কুবি প্রতিনিধি:
দেশব্যাপী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় ও তাদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলা, প্রাণঘাতী আক্রমণ ও নিপীড়নের প্রতিবাদে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২১ অক্টোবর) দুপুর ১২ টায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের পাদদেশে এই মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের বিভিন্ন সদস্যরা।
মানববন্ধনে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ইসলামের কোথায় কোনো মানুষের ক্ষতি করা, কোনো মানুষের জীবন ও জীবিকার উপর আঘাত করার কথা কোথাও লেখা নাই। আমরা যদি এসব হামলার প্রতিবাদে বারবার মানববন্ধন করি তাহলে লাভ হবে না, এদেশে বারবার যারা দাঙ্গা-হাঙ্গামা তৈরি করে তাদের ক্রস ফায়ারের বিকল্প আমি কিছুই দেখি না।
বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী বলেন, স্বাধীনতার পর আমরা কেমন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম আর এখন বাংলাদেশ কোথায় এসে পৌঁছেছে? দিন যত যাচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা ততো শীর্ষে যাচ্ছে। কিছু মৌলিক জায়গায় যারা দায়িত্ব পালন করছে তাদের গাফিলতির কারণে এই অবস্থা। আমরা কেমন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম সেই অনুযায়ী রাষ্ট্র গঠনে কাজ করতে হবে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শামিমুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রায় সময়ই বলে থাকি ধর্ম যারা যার উৎসব সবার। ধর্ম যার যার বাংলাদেশ সবার। আমরা যদি স্বাধীনতা যুদ্ধের ব্যাপারে দেখি সেখানে শুধু মুসলমানরা যুদ্ধ করেনি, সেখানে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সকল ধর্মাবলম্বী ভাই কাধে কাধ মিলিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এ দেশ স্বাধীন করেছে। আমাদের এটা ভাবলে চলবে না যে অন্য ধর্মাবলম্বীর যারা সংখ্যায় কম তাদেরকে আমরা সুবিধাবঞ্চিত করবো।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, দাঙ্গা হচ্ছে একটি সংক্রমণ ব্যাধি। যে প্রক্রিয়াই এর শুরু হোক না কেন আমাদেরকেই এর শেষ করতে হবে। বিপদে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। যখন কেউ তার বাড়িতেই নিরাপদ নয় তাদের কাছে আমাদের ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর কিছু থাকে না।
উল্লেখ্য, মানববন্ধনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, কর্মকর্তা পরিষদ, কর্মচারী সমিতি, কর্মচারী পরিষদ ও শাখা ছাত্রলীগ নিজ নিজ সংগঠনের ব্যানার নিয়ে অংশগ্রহণ করে।