নেই কোনো কোলাহল, আছে শুধু পশু-পাখির ডাক। নানা ধরনের গাছ-গাছালিতে ভরে উঠেছে রঙিন ফুল, লজ্জাবতীও মেলে দাঁড়িয়েছে। এ যেন নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে গাজীপুরের শ্রীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। করোনায় দর্শনার্থী না থাকায় পুরোটা সময় এখন প্রাণ প্রকৃতির। ফাঁকা পরিবেশ পেয়ে পশু-পাখিগুলো খাচ্ছে-দাচ্ছে আর ঘুরে বেড়াচ্ছে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে প্রায় চার মাস ধরে মানুষের আনাগোনা নেই। পশু-পাখির কলরব এখন জোরালো। মানুষের আঁচ পেলেই যে জেব্রা দৌড়ে পালায়, এখন সদ্য জন্ম হওয়া চার শাবক নিয়ে ব্যস্ত খুনসুটিতে। কমনইলেন্দ, পকেট বানর, ওয়াইল্ডবিস্ট, গয়াল হরিণসহ বেশ কিছু পশু-পাখির পরিবারে এসেছে নতুন অতিথি। সৌন্দর্যে যোগ হয়েছে বাইরের পানকৌড়ি ও ডাহুক। পার্কের ভেতরে গাছে গাছে জায়গা করে নিয়েছে তারা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক ওয়াইল্ড লাইফ সুপারভাইজার সরোয়ার হোসেন খান বলেন, করোনার কারণে পর্যটকের আগমন নেই। এজন্য প্রাণীগুলো পর্যাপ্ত জায়গা ও সময় পেয়েছে, নিরাপত্তাও পেয়েছে। নিরিবিলি পরিবেশ ও প্রকৃতির সজীবতায় বংশ বিস্তার হয়েছে প্রাণীদের। পাখিরা যেন পেয়েছে তাদের অভয়াশ্রম।
সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী বন সংরক্ষক তবিবুর রহমান বলেন, মুজিববর্ষ সামনে রেখে পার্কের আগের অস্তিত্ব ফিরিয়ে আনতে নানা প্রজাতির গাছ দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয়েছিল। ধারণা ছিল, প্রাকৃতিক পরিবেশে বন্য প্রাণীর খাবারের জোগান, নিরাপত্তা ও বসবাসের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করলেই ঝাঁকে ঝাঁকে প্রাণী আসবে। তাদের বংশ বিস্তার হবে। আমরা সেই পরিবেশ রক্ষায় কাজ করছি। এরইমধ্যে এর সুফল পাওয়া যাচ্ছে।
২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ পার্কে সব মিলিয়ে প্রায় চার হাজার পশু-পাখি রয়েছে। করোনার কারণে ২০ মার্চ থেকে পার্কটি বন্ধ রয়েছে।