1. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  2. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  3. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন

বেঁধে দেয়া দামে মিলছে না নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য!

  • সময় : সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০২৪
  • ৩০
বেঁধে দেয়া দামে মিলছে না নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য!
বেঁধে দেয়া দামে মিলছে না নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য!


স্টাফ রিপোর্টার-

সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও বাস্তবে বেঁধে দেয়া দামে মিলছে না নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। মানুষকে স্বস্তি দিতে গত ১৫ মার্চ কৃষি বিপণন আইন ২০১৮ -এর ৪(ঝ) ধারার ক্ষমতাবলে ২৯টি দেশি কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদফতর। বিজ্ঞপ্তিতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নির্ধারিত দামে এসব কৃষিপণ্য কেনাবেচার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এতে নির্ধারিত মূল্য তিনটি ভাগে করা হয়েছে। পণ্যের উৎপাদন, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। 

২৯টি পণ্যের মধ্যে আমদানিকৃত ছোলার উৎপাদক পর্যায়ে দাম ৯০ টাকা ৩৭ পয়সা, পাইকারি দাম সর্বোচ্চ ৯৩ টাকা ৫০ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ৯৮ টাকা ৩০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। উন্নত মসুর ডাল খুচরা পর্যায়ে ১৩০ টাকা ৫০ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১২৫ টাকা ৩৫ পয়সা; মুগডাল পাইকারি পর্যায়ে ১৫৮ টাকা ৫৭ পয়সা, খুচরা পর্যায়ে ১৬৫ টাকা ৪১ পয়সা; মাষকলাই ডাল পাইকারি পর্যায়ে ১৪৫ টাকা ৩০ পয়সা, খুচরা পর্যায়ে ১৬৬ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর মসুর ডাল (মোটা) প্রতিকেজি পাইকারি ১০০ টাকা ২০ পয়সা, খুচরা পর্যায়ে ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা; খেসারি ডাল পাইকারি ৮৩ টাকা ৮৩ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ৯২ টাকা ৬১ পয়সায় বিক্রির অনুরোধ জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

কেজি প্রতি দেশি পেঁয়াজের পাইকারি দাম ৫৩ টাকা ২০ পয়সা ও খুচরা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫ টাকা; প্রতিকেজি দেশি রসুন পাইকারি ৯৪ টাকা ৬১ পয়সা ও খুচরা ১২০ টাকা ৮১ পয়সা;  আমদানিকৃত আদা পাইকারিতে ১২০ টাকা ২৫ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ১৮০ টাকা ২০ পয়সা নির্ধারণ করেছে অধিদফতর। প্রতি কেজি শুকনো মরিচ পাইকারি পর্যায়ে ২৫৩ টাকা ২৬ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ৩২৭ টাকা ৩৪ পয়সা;  কেজিপ্রতি কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা ২০ পয়সা খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে ৪৫ টাকা ৪০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ব্রয়লার মুরগি পাইকারি ১৬২ টাকা ৬৯ পয়সা, খুচরা পর্যায়ে ১৭৫ টাকা; সোনালি মুরগি পাইকারি ২৫৬ টাকা ১০ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ২৬২ টাকা; ডিম প্রতি পিস বিক্রয় মূল্য ১০ টাকা ৪৯ পয়সা ও পাইকারি দর ৯ টাকা ৬১ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

মাছের মধ্যে পাঙাশ মাছের (চাষের) পাইকারি দর ১৫৩ টাকা ৩৫ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ১৮০ টাকা ৮৭ পয়সা; চাষের কাতল মাছ পাইকারি ৩০৩ টাকা ৯ পয়সা ও খুচরা ৩৫৩ টাকা ৫৯ পয়সা; গরুর মাংসের পাইকারি দর ৬৩১ দশমিক ৬৯ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে ৬৬৪ দশমিক ৩৯ টাকা; ছাগলের মাংসের ক্ষেত্রে পাইকারি মূল্য ৯৯২ দশমিক ৫৮ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে ১০০৩ টাকা ৫৬ পয়সায় বিক্রি করতে বলা হয়েছে অধিদফতরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে।

প্রতি পিস বাঁধাকপি পাইকারি ২৩ টাকা ৪৫ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ২৮ টাকা ৩০ পয়সা;  প্রতি পিস ফুলকপি পাইকারি ২৪ টাকা ৫০ পয়সা ও খুচরা ২৯ টাকা ৬০ পয়সা; খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি বেগুন ৪৯ টাকা ৭৫ পয়সা ও সিম ৪৮ টাকা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। প্রতিকেজি আলুর খুচরা মূল্য ২৮ দশমিক ৫৫ টাকা, টমেটো ৪০ দশমিক ২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২৩ দশমিক ৩৮ টাকা, প্রতি কেজি জাহেদি খেজুর খুচরা পর্যায়ে ১৮৫ দশমিক শূন্য ৭ টাকা,  মোটা চিড়া ৬০ টাকা কেজি নির্ধারণ করা হয়েছে। সাগর কলার হালি খুচরায় ২৯ দশমিক ৭৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া বেসনের খুচরা দাম ১২১ দশমিক ৩০ টাকা বেঁধে দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদফতর।

কিন্তু বাস্তবে বাজারে সরকারের এই সিদ্ধান্তের কোনও প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। রবিবার ও সোমবার (১৭ ও ১৮ মার্চ) বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বেঁধে দেওয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না কোনও পণ্য। সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন বাজারের অধিকাংশ বিক্রেতা।

সরকার নির্ধারিত দাম অনুসারে প্রতি কেজি গরুর মাংসের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৬৬৪ টাকার মধ্যে হওয়ার কথা। তবে মিরপুর বাজারে গরুর মাংস ৭৫০ টাকায়ই বিক্রি করতে দেখা গেছে। জানতে চাইলে একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, কে দাম ঠিক করে দিয়েছে কিছু জানি না। সমিতি থেকেও আমাদের কিছু জানানো হয়নি।

এদিকে, কাওরান বাজারে সবজি, মাছ-মাংসসহ অন্য পণ্যের পাইকারি বাজারেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ নির্দেশনার কোনও প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। বাজারে সব পণ্যের দাম আগের মতোই চড়া। মাছের মধ্যে চাষের পাঙাশের খুচরা দাম ১৮১ টাকা নির্ধারণ করা হলেও বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি। বেঁধে দেওয়া দামের তুলনায় প্রতি কেজি ছোলা ১২ টাকা, মসুর ডাল ১০ টাকা, খেসারি ১৭ টাকা বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ-মাংসসহ ২৯টি পণ্য।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির দাম ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি ১৭৫ টাকা ৩০ পয়সা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার, কিন্তু বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা দরে। সোনালি মুরগি ২৬২ টাকা দর বেধে দিলেও কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়।

সবজির বাজারেও একই অবস্থা। সরকার নির্ধারিত ৪৯ টাকা ৭৫ পয়সা দরে বেগুন বিক্রি হওয়ার কথা, কিন্তু খুচরায় ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচের দর ৬০ টাকা ২০ পয়সা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়।

কিন্তু ব্যবসায়ীরা বলছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সর্বনিম্ন আমদানি মূল্য বাড়িয়ে ধরছে বলে এর প্রভাব পণ্যমূল্যে পড়ছে।

বাজার নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে ঢাকা জজ কোর্ট এর আইনজীবী এ্যাডভোকেট কাওসার আহমেদ বিজন বলেন, “পবিত্র মাহে রমজান সহ সারা বছর মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অবশ্যই নির্দিষ্ট থাকা উচিৎ। নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে পন্য বিক্রি করলে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করনের মধ্য দিয়েই কেবল অসাধু ব্যবসায়ীদের কবল থেকে সাধারণ জনগনকে স্বস্তি দেয়া সম্ভব ৷ জনগনের স্বভাবের উপর ভিত্তি করে শাসককে আইন প্রনয়নের ক্ষেত্রে কঠোর থেকে কঠোরতর হওয়া উচিৎ। আইনের প্রয়োগ যেখানে ঢিলেঢালা, আইন ভঙ্গ হওয়ার রেট-ও সেখানে বেশি। আইনের সুষ্ঠ প্রয়োগ-ই কেবল দ্রব্যের এই অনিয়ন্ত্রিত ও অসুস্থ বাজার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে এনে জনগনের মুখে হাসি ফোটাতে পারে ৷ ”

এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন,“সরকার সব ধরনের নিত্যপণ্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সরকার কঠিন হতেও দ্বিধা করবে না।”

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪