যশোরে কোভিড-১৯ নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বেড়েই চলেছে। বুধবারও ১ জন চিকিৎসকসহ নতুন করে ১৫ জন শনাক্ত হয়েছেন। এই নিয়ে বুধবার জেলায় আক্রান্ত ৩৮শ’ ছাড়ালো। আর মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৫৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এদিকে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জারি করা নিয়ম মানছেন না মানুষ। সামাজিক দুরত্বতো দুরের কথা শারীরিক দুরত্বের বিষয়টিও ভুলে গেছে মানুষ।
সিভিল সার্জন অফিসের দাািয়ত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা ডা. রেহেনেওয়াজ জানান, বুধবার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টার থেকে ৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাঠানো হয়। তাতে ১৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এরমধ্যে যশোর সদর উপজেলায় ১১ জন, শার্শা উপজেলায় ১জন, কেশবপুর উপজেলায় ১ জন ও অভয়নগর উপজেলায় ২ জন রয়েছেন।
ডা. রেহেনেওয়াজ আরও জানান, এদিন ৬৫ জনের করোনামুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন করে আরও ৮১ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য জেনোম সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। ডা. রেহেনেওয়াজ জানান, সর্বশেষ মৃত ব্যক্তি হলেন চাঁচড়া এলাকার মতিয়ার রহমান (৮০)। করোনার উপসর্গ নিয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার নমুনা সংগ্রহ করে ২০ সেপ্টেম্বর পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়।
২৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ফলাফলে মতিয়ার রহমান করোনায় মারা গেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। যবিপ্রবির অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও পরীক্ষণ দলের সদস্য ড. তানভীর ইসলাম জানিয়েছেন, বুধবার জেনোম সেন্টারে যশোরের ১৫ জন ছাড়াও মাগুরা জেলার ২৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫ জনের শরীরে কোভিডের জীবাণু পাওয়া গেছে। আর নড়াইল জেলার ২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নেগেটিভ শনাক্ত হয়েছে। সবমিলিয়ে ১১৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২০ জনের করোনা পজিটিভ ও ৯৭ জনের নেগেটিভ ফলাফল এসেছে।
যশোর জেলায় আক্রান্তরা হলেন আক্রান্তরা হলেন, ডা. জেসমিন সুমাইয়া (৩৬), কামরুজ্জামান (৪২), শাহিদা খাতুন (৫৬), ফারহানা (৪৫),, সীমা আক্তার (৩৬), রোকেয়া খাতুন (৩২),আজিম হোসেন (৫২),ফারুক হোসেন (৪০), জান্নাতুল ফেরদৌস (৪৮), আবিজান (৬৩), সিরাজুল ইসলাম (৫২),জি এম ফুয়াদ হাসান (৩০) খোদেজা খাতুন (৫০), আব্দুল হালিম (৪৫) ও আঞ্জুয়ারা বেগম (৫০)।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানিয়েছেন, বুধবার পর্যন্ত জেলার মোট ১৬০১২ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য লাবে পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে ৩৮০৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ২৭৬২ জন। আর ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা ও খুলনার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ৮ জন। সিভিল সার্জন আরো জানান, যশোরে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নো ‘মাস্ক নো এন্ট্রি’ নোটিশ জারি করা হয়েছে। সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য মানুষকে বোঝানো হচ্ছে। এছাড়া নানা নিয়ম করা হয়েছে। কিন্তু কোন নিয়ম মানছেন না মানুষ।
করোনাকে ভুলে সব কিছু স্বাভাবিক নিয়মে চলছে। জনগন সচেতন না হলে আগামীতে মাশুল গুনতে হবে। স্বাস্থ্য সচেতনতা ছাড়া করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কোনভাবে সম্ভব না।