রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে খুঁজে বের করে শিগগিরই আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম। আজ বুধবার র্যাব সদর দফতরে সাংবাদিকদের এক প্রেসব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।
এসময় র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক সুজয় সরকার, এএসপি (মিডিয়া) মো: মোস্তাফিজুর রহমানসহ র্যাবের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক সাংবাদিকদেরকে বলেন, রিজেন্টের প্রতারণায় ১৭ জনকে আসামি করে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সাহেদ পলাতক।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম বলেন, তাকো বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। কেউ ধরাছোঁয়ার বাইরে নয়। খুব শিগগিরই তাকে আমরা আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবো। তার বিষয়ে অন্যান্য সংস্থাও সতর্ক রয়েছে।অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভিযানের পরই সে গা ঢাকা দিয়েছে।
সাহেদের মোবাইল নম্বর বন্ধ। র্যাব ছাড়াও অন্যান্য বাহিনী সতর্ক থাকায় তিনি দেশ ছেড়ে পালাতে পারবেন না।প্রতিষ্ঠানটি তিন মাসে প্রায় আড়াই থেকে তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সারওয়ার-বিন-কাশেম বলেন, সেসব টাকা কোথায় গেছে তা খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করা হবে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘রিজেন্ট হাসপাতাল হোম ডেলিভারির মতো বাসায় গিয়ে করোনার নমুনা সংগ্রহ করে দ্রুততার সঙ্গে রিপোর্ট সরবরাহ করছিল। প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে আমরা গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছি।
এরপর কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসে’।লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ ছিল- তারা নমুনা নিয়ে টেস্টের সঠিক রিপোর্ট পাঠায় না। প্রায় সাড়ে চার হাজার নমুনার টেস্ট না করেই কম্পিউটার অপারেটর মনগড়া রিপোর্ট দিয়ে সরবরাহ করেছে। ফলে বুঝে না বুঝে অনেকেই ভুয়া পজিটিভ হয়ে কোয়ারেন্টাইনে চলে গেছেন। তারা প্রথমবার টেস্টে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা নিতেন।
তারা পরবর্তী টেস্টের জন্য আবার এক থেকে দেড় হাজার টাকা আদায় করতেন।র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক বলেন, সরকারের সঙ্গে বিনামূল্যে চিকিৎসার চুক্তি স্বাক্ষরের নামে আসলে হঠকারিতা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তারা রোগীদের মোটা অঙ্কের বিল দিতে বাধ্য করেছে।
পাঁচ সদস্যের একটি পরিবার গত ২০ দিনে দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা রিজেন্টের কর্মচারী পলাশকে দিয়েছে বলে জানা গেছে।তিনি আরও জানান, রিজেন্ট হাসপাতাল ১০ হাজার টেস্ট করেছে। এর মধ্যে সাড়ে চার হাজার টেস্টের কাগজ আমাদের হাতে রয়েছে, যা সরকারের কোনো সংস্থা এ ধরনের রিপোর্ট তৈরি করেনি বলে জানতে পেরেছি। রিজেন্টের কম্পিউটার অপারেটর র্যাবকে জানিয়েছে, চেয়ারম্যান নিজে এসব করিয়েছেন।র্যাবের গনমাধ্যম শাখার মূখপাত্র বলেন, ‘তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। সাহেদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই।
তিনি সব সময়ই মিথ্যা তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে আসছিলেন, আসলে তার রাজনৈতিক কোনো পরিচয় নেই’।