বরগুনা প্রতিনিধিঃ
বরগুনার আমতলী উপজেলায় তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছরের তুলনায় চারগুণ বেশী দামে বাজারে তরমুজ বিক্রি হওয়ায় কৃষকদের মুখে যেমন হাসি ফুটেছে তেমনি করোনার কারনে লকডাউনে তরমুজ পরিবহন নিয়েও তারা দুশ্চিতায় পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, এ বছর আমতলীতে ১ হাজার ৯’শ ৯০ হেক্টর জমিতে তরমুজের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল। ওই লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়েছে। গত বছর তরমুজ চাষ হয়েছিল ১ হাজার ৫’শ হেক্টর জমিতে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ৪’শ ৯০ হেক্টর জমিতে তারমুজ চাষ বেশী হয়েছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগে বিগত কয়েক বছর ধরে তরমুজ চাষীদের লোকসান গুনতে হয়েছে। ফলে তরমুজ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল এ উপজেলার কৃষকরা।
কৃষি বিভাগ প্রতি হেক্টরে ৪০-৪৫ মেট্রিকটন তরমুজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। তরমুজ চাষের আদর্শ জমি বেলে-দোআঁশ মাটি। এ উপজেলার জমিগুলো বেলে- দোআঁশ মাটি হওয়ায় রসালো তরমুজের চাষ এখানে ভালো হয়। তরমুজ চাষীরা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুসারে পলি ব্যাগে চারা উৎপাদন পদ্ধতি ব্যবহার করে তরমুজ চাষ করেছেন। এছাড়া মাঘ মাসের শুরু থেকে মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে তরমুজ চাষের উপযুক্ত সময়। চাষের দুই মাসের মধ্যে গাছে তরমুজের ফলন ধরে। পুরো চৈত্র মাস জুড়ে তরমুজের ভরা মৌসুম। তবে বৈশাখ মাসের প্রথম দিকেও বাজারে তরমুজ পাওয়া যায়। ভরা মৌসুম হওয়ায় বর্তমানে তরমুজের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষি ও শ্রমিকরা।
আমতলীর বিভিন্নস্থানে উৎপাদিত তরমুজে বাজার ছেয়ে গেছে। ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তরমুজ চাষি, আড়ৎদার ও শ্রমিকরা। এবার ফলন ভালো হওয়ায় খুশি চাষিরা। মৌসুমের শুরুতেই বাজারে ভালো দাম পাচ্ছেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর বাজারে চারগুণ বেশী দামে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। বাজারে দাম ভালো থাকায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। বিগত বছর গুলোর লোকসান কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন চাষীরা।
উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি তরমুজের চাষ হয়ে থাকে আঠারোগাছিয়া, কুকুয়া, হলদিয়া, চাওড়া ও গুলিশাখালী ইউনিয়নে। এসব ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে দূর- দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কিছু চাষী তাদের উৎপাদিত তরমুজ বিক্রি করে দিলেও আবার অনেক চাষী আরো বেশী দাম পাওয়ার আশায় এখনো তরমুজ বিক্রি না করে বসে আছেন। বিভিন্ন ক্ষেতে প্রকারভেদে জাম্বু জাগুয়ার, সুগার বেবী, ডায়মন্ড, বিগ ফ্যামিলি ও সুইট ড্রাগন জাতের তরমুজ উৎপাদিত হয়েছে। এসব তরমুজ স্বাদে অতুলনীয়।
অপরদিকে আমতলীর বেশ কয়েটি বাজার ঘুরে দেখাগেছে, প্রকারভেদে একটি ছোট সাইজের তরমুজ ৮০ থেকে ১০০, মাঝারী সাইজের তরমুজ ২০০ থেকে ৩০০ এবং বড় সাইজের তরমুজ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছরের তুলনায় চারগুণ বেশী বলে জানায় একাধিক তরমুজ ব্যবসায়ীরা। চাষীদের উৎপাদিত তরমুজ স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, টাঙ্গাইল, দিনাজপুর, গাজীপুর, বগুড়া, কুমিল্লা, গাইবান্দা, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পণ্যবাহী ট্রাক ও কার্গোতে করে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। এখন আবার মহামারী করোনার কারনে সরকার ঘোষিত লকডাউনে তরমুজ পরিবহন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। সড়ক ও নৌপথে যান চলাচল বন্ধ থাকায় কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। তারা তাদের উৎপাদিত তরমুজ পরিবহনের জন্য