮ জন বসবাস করেন। ডা. আদনান ইমতিয়াজ জানান, আক্রান্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ডা. ফারহানা ইয়াসমিন (৩৮), ডা. রুম্মন জাহান লিজা (৪০), ডা. সিফাত (২০), ডা. অনুপ (৩২), ব্যাংকার জাহিদুল ইসলাম (৪৩), রওশন আলী (৫৬), পুলিশ সদস্য নজুরুল ইসলাম (৩৫) ও সোহেল রানা (২৯)। তিনি জানান, ডা. লিজার পিতা প্রফেসর ডা. আব্দুস সামাদ খান করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩১ জুলাই মারা যান। আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন ডা. জাহাঙ্গীরের মা খাদিজা বেগম (৭৪), স্ত্রী তানিয়া শারমিন(৩১), ছেলে তিসান (১২) ও গৃহপরিচারিকা চম্পা (৩৮)। যবিপ্রবির এনএফটি বিভাগের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষণ দলের সদস্য ড. শিরিন নিগার জানিয়েছেন, জেনোম সেন্টারে যশোর জেলার ৪৫ জন ছাড়াও মাগুরা জেলার ৫১ নমুনা পরীক্ষায় ২৬ জন, ঝিনাইদহ জেলার ৩৫ নমুনা পরীক্ষায় ১৮ জন ও সাতক্ষীরা জেলার ২৪ নমুনা পরীক্ষায় ১০ জনের শরীরে কোভিডের জীবাণু পাওয়া গেছে। সবমিলিয়ে ২১৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৯৯ জনের করোনা পজিটিভ এবং ১১৪ জনের নেগেটিভ ফলাফল এসেছে। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ জানান, করোনার উপসর্গ নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আসলাম হোসেন ভর্তি হন।
মারা যাওয়ার পর তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন মুঠোফোনে জানিয়েছেন, এই পর্যন্ত যশোর জেলার ৯৬৫৭ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ফলাফল পেয়েছি ৮২৯১ জনের। এরমধ্যে করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে ১৯৩৯ জন। সুস্থ হয়েছেন ১১৭৪ জন। এছাড়া ২৯ জন নারী পুরুষের মৃত্যু হয়েছে।