শাবিপ্রবি সংবাদদাতা
ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ নিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয় এলাকাবাসীর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামানসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আজ শুক্রবার বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আজ শুক্রবার বিকেলে মোটরসাইকেলযোগে বহিরাগত দুই ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে চায়।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষী তাদের বাধা দেয়। এক পর্যায়ে ক্যাম্পাসের এক শিক্ষার্থী তাদেরকে ‘ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার’ বিষয়টি অবগত করেন। এসময় ওই শিক্ষার্থীদের সাথে বহিরাগত দুই ছাত্রের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে গেলে তাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন বহিরাগত দুই ছাত্র।
পরবর্তীতে তাদেরকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেন নিরাপত্তারক্ষী। ক্যাম্পাস ঘুরে এসে বহিরাগত ওই দুই ছাত্রসহ স্থানীয় কয়েক জন মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে ফের বাকবিতণ্ডায় জড়ান। পরে উভয়পক্ষ লোকবল জড়ো করে একে অপরের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় জড়ান। এসময় উভয়পক্ষ ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করে।
এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামানসহ অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়ে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা নেন। এছাড়া স্থানীয় ৮-১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে এ ঘটনা স্থানীয় যুগলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী দুলাল মিয়ার নির্দেশে হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, স্থানীয় যুবলীগ নেতা দুলাল আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদেরকে ইভটিজিং ও যৌন হয়রানি করে আসছেন। এছাড়া তিনি গেটে থাকা দোকানপাটে চাঁদাবাজি করেন, মাদকের ব্যবসা করেন।
বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে ঝামেলা করেন তিনি। দুলালের নির্দেশেই তার কর্মীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে দুলালের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হান্নান বলেন, ‘দুলাল একটি রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা। তিনি কখনো এমন কাজ করতে পারেন না এবং এ ধরনের কোনো অভিযোগ আগে শোনা যায়নি।’
এদিকে স্থানীয় যুবলীগ নেতা দুলালের গাড়ি ও কার্যালয় ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাদের কার্যালয়ের সামনেই যায়নি। ভাঙার তো প্রশ্নই আসে না। তাদের গাড়ি ও কার্যালয় তারা ভাঙচুর করছে, শিক্ষার্থীরা কেউ ভাঙচুর করেনি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ হয়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ভেতরে রয়েছে। আমরা পরবর্তীতে দুই পক্ষকে নিয়ে বসে আলোচনা করে এর সমাধান করব।’
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মাসুদ রানা বলেন, ‘এখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।’
বা বু ম / অ জি