গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এক বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী বাবুর্চিকে কুপ্রস্তাবে ব্যর্থ হয়ে চুরির অপবাদ দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ওই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এতে আতঙ্কে রয়েছেন ওই নারী ও তার পরিবার।
ভয়ভীতি ও বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করেন। তবে টাকা চুরির ঘটনায় থানায় বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ না করায় বিষয়টি রহস্যজনক বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও বন অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার কালিয়াকৈর রেঞ্জের মৌচাক বিট কর্মকর্তা মুসফিকুর রহমান মানিকের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ উঠেছে।
ওই বিট কর্মকর্তা গত দুই মাস আগে মৌচাক বিট অফিসে যোগদান করেন। তার কু-নজর পড়ে বিট অফিসের দীর্ঘদিনের পুরানো নারী বাবুর্চির ওপর।
বিভিন্ন সময় তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন বিট কর্মকর্তা মানিক। তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে ক্ষিপ্ত হন তিনি। কুপ্রস্তাবে ব্যর্থ হয়ে বন কর্মকর্তা মানিক কৌশলে ওই নারী বাবুর্চিকে প্রায় ৪ লাখ টাকা চুরির অপবাধ দেয়ার চেষ্টা করেন। কোনো প্রমাণ ছাড়াই তাকে চোর অভিযুক্ত করার চেষ্টা চালায় ওই বিট কর্মকর্তা। কিন্তু এতগুলো টাকা চুরির ঘটনায় কোনো অভিযোগ না দেয়ায় নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি জানাজানি হলে ওই বন কর্মকর্তা স্থানীয় প্রভাবশালী ও পুলিশ দিয়ে মীমাংসার চেষ্টা চালায়। ওই নারী ও তার পরিবারের লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন। এ ঘটনায় বিট অফিসের স্টাফরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে বুধবার কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তা আজাহারুল ইসলাম বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেন। তদন্তে টাকা হারানো বা চুরি যাওয়ার মতো কিছু পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
নারী বাবুর্চি জানান, বিট অফিসার আসার পর থেকে আমাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তিনি আমাকে চোর অপবাদ দিতে চেয়েছিলেন। স্থানীয় প্রভাবশালী ও পুলিশ বিষয়টি মীমাংসার জন্য বসেছিলেন। সেখানে বিট অফিসার ভুল স্বীকার করেছেন। এখন আবার তিনি বলছেন টাকা অন্য কেউ নিতে পারে। তবুও আতঙ্কে রয়েছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই অফিসের একাধিক স্টাফও কু-প্রস্তাবের বিষয়টি জানিয়েছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে মুসফিকুর রহমান মানিক জানান, চারা আনার, লেবার বিল, আমার বেতনসহ প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা ড্রয়ারে রেখেছিলাম। কিন্তু সেখান থেকে টাকাগুলো কে বা কারা নিয়ে গেছে। প্রথমে ওই বাবুর্চিকে সন্দেহ হলে তার কাছে খোঁজ করি। পরে আবার মনে হয়েছে অন্য কেউ নিতে পারে। বিষয়টি মৌচাক ফাঁড়ি পুলিশকে জানানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।
কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তা আজাহারুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তদন্ত করে টাকা হারানো বা চুরি যাওয়ার মতো কোনো প্রমাণ মিলেনি। তবে এ বিষয়ে ওই বন কর্মকর্তাও লিখিত কোনো অভিযোগ করেন নি।
কালিয়াকৈর মৌচাক ফাঁড়ি পুলিশের সহকারী এএসআই সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি ফাঁড়িতে জানালে ঘটনাস্থলে যাই। ওই বন কর্মকর্তা অভিযোগ করতে রাজি না। তবে মীমাংসার বিষয়টি আমার জানা নেই।