যশোরে দুই সাংবাদিক ও তিন চিকিৎসকসহ নতুন করে ৫২ জনের কোভিড-১৯ নভেল করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে এক চিকিৎসক পরিবারের রয়েছেন ৫ জন রয়েছেন। উপশহর এলাকায় একদিনে ৮ জন শনাক্ত হওয়ার রেকর্ড তৈরি হয়েছে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ২ জন ছাড়া সকলে হোমআইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাড়ি লকডাউন করেছে প্রশাসন। এই নিয়ে বুধবার পর্যন্ত জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৭৩১ জন।
যশোর সিভিল সার্জন অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা ডা. রেহেনেওয়াজ জানিয়েছেন, বুধবার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টার থেকে ১৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাঠানো হয়। এতে ৫৪ জনের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। তাতে ২ জন পুরাতন রোগী রয়েছেন। নমুনা পরীক্ষার ফলোআপ ফলাফল তাদের পজেটিভ এসেছে। নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ৫২ জন। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ৩০ জন , শার্শা উপজেলায় ৮ জন, ঝিকরগাছা উপজেলায় ৬ জন, মণিরামপুর উপজেলায় ৩ জন, কেশবপুর উপজেলায় ৪ জন ও বাঘারপাড়া উপজেলায় ৩ জন ।
ডা. রেহেনেওয়াজ আরো জানান, এদিন নতুন করে ১৮ জনকে করোনামুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আর করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে আরও ১২০ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য যবিপ্রবির জেনোম সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রন) ডা. এএনএম নাসিম ফেরদৌস জানান, নতুন করে আক্রান্ত ৩০ জনের মধ্যে ৪ জন রোগীর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। নমুনা আবেদনে উল্লেখ করা মুঠোফোনের নম্বরও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তবে তাদের সন্ধান মেলানোর চেষ্টা চলছে। বাকি ২৬ হলেন উপশহর বি ব্লকের বাসিন্দা ও দৈনিক সমাজের কথার স্টাফ রিপোর্টার ও জেলা মেডিকেল রিপোর্টার এসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ এস হাসমী সাজু, বসুন্দিয়া ইউনিয়নের কেফায়েতনগর গ্রামের বাসিন্দা একই পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার লাবুয়াল হক রিপন ও তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম, চৌরাস্তার বাসিন্দা আদদ্বীনের সহযোগী অধ্যাপক সম্পূর্ণা সেন, একই এলাকার বাসিন্দা ডা. প্রিয়বত রায়, চাচড়ার মশিয়ার রহমান, নতুন উপশহর এলাকার বাসিন্দা যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. গুলশানা রহমান, দুই মেয়ে নুসাইবা তাহসিন, নাবিহা তাহসিন, শ্বশুর আব্দুস সালাম , শাশুড়ি সুরাইয়া বানু, বি ব্লকের জাফর ইকবাল, ই ব্লকের রুবাইয়া, লেবুতলা ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামের কৃষক ইন্তাজ আলী, বাবলাতলা শেখহাটির মেশকাত,
লোন অফিস পাড়ার বাসিন্দা উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরজাহান ইসলাম নীরার ভাই বাচ্চু, কদমতলা এলাকার বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক পলাশ আহমেদ, খালধার রোডের হোসনে আরা, ঘোপ এলাকার বাসিন্দা ফারহান আসলাম, কাজীপাড়া আমতলা মোড়ে বসবাসকারী মাসুদ হোসেন, পালবাড়ি ঘোষপাড়ার মাহিমা আফরোজ, একই এলাকার ব্যাংকার খুরশিদ নাসরিন, পোস্ট অফিস পাড়ার নাহার তালুকদার, বেজপাড়ার ছায়াবিথী রোড এলাকার সুভাষ, বেজপাড়া মেইন রোড এলাকার গফুর মল্লিক ও সুদিপ্তা। উল্লিখিতদের মধ্যে নাহার তালুকদার ও সুভাষ করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকিরা হোমআইসোলেশনে রয়েছেন।
আক্রান্তরা হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। যবিপ্রবির অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও পরীক্ষণ দলের সদস্য ড. তানভীর ইসলাম জানিয়েছেন, জেনোম সেন্টারে যশোর জেলার ৫৪ জন ছাড়াও মাগুরা জেলার ৩৯ জনের ২৪ জন ও সাতক্ষীরা জেলার ৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৭ জনের শরীরে কোভিডের জীবাণু পাওয়া গেছে।
সবমিলিয়ে ২৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৮৭ জনের করোনা পজিটিভ এবং ১৫৯ জনের নেগেটিভ ফলাফল এসেছে। যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানিয়েছেন, বুধবার পর্যন্ত জেলার ৮৯২৫ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ফলাফল এসেছে ৭৬১৬ জনের। এরমধ্যে করোনায় শনাক্ত হয়েছেন ১৭৩১ জন। সুস্থ হয়েছেন ৯৮৭ জন। এছাড়া ২৫ জন নারী পুরুষের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, দ্রুত সুস্থতা কামনা করে বিবৃতি জানিয়েছেন যশোর জেলা মেডিকেল রিপোর্টার এসোসিয়েশনের সভাপতি বিএম আসাদ, সাধারণ সম্পাদক ফয়সল ইসলাম, সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন, প্রচার সম্পাদক আশিকুর রহমান শিমুল প্রমুখ।