নিজস্ব প্রতিবেদক
কেজিতে সর্বোচ্চ ২৫ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিনিকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। মিল মালিকদের এই সংগঠনটি বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে (বিটিটিসি) চিঠি দিয়ে দাম বাড়ানোর এ কথা জানিয়েছে। এর আগে চিনির দাম বাড়ানোর প্রস্তাবও দিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। সে ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত আসার আগে মিলমালিকেরা মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা দিলেন।
বিটিটিসি সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ীরা সরকারি এই সংস্থার কাছে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে কেজিপ্রতি প্যাকেটজাত চিনির দাম ১৫০ টাকা ও খোলা চিনি ১৪০ টাকা করার প্রস্তাব করেন। বাজারে বর্তমানে সরকারিভাবে খুচরায় প্রতি কেজি প্যাকেটজাত চিনি ১২৫ টাকা ও খোলা চিনির দাম ১২০ টাকা বেঁধে দেওয়া আছে। সরকার নির্ধারিত এই দাম ব্যবসায়ীরা মানছেন না। নতুন করে প্যাকেটজাত চিনিতে কেজিপ্রতি ২৫ টাকা ও খোলা চিনিতে ২০ টাকা দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিনিকল মালিকেরা। অবশ্য বাজারে এখন খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। আর প্যাকেটজাত চিনির সরবরাহ নাই বললেই চলে।
আজ সোমবার বিটিটিসির চেয়ারম্যান বরাবর দেওয়া মিলমালিকদের চিঠিতে বলা হয়েছে, সমিতির সদস্যভুক্ত পরিশোধন কোম্পানিগুলোকে আর্থিক ক্ষতি থেকে রক্ষায় চিনির প্রস্তাবিত দাম ২২ জুন (বৃহস্পতিবার) থেকে বাস্তবায়ন করা হবে।
মূল্যবৃদ্ধির ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ও দেশবন্ধু গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
সরকারের এখনকার নীতি অনুযায়ী, ভোজ্যতেল ও চিনির বাজারদর নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে দাম বাড়ানো বা কমানোর বিজ্ঞপ্তি আসে কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে। এর আগে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রস্তাব নেওয়ার পর বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন পুরো বাজারব্যবস্থা পর্যালোচনা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে একটি প্রতিবেদন দেয়।
এর আগের দফায় সরকারের সঙ্গে বসে দাম ঠিক করলেও মিলমালিকেরা তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তখন অনেকটা বাধ্য হয়ে দাম মেনে নেন ব্যবসায়ীরা। এ জন্য চলতি মাসের শুরুতে মিলমালিকেরা বিটিটিসিকে নতুন দাম প্রস্তাব করেন। ব্যবসায়ীরা জানান, বিশ্ববাজারে চিনির দাম বাড়তি। এ জন্য দেশের বাজারে দাম সমন্বয় করতে চান তাঁরা।
এদিকে বিটিটিসি ১১ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানায়, এক বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেড়েছে ২১ দশমিক ৯৬ শতাংশ। ২০২২ সালের ৮ জুন আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম ছিল ৫৫১ দশমিক ৯৫ মার্কিন ডলার। ২০২৩ সালের ৮ জুন তা বেড়ে হয় ৬৭৩ দশমিক ১৫ ডলারে উঠেছে।
বাজার ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সমালোচনা করে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে ব্যবসায়ীরা আলোচনা করে দাম বাড়াবে—এই ধারণা, মুক্তবাজার অর্থনীতির সঙ্গে যায় না। ব্যবসায়ীরা বাজারে অস্থিরতা তৈরি করতে চাইলে বরং সরকার চিনি আমদানি করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখুক। তবে এমন যদি হয় কোন কোম্পানি বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে অস্থিরতা তৈরি করছে, তাহলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হোক।’
বা বু ম / অ জি