সামছুল আলম সাদ্দামঃ
সড়ক ব্যবস্থাপনা স্বাভাবিক থাকলে এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে আশা করা হচ্ছে। তবে বৃষ্টিবাদল বেশি হলে সড়কে খানাখন্দ তৈরি হয়ে ভোগান্তি হতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে নগরবাসী রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত ভোগান্তির খবর চোখে পড়েনি।
ঈদ উদযাপন মানেই ঘরে ফেরা, প্রিয়জনের কাছে ফেরা। এই ফেরা আনন্দের। কিন্তু এটি যেন প্রতিবারই বিষাদে পরিণত হয়। গতকাল একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার কারণে গত বছর টঙ্গী-গাজীপুর সড়কে ভোগান্তি হয়নি। এই মহাসড়কের বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ হয়নি। ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের লেন বাড়াতে উন্নয়নকাজ চলছে।
এই মহাসড়কে ভোগান্তির আশঙ্কা রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের মহাসড়কে গত ঈদে কোনো ভোগান্তি ছিল না। তবে এবার পরিবহন চালকরা ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন। বৃষ্টির কারণে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় চট্টগ্রামগামী লেনে সড়কের একপাশে পানি জমে গর্ত হয়ে যায়। কিছু অংশ মেরামত করা হয়েছে।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার, ধামরাই, মানিকগঞ্জের মহাসড়কের অবস্থা ভালো। ঢাকা-যশোর-খুলনা-গোপালঞ্জ-নড়াইল, ঢাকা-বরিশাল, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সার্বিক চিত্র ভালো। তবে এবারের ঈদে সড়ক-মহাসড়কের পাশের পশুর হাটগুলো শেষ মুহূর্তে ভোগান্তির কারণ হতে পারে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে তৎপর রয়েছে। আশার কথা, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার কারণে লঞ্চযাত্রায় স্বস্তি ফিরেছে। রেলপথেও স্বস্তির খবর আসছে। অনলাইন টিকেট ব্যবস্থার কারণে রেলে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে।
ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক ও নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে বলে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ও হাইওয়ে পুলিশের প্রধান শাহাবুদ্দিন খান বলেন, ‘এবারের ঈদে একটু ভিন্নমাত্রা আছে। এ সময় পশুবাহী গাড়ি বেশি চলাচল করে। মহাসড়ক-সংলগ্ন ও অদূরে পশুর হাট থাকে। এ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় পুলিশ মাঠে কাজ করছে। হাটের ইজারাদারসহ স্থানীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন সবাই মিলে এবারও স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে প্রস্তুতি নেয় হয়েছে।’
আমরাও পুলিশের এ ঊর্ধ্বতম কর্তৃপক্ষের কথায় আশ্বস্ত হতে চাই। ঈদের সময়ে দেখা যায় অনেক ফিটনেসবিহীন বাস ও লঞ্চ নতুন রং লাগিয়ে চলাচল করে। দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর তখন বাসের বা লঞ্চের মালিককে শনাক্ত করাও অনেক সময়ে কঠিন হয়ে যায়। তাই দুর্ঘটনা ঘটার আগে তা প্রতিরোধে করণীয় ঠিক করতে হবে।
দুর্ঘটনা এড়িয়ে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে হলে মোটরসাইকেল চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সড়কে এখন সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে মোটরসাইকেলের কারণে। তাছাড়া ঈদযাত্রায় ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচলে পুলিশ এবং সংশ্লিষ্টদের নজরদারি জোরদার করতে হবে।
বিগত বছরগুলোতে ঈদের সময় রাস্তাঘাটের দুরবস্থার কারণে যান চলাচল বিঘ্ন হওয়া, যানবাহন গন্তব্যে পৌঁছতে কয়েক গুণ সময় বেশি লাগা, যানবাহন দুর্ঘটনায় পতিত হওয়াসহ নানারকম বিপদ-ভোগান্তির অভিজ্ঞতা আমাদের হয়েছে। আমরা নিশ্চয় এমন অবস্থার পুনরাবৃত্তি চাই না।