বরিশাল নগরীর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে রোগীদের টেস্টের রিপোর্ট অদলবদল করে ও টাকা নিয়েও সব রিপোর্ট না দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে বিপাকে পরছে সাধারণ রোগীরা। বিষয়টি স্বীকারও করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, গত বুধবার (২২ জুলাই) ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিষেশজ্ঞ ডাঃ তানিয়া আফরোজকে দেখাতে যান ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার ভরতকাঠির বাসিন্দা মহিমা বেগম। তাকে ৭ টি টেস্ট করাতে বলা হয়। তিনি টেস্টের সব খরচ কাউন্টারে জমা দেন। পরে তিনি টেস্টগুলো করেন। এবং রিপোর্ট পেতে পেতে ডাক্তার চলে যাওয়ার কথা চিন্তা করে তিনি বাড়ি ফিরে যান।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) তিনি আবার আসেন ডাক্তারকে রিপোর্ট দেখানোর জন্য এবং তিনি রিপোর্টগুলো সংগ্রহ করেন। তিনি রিপোর্টগুলো পেয়ে অবাক হলেন কারন রিপোর্টগুলো নিগার সুলতানা নামের এক গর্ভবতি রোগীর। এরপর তিনি কাউন্টারে গিয়ে জিজ্ঞেস করলে কেউ কোন ভ্রুক্ষেপ না করলে তিনি নিকটস্থ এক আত্মীয়কে ফোন করে ডেকে আনেন। এরপর পুনঃরায় তারা কাউন্টারে গিয়ে জিজ্ঞেস করলে বিষয়টি ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করেন ঐ হাসপাতালের রিপোর্ট ডেলিভারির দায়িত্বে থাকা ফোরকান।
কিন্তু এখানেই শেষ নয় মহিমা বেগমের ৭ টি রিপোর্টের ১টি রিপোর্ট দিতে পারলেও বাকি ৬ টি রিপোর্ট দিতে পারেননি। এ নিয়ে আবারও তাদের জিজ্ঞেস করলে কোনো সদুত্তর না দিয়ে তারা বাকি পরীক্ষাগুলো করানোর জন্য মহিমা বেগমের রক্ত নেন।
মহিমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, সে এই দুইদিন ধরে এই হাসপাতালে এসে এসব ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন। এভাবে যদি একজনের রিপোর্ট আরেকজনকে দেয় এবং ৭ টি পরীক্ষার টাকা দেওয়ার পরে মাত্র ১টি পরীক্ষার রিপোর্ট দিয়ে প্রতারণা ও ভুল করা হয় তাহলে আমাদের মত সাধারণ মানুষের কি অবস্থা হবে। হাসপাতালের লোকজনের ভুলের জন্য বার বার আসতে যেতে হবে।
অপর এক ভূক্তভোগী নিগার সুলতানার বাবার সাথে কথা বলে জানা যায়- তাদেরকেও অন্য এক রোগীর রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। তারা রিপোর্টগুলো নিয়ে রিপোর্ট ডেলিভারির দায়িত্বে থাকা ফোরকান হোসেনের কাছে বিষয়টি জিজ্ঞেস করলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
বিষয়টি সম্পর্কে হাসপাতালের প্রশাসনিক বিভাগের দায়িত্বে থাকা মোঃ নাজিম উদ্দীনের সাথে কথা বললে তিনি সব দ্বায় স্বীকার করে বলেন, তদন্তের মাধ্যমে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানা গেছে- এই হাসপাতালে অহরহ এই ধরনের ঘটনা ঘটে যাচ্ছে।
সঠিক বিচারের অভাবে এভাবেই চলছে নগরীর এই ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল। সাধারন রোগীদের সাথে এমন প্রতারণার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়ে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভূক্তভোগীরা।