1. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  2. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  3. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৩:২৮ অপরাহ্ন

।। বাজেট নয়, মন্তব্য গতানুগতিক ।। বাস্তবায়নের সক্ষমতা নেই সরকারের!

  • সময় : রবিবার, ২১ জুন, ২০২০
  • ২৯২

আগামী এক অর্থ বছরে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে খাত ওয়ারী সম্ভাব্য আয় এবং ব্যয় সংক্রান্ত ”অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা” শিরোনামে জাতীয় বাজেট (আয় ব্যয়ক) ২০২০-২১ ঘোষণা করেছন মাননীয় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এবারে বাজেটের আকার বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা।

যা চলতি অর্থ বছরে ছিল ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৮১০ কোটি টাকা বেশি।গত ১১ জুন ঘোষিত মোট বাজেটের ১৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ তথা ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে। যা চলতি অর্থ বছরে ছিল ৮১ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা। আগামী(২০২০-২১)অর্থ বছরে মানুষের মাথাপিছু বার্ষিক গড় আয় ১,৭৬,৮০০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ১,৯৭,৭১০ টাকা। যাতে করে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার দৌড়ে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মাননীয় অর্থমন্ত্রী।

মানুষের জীবন রক্ষা এবং স্বল্প সম্পদের সঠিক ব্যবহারের জন্য বিলাসী ব্যয় সংকোচনের প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে। স্মরণকালের এই( করোনা) মহাবিপর্যয়ে হঠাৎ করে দেশের যে মানুষগুলো কর্ম হারিয়েছে বা হারাতে যাচ্ছে তাদের কর্মসংস্থানে সুনির্দিষ্ট কৌশলের কথা উল্লেখ না থাকলেও স্বল্প সুদে রয়েছে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব। দেশীয় শিল্পের কাঁচামালআমদানিতে আগাম কর ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ করা হয়েছে।করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ মোকাবিলায় স্বাস্থ্য খাতে অতিরিক্ত ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দসহ এখাতে মোট ৪১ হাজার ২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে। এখাতে বরাদ্দ অপ্রতুল বলে মনে করছেন কেউ কেউ।

আমি মনে করি বাজেট তো এমন নয় যে কোন অবস্থাতেই জরুরী প্রয়োজনের তাগিদে এক খাতে বরাদ্দের অর্থ অন্য খাতে নেওয়া যাবে না তা ভাবার কোন অবকাশ নাই। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের জন্য কৃষিতে সাবসিডি এবং সুদ ভর্তুকি দিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৭শ কোটি টাকা।শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৮৫ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা।দেশের সশস্ত্র বাহিনী ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্ষমতা বাড়াতে দেওয়া হয়েছে ৩৪ হাজার ৪২৭ কোটি টাকার বরাদ্দ যা গত বছরের তুলনায় ১ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা বেশি।

প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৮.২ শতাংশ। এটাকে বিরোধী শিবিরের কেউ কেউ অবাস্তব মনে করছেন। কেউ আবার প্রস্তাবিত বাজেটকে গতানুগতিক, বাস্তবায়ন অযোগ্য, কল্পনাপ্রসূত ও বাস্তবায়নের সক্ষমতা নেই সরকারের বলে মন্তব্য করছেন। বিরোধীদের কথা না হয় বাদই দিলাম। কারন সব কিছুতে বিরোধীতা করাই যেন তাদের কালচার। সরকারের বড় বড় অর্জন, সফলতা, উন্নমন তাদের চোখে ধরাই পড়ে না। প্রতিবারই তারা বাজটোত্তর প্রতিক্রিয়ায় এমনকি বাজেট ঘোষণার আগেই গতানুগতিক মন্তব্য করে থাকেন।

কিন্তু বর্তমান সরকারের গত পাঁচ বছরে মন্ত্রীত্বের সুবিধাভোগীরা(এখনো ১৪ দলেই আছেন) কি করে বাজেটকে গতানুগতিক বলেন? সে সময়ে তো তাদের মুখে এমন কথা শোনা যায়নি বরং প্রশংসার পাপড়ি ছড়াতে দেখা গেছে। এ দিক বিবেচনায় মনে হয়েছে বাজেট নয়, মন্তব্যগুলোই গতানুগতিক। গতানুগতিক এই মন্তব্য ও সমালোচনার গন্ডি থেকে বেরিয়ে এসে গঠনমূলক মন্তব্য ও সমালোচনা করে দেশ ও জাতির উন্নয়ন- অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখি। আমি শুধু বাজেটের কয়েকটি বিষয়ে স্বল্প পরিসরে কিঞ্চিত আলোকপাত করেছি মাত্র। কেননা, Mmorning shows the day-আজকের দিনটি কেমন যাবে তা সকালের সূর্য দেখেই বোঝা যায়। এ প্রেক্ষিতে করোনা বিষয়ে কিছু কথা বলতে চাই। স্তুতি নয় চোখের সামনে যা দেখছি তা স্বীকার করলে দোষ কি।

করোনাকালীন বৈশ্বিক মহামারিতে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যেখানে করোনার কাছে এক রকম অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে সেখানে বাংলাদেশের মত ক্ষুদ্র, উন্নয়নশীল ঘণবসতিপূর্ণ দেশে প্রথম দিকে কিছুটা সমন্বয়হীনতা থাকলেও পরবর্তীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলতে গেলে একক দৃঢ়তা,সাহসীকতা ও দুরদর্শীতায় এখনো পর্যন্ত অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে। তিনি দ্রুত ২ হাজার ডাক্তার, ৬ হাজার নার্স, ১ হাজার ২০০ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এবং ১ হাজার ৬৫০ জন মেডিকেল টেকনিশিয়ান নিয়োগ দিয়ে নামিয়ে দিয়েছেন করোনা যুদ্ধে।বাজেট বাস্তবায়ন কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং মনে করছেন কেউ কেউ। আমিও এতে একমত। কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং হলেও বাস্তবায়ন করা যে এ সরকারের পক্ষে সম্ভব সে বিষয়ে আলোচনা করতে গেলে একটু পিছনে ফিরে যেতে হয়।

কঠিন চ্যালেঞ্জ নিতে গেলে মনে থাকতে হয় বল আর বুকে থাকতে হয় সৎ সাহস। যা আছে সাহসী পিতার সাহসী কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। দেশের বড় বড় কয়েকটি মেগাপ্রকল্পের দিকে তাকালে তা প্রতিয়মান হয়। বঙ্গবন্ধু(যমুনা)সেতুর সফল বাস্তবায়ন, যানজট নিরসনে বিভিন্ন শহরে ডজন খানেক উড়াল সেতু নির্মাণ, ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণ, ঢাকায় মেট্রো রেল, রূপপুরে দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, সর্বশেষ দেশের সর্ববৃহৎ এবং দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ‘পদ্মা’ সেতুর নির্মাণ কাজ যেখানে সাহসীকতার সাথে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে সফল বাস্তবায়নের প্রায় শেষ প্রান্তে নিয়ে এসেছেন সেখানে এবারের বাজেট বাস্তবায়নে সক্ষম হবেন না তা এখনি বলার দৃশ্যমান কোন কারন দেখছি না।

চ্যালেঞ্জিং এই বাজেট বাস্তবায়নে এর পূর্ণাঙ্গ Automation, দুর্নীতিকে কঠোর হস্তে দমন, পরিকল্পিত উপায়ে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সর্বোপরি প্রত্যেকটি সেক্টরে আয় ব্যয়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদারকি এবং কোথাও দুর্নীতি হলে তাৎক্ষনিক যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে এগিয়ে গেলে আগামী বাজেটের হবে সফল বাস্তবায়ন। অমানিশার অন্ধকার একদিন নিশ্চয় কেটে যাবে। সচল হবে অর্থ নীতির চাকা। ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ এই হোক সকলের প্রত্যাশা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪