যশোরে চিকিৎসক, শিক্ষক অ্যডভোকেট, র্যাব সদস্য ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ নতুন ৬৪ জন কোভিড-১৯ নভেল করোনাভাইরাসে শনাক্তের মধ্য দিয়ে আক্রান্ত ১ হাজার ছাড়িয়েছে। সোমবার পর্যন্ত জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা হয়েছে ১ হাজার ৪৮ জন। আর সুস্থ হয়েছেন মোট ৫শ ৩২ জন।
মারা গেছেন ১৭ জন নারী পূরুষ। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দিনে দিনে করোনা পরিস্থিতি যশোর জেলায় ভয়ঙ্কর রুপ নিচ্ছে। বর্তমানে বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছেন যশোর শহর ও সদর উপজেলায়। যশোর সিভিল সার্জন অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা ডা. রেহেনেওয়াজ জানিয়েছেন, সোমবার জেনোম সেন্টার থেকে ১৮৯ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাঠানো হয়।
এতে ৬৮ জনের করোনা পজেটিভ ও ১২১ জনের নেগেটিভ শনাক্ত হয়। এরমধ্যে ৪ জন পুরাতন রোগীর ফলাফল পজেটিভ ফলাফল এসেছে। নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৬৪ জন। এরমধ্যে যশোর সদর উপজেলায় ৩১ জন, শার্শা উপজেলায় ১২ জন, চৌগাছা উপজেলায় ৪ জন,ঝিকরগাছা উপজেলায় ৫ জন, মণিরামপুর উপজেলায় ৬ জন, কেশবপুর উপজেলায় ৩ জন ও অভয়নগর উপজেলায় ৪ জন রয়েছেন।
তিনি জানান, করোনা আক্রান্ত সন্দেহে সোমবার যশোর জেলার আরও ২২১ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য যবিপ্রবি ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এদিন নতুন করে ৩৬ জনকে করোনামুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ডা. রেহেনেওয়াজ জানান, পজেটিভ শনাক্ত হওয়া মৃত রোগীর নাম শর্মিলা (৫০)। তিনি বেজপাড়া মেইন রোডের মানষ মজুমদারের স্ত্রী। শর্মিলা ১১ জুলাই যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের করোনাওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য উপজেলার মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. এএনএম নাসিম ফেরদৌস জানান, সদর উপজেলায় আক্রান্ত ২৭ জনের সন্ধান মিলেছে। তারা হলেন বকচর এলাকার বাসিন্দা জঙ্গলবাধাল উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মরত ১জন নারী মেডিকেল অফিসার (২৬), ১ জন র্যাব কর্মকর্তার স্ত্রী (২০), ১ জন র্যাব সদস্য (৫৭), নাজির শংকরপুর ১ জন ব্যবসায়ী (৪৩), পুরাতন কসবা ঘোষপাড়া বাসিন্দা ১ জন পরিবার পরিকল্পনা কর্মী (৪০), রুপদিয়া গ্রামের ১ জন এনজিও কর্মী (৪২),
ঘোপ জেল রোডের বাসিন্দা ১ জন বেসরকারি চাকুরে (৩২) , কনেজপুর গ্রামের বাসিন্দা ল্যাবস্কানের ১ জন নিরাপত্তা কর্মী (৪৮), খড়কি ধোপাপাড়া বাসিন্দা ১ জন অ্যাডভোকেট (৪২), রুপদিয়ার গ্রামের ১ জন ব্যবসায়ী (৩৭) , বকচরের ১ জন গৃহিনী (৫০), ভায়না গ্রামের বাসিন্দা ১ জন ব্যাংকার (৪৬), কাজি পাড়া কাঠালতলা ১ জন নারী কাঠালতলার ১ জন নারী (৫৫) , পুরাতন কসবা বাসিন্দা ১ জন সেকমো (৫৪), উপশগর এ ব্লকের ১ জন পুরুষ(৫৭), পুরাতন কসবার ১ জন র্ব্যাংকার (৪৩),
কদমতলা হ্যাচারি পাড়ার ১ জন পুরুষ ( ৬০), রায়পাড়ার বাসিন্দা রেল স্টেশন মাদ্রাসার ১ জন শিক্ষক (৬৭), ১ জন গৃহবধূ (২৮), পুলিশ লাইন এলাকার বাসিন্দা ৩ জন পুরুষ, লোন অফিসপাড়ার ১ জন পুরুষ (৫৫), কারবালা রোডের ১ জন (৪৩) , পুলিশ বেজপাড়া ও বেজপাড়া মেইন রোড শর্মিলা (৫০)। তিনি আরো জানান , ৪ জনের তালিকা অন্য জেলায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা হলেন যশোরের চৌগাছার ২ জন, শার্শা উপজেলার ১ জন (৪৭) ও চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার ১ জন (৭০)।
এছাড়া ২ জনের মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় তাদের হদিস মেলানো সম্ভব হয়নি। যবিপ্রবির এনএফটি বিভাগের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষণ দলের সদস্য ড. শিরিন নিগার জানিয়েছেন, জেনোম সেন্টারে যশোর জেলার ৬৮ জন ছাড়াও মাগুরা জেলার ৪৯ জনের ২১ জন ও বাগেরহাট জেলার ১১ নমুনা পরীক্ষা করে ৮ জনের শরীরে কোভিডের জীবাণু পাওয়া গেছে। সবমিলিয়ে ২৪৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৯৭ জনের করোনা পজিটিভ এবং ১৫২ জনের নেগেটিভ ফলাফল এসেছে।
উল্লেখ্য, মোট নমুনা পাঠানো হয়েছে ৬ হাজার ৮শ ৭ জনের । ফলাফল মিলেছে ৫ হাজার ৪শ ৬৪ জনের।