বিল্লাল হোসেন,যশোর প্রতিনিধি:
যশোরে কোভিড-১৯ নভেল করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ডোজের টিকা প্রদানের প্রথম দিন (বৃহস্পতিবার) ১ হাজার ৯শ’ ৭৫ জন মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। সকাল ৮ টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত জেলার সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে কার্যক্রম চলে। এদিকে ,গত ২৪ ঘন্টায় যশোরে আরও ৬২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, মানুষের অসচেতনতায় করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে।
সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য কর্মকর্তা ডা. রেহেনেওয়াজ জানান, গত ৩১ মার্চ প্রথম ডোজের টিকা কার্যক্রমের মেয়াদ শেষ হয়। দ্বিতীয় ডোজের টিকা পৌঁছায় বুধবার। আর বৃহস্পতিবার থেকে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এদিন জেলায় টিকা নিয়েছেন ১৯ শ’৭৫ জন। এরমধ্যে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ৮টি কেন্দ্র থেকে ৬১৮ জন, মেডিকেল কলেজ কেন্দ্র থেকে ১১৬ জন, বিমান বাহিনীর কেন্দ্র থেকে ১৭ জন, যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ৪টি কেন্দ্র থেকে ১৯০ জন, পুলিশ হাসপাতালের কেন্দ্র থেকে ৮০ জন, শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ টি কেন্দ্রে থেকে ২৫০ জন, ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ টি কেন্দ্র থেকে ৯৬ জন, চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ টি থেকে ৯৯ জন, মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ টি কেন্দ্র থেকে ১২৮ জন, কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ টি কেন্দ্র থেকে ২৩০ জন, বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ টি কেন্দ্র থেকে ৭০ জন ও অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ টি কেন্দ্র ৮০ জন জন টিকা গ্রহণ করেন। টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে পুরুষ ১৫শ’১০ জন ও মহিলা রয়েছেন ৪৬৪ জন। ডা. রেহেনেওয়াজ আরও জানান, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টার থেকে পাঠানো ১২৯ জনের পরীক্ষার ফলাফলে ৫১ জনের পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ৩২ জনের র্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষায় আরও ১১ জনের করোনা পজেটিভ আসে। সব মিলিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় যশোরে ৬২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে যশোর সদর উপজেলায় ৩৭ জন, শার্শা উপজেলায় ২ জন, ঝিকরগাছা উপজেলায় ১ জন, মণিরামপুর উপজেলায় ১ জন ও অভয়নগর উপজেলায় ১১ জন। যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহিন জানিয়েছেন, ৮ মার্চ পর্যন্ত জেলায় ৩১ হাজার ৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পেয়েছি। তাতে ৫ হাজার ৪শ’ ৪৭ জনের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। মৃতের সংখ্যা ৭৬ জন। এরমধ্যে যশোরের বিভিন্ন হাসপাতালে মারা গেছেন ৬৩ জন। এছাড়া ঢাকায় ৫ জন খুলনায় ৪ জন ও সাতক্ষীরার হাসপাতালে মারা গেছেন ১জন। সিভিল সার্জন আরও জানান, মানুষকে সচেতন করতে নানাভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারি নির্দেশনা অনুয়ায়ী স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে বোঝানো হচ্ছে। কিন্তু জনসচেতনতা নেই বললে চলে। যার কারণে যশোরে করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সামনের পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ হতে পারে।
উল্লেখ্য, যশোর জেলায় প্রথম ডোজ করোনার টিকা নেয়ার জন্য নিবন্ধন করেছিলেন ১ লাখ ৪০ হাজার ৫শ’ ১১ জন। এরমধ্যে টিকা গ্রহণ করেন ১ লাখ ১৮ হাজার ৬০ জন। স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাব মতে প্রথম ডোজে নিবন্ধিত ২২ হাজার ৪শ’ ৫১ মানুষ টিকা নেননি।