মোঃ সাইফ উদ্দিন রনী, কুমিল্লা ব্যুরো প্রধান:
কুমিল্লায় করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও মাস্ক পরিধানে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত, জেলা তথ্য অফিসের সচেতনতা মূলক মাইকিং ও জেলা পুলিশ মাস্ক বিতরনসহ আটক অভিযান পরিচালনা করছে। এ মাসের শুরুতে করোনার শতকরা হার ৫.৭ থেকে বেড়ে ২০.৩ পর্যন্ত হয়েছে। গত ১ জুন থেকে ২২ জুন পর্যন্ত করোনায় ২২ দিনে করোনায় মারা গেছেন ২৫ জন। করোনায় সনাক্ত হয়েছেন ৬৪৯ জন। সুস্থ হয়েছেন ৭৭৯ জন।
করোনায় সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন স্থানে মাস্ক পরিধান নিশ্চিতকরনে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
বুধবার নগরীর কান্দিরপাড় পূবালী চত্তর, ভিক্টোরিয়া কলেজ মোড়, ঝাউতলা, রামঘাটলাসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমান আদালতের ৫টি টিম অভিযান পরিচালনা করছেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মারুফ হাসান, নাসরিন সুলতানা রিপা, ফাহিমা বিনতে আখতার, মাহমুদুল হাসান রাসেল, অমিত দত্ত। এসময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সার্বিক সহায়তা করেন পুলিশ বিভাগের সদস্যরা।
মাস্ক পরিধান নিশ্চিতকরনে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনাকারী জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট অমিত দত্ত বলেন, কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে কাজ করছি। আমরা মাস্ক পরিধানের সচেতনা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি। আমরা তেমন কোনো জরিমানা করছি না। কুমিল্লাবাসীকে সচেতন করার চেষ্টা করছি। সচেতন করার পরবর্তীতে আমরা হয়তো আরো কঠোর হবো এবং জরিমানা বৃদ্ধি করব। প্রয়োজনে কারাদন্ড দেওয়া হবে। যারা মাস্ক ছাড়া চলাফেরা করছেন আমরা তাদের প্রাথমিকভাবে সচেতন করে ছেড়ে দিচ্ছি। আশা করি কুমিল্লাবাসী সচেতন হবে। সচেতন হলে করোনার যে বিস্তার সেটা রোধ হবে এবং কুমিল্লাবাসী করোনা থেকে নিজেকে সুরক্ষা রাখতে পারবে ।
এদিকে মাস্ক না পড়ায় কুমিল্লার কান্দিরপাড় এলাকা হতে ৩ জনকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়। মঙ্গলবার নগরীর কান্দিরপাড় এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, নগরীতে শতভাগ মাস্ক পড়া নিশ্চিতকল্পে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। বুধবার নগরীর বিভিন্ন স্থানে আমাদের টিম কাজ করছে। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
মাস্ক পড়ুন নয়তো দোকান বন্ধ করুন, নয়তো জরিমানা গুনুন নগর জুড়ে মাইকিং করে এমনই বার্তা প্রচার করছেন জেলা তথ্য অফিস। জেলা তথ্য অফিসের সিনিয়র তথ্য কর্মকতা মোহামম্মদ নুরুল হক জানান, করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় নগরবাসিকে সচেতন করতে দিনব্যাপী অলিগলি ঘুরে সচেতনমূলক বার্তা প্রচার করছি। এর আগে আমরা মাস্ক ও লিফলেট বিতরন, জনসচেতনতায় সামাজিক দুরুত্ব বজায় রেখে সীমিত পরিসরে উঠান কৈঠকসহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করেছি।
কুমিল্লা জেলা ডেপুটি সিভিল সার্জন শাহাদাত হোসেন বলেন, করোনা সংক্রামক জেলাতে বেড়েই চলেছে। এ সংক্রামক প্রতিরোধে স্বাস্থ্য সচেতনতার বিকল্প নাই, মানুষ কিছুদিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেও কয়েকদিন পরই আবার অবহেলা করে। করোনা প্রতিরোধে এর ধারাবাহিকতার বিকল্প নাই।
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, কুমিল্লায় করোনার সংক্রমণ হার বৃদ্ধি পেয়েছে তা প্রতিরোধে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। জেলা জুড়ে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, তথ্য অফিসসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ সকলকে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে কাজ করতে বলা হয়েছে।