আনোয়ার সাদত জাহাঙ্গীর,ময়মনসিংহঃ
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে ‘বেড খালি নেই’ ব্যানার ঝুলছে। হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি রয়েছে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত রোগী। খালি নেই সাধারণ ও আইসিইউ শয্যা। গতকাল করোনার রোগীদের চাপ সামলানোর অজুহাতে হাসপাতালের সামনে এমন ব্যানার টানিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে আসা অনেক রোগী ফিরে গেছে।
হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পারসন ডা. মহিউদ্দিন খান মুন জানান, করোনা ইউনিটে ২৩০ শয্যার বিপরীতে ৫৮০ রোগী ভর্তি রয়েছে। আর আইসিইউর ২২ শয্যার সবগুলোতেই রোগী ভর্তি। তিনি আরো বলেন, শয্যা খালি না থাকায় হাসপাতালের মেঝেতেই রোগীর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এখন মেঝেতেও রোগী রাখার মতো জায়গা নেই। ফলে ন্যূনতম চিকিৎসা ও অক্সিজেন সেবা দিতেও বেগ পেতে হচ্ছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলা ছাড়াও কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর থেকেও রোগী আসছে। এতে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর চাপ বেড়ে গেছে। রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করাও দুরূহ হয়ে পড়ছে। শয্যা খালি না থাকায় বাধ্য হয়েই তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। যাদের অবস্থা খারাপ তাদের ভর্তি করা হচ্ছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) জাকিউল ইসলাম জানান, প্রতিনিয়ত বাড়ছে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে রোগীর সংখ্যা।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি হয়েছে ৮৬ জন ও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৬৮ জন। মারা গেছে ২১ জন।
অন্যদিকে রোগীর চাপ বাড়ায় অক্সিজেন সংকটে রোগীর স্বজনরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেনের সক্ষমতা ১০ হাজার লিটার থেকে বাড়িয়ে ৪০ হাজার লিটার করার জরুরি কার্যাদেশ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সংকট নিরসনে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী দিয়েছেন প্রায় তিন হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার। এসব কার্যক্রম বাস্তবায়ন হলে সংকট অনেকটাই কমবে।
মমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফজলুল কবীর জানান, সেন্ট্রাল অক্সিজেনের সক্ষমতা বাড়লে সংকট মোকাবেলায় সহজ হবে। সেন্ট্রাল অক্সিজেনের সক্ষমতা ১০ হাজার লিটার থেকে বাড়িয়ে ৪০ হাজার লিটার করার জরুরি কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। কাজ শেষ হলে অক্সিজেন সংকট নিরসন করা সম্ভব হবে।