যশোরে কোভিড-১৯ নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ফজলুল হক (৭৫) নামে আরও ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নতুন করে আরও ৫৫ জনের কোভিড-১৯ নভেল করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এই নিয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৬৭৯ জন। আর মারা গেছেন ২৫ জন।
যশোর সিভিল সার্জন অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা ডা. রেহেনেওয়াজ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টার থেকে ১৭৭ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাঠানো হয়। এতে ৬০ জনের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। তাতে ৪ জন পুরাতন রোগী রয়েছেন। নমুনা পরীক্ষার ফলোআপ ফলাফল তাদের পজেটিভ এসেছে। আরেক জনের নাম তালিকায় খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অন্য জেলার রোগী ভুল করে যশোরের তালিকায় চলে আসতে পারে। সেই হিসেবে নতুন করে ৫৫ জন শনাক্ত হয়েছেন বলে রেকর্ড করা হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ৩৩ জন , শার্শা উপজেলায় ৩ জন, ঝিকরগাছা উপজেলায় ৬ জন, চৌগাছা উপজেলায় ১ জন, মণিরামপুর উপজেলায় ১ জন, কেশবপুর উপজেলায় ৭ জন ও অভয়নগর উপজেলায় ৪ জন। ডা. রেহেনেওয়াজ আরো জানান, এদিন নতুন করে ২৮ জনকে করোনামুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আর করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে আরও ১৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য যবিপ্রবির জেনোম সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি জানান, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ফজলুল হক বাঘারপাড়া উপজেলার দশপাখিয়া গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে। তার মৃত্যুর বিষয়টি বুধবারে ফলাফলে রেকর্ড করা হবে। যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রন) ডা, এএনএম নাসিম ফেরদৌস জানান, নতুন করে আক্রান্ত ৩৩ জনের মধ্যে ১২ জনকে অন্যত্র রেফার্ড করা হয়েছে। তাদের নমুনা সদর উপজেলা থেকে দেয়া হলেও বাড়ি অন্য এলাকায়।
এছাড়া ৬ জন রোগীর হদিস পাওয়া যায়নি। নমুনা আবেদনে উল্লেখ করা মুঠোফোনের নম্বরও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। বাকি ১৫ জন হলেন যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের কোয়ার্টারে বসবাসকারী ৩ জনের মধ্যে ২ জন নারী , ১ জন পুরুষ, ঘোপ নওয়াপাড়া নওয়াপাড়া রোডের বসবাসকারী ২ জনের মধ্যে ১ জন নারী ১ জন পুরুষ, জেলরোডের বাসিন্দা ১ জন ব্যাংকার, সেন্ট্রাল রোডে বসবাসকারী ১ জন পুরুষ, লোন অফিস পাড়ার ১ জন পুরুষ, কাজীপাড়া আজিজ সিটিতে বসবাসকারী যশোর মেডিকেল কলেজের পিএ, রেলগেট এলাকার বাসিন্দা যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ১ জন সেবিকা, চোরমারা দিঘীর পাড় এলাকার বাসিন্দা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ১ জন মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট, বেজপাড়ার বাসিন্দা ১ জন পুলিশ সদস্য ও নীলগঞ্জ এলাকার একই পরিবারের ৩ জনের মধ্যে ২ জন নারী ও ১ জন পুরুষ।
আক্রান্তরা হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। যবিপ্রবির অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও পরীক্ষণ দলের সদস্য ড. তানভীর ইসলাম জানিয়েছেন, জেনোম সেন্টারে দুই জেলার মোট ১৮৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এরমধ্যে যশোর জেলার ১৭৭ জনের পরীক্ষায় ৬০ জন পজেটিভ হয়। আর মাগুরা জেলার ১০ জনের পরীক্ষায় সবার নেগেটিভ এসেছে। যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা.আরিফ আহমেদ জানান. হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ জুলাই সন্ধ্যায় মারা যান ফজলুল হক।
ওই দিন দুপুরে তিনি জ্বর, ঠান্ডা, কাঁশি , শ্বাসকষ্টসহ করোনার সকল উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছিলো। মঙ্গলবার তার ফলাফল পজেটিভ এসেছে। ফলাফল তার পরিবারকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন মুঠোফোনে জানিয়েছেন, সোমবার পর্যন্ত জেলার করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১৬৭৯ জন। সুস্থ হয়েছেন ৯৬৯ জন।