জমির আইল ও বাড়ির ছাদে চাষ উপযোগী উফশী জাতের শিম ’বিইউ শিম- ৫’ উদ্ভাবন করেছে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত¡ ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক এবং বিশ^বিদ্যালয়ের পরিচালক (গবেষণা) ড. এ. কে. এম. আমিনুল ইসলাম এ জাতটি উদ্ভাবন করেছেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের বীজ বোর্ড কর্তৃক সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে জাতটি অবমুক্ত করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ. কে. এম. আমিনুল ইসলাম মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, বাণিজ্যিক কৃষির বিষয়টি মাথায় রেখে জমির আইল এবং বাড়ির ছাদে চাষ উপযোগী বিইউ শিম-৫ নামে শিমের এ জাতটি উদ্ভাবন করেন। সম্প্রতি জাতটি জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক সারাদেশে চাষাবাদের জন্য অবমুক্ত করা হয়েছে। জাতটির গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো আগাম জাত হিসেবে জুলাই-আগস্ট মাস থেকেই এর বীজ বপন করা যায়। গাছের গোড়া থেকে মাথা পর্যন্ত সম্পূর্ণ গাছে ফল ধরে। শিমের রং গাঢ় সবুজ, মাংসল এবং শাস অত্যন্ত নরম হওয়ায় খেতে খুবই সুস্বাদু।
বিইউ শিম-৫ সারা বাংলাদেশে চাষযোগ্য এবং জমির আইলে ও ছাদ বাগানে টবে স্টিকের মধ্যে (মাচাবিহীন) চাষ করা যায়। গাছ প্রতি ৫-৭ কেজি শিম পাওয়া যায়।
বিইউ শিম-৫ জাতটি দেশীয় শিমের দুটি স্থানীয় জাতের মধ্যে সংকর পরবর্তী বিশুদ্ধ সারি নির্বাচন পদ্ধতিতে উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর জন্য প্রায় ৮ বছর সময় লেগেছে। জাতটির অঙ্গজ বৃদ্ধি কম হওয়ায় স্বল্প জায়গায় ফসলের জমির আইলে, কিংবা ছাদের টবে সহজেই চাষ করা যায়। বাণিজ্যিকভাবে সাধারণ জমির মাচাতেও চাষ করা যাবে। জাতটি দেশের সবজি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. গিয়াস উদ্দিন মিয়া জানান, নতুন জাতের এ শিমটি স্টিকের মধ্যে মাচাবিহীন হওয়ায় উৎপাদন খরচ কম হবে। আর এটি আগাম জাতের হওয়ায় কৃষকরা বিক্রি করে দাম বেশি পাবেন, লাভবান হবেন। টবে উৎপন্ন হওয়ায় এটি ছাদ কৃষিতেও বড় অবদান রাখতে সক্ষম হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ^বিদ্যালয় একটি গবেষণা ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়।
এখানে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি গবেষণা কাজ হাতেকলমে শিক্ষা দেওয়া হয়। এ প্রতিষ্ঠান থেকে এ যাবৎ ৪২টির মতো বিভিন্ন শস্যজাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। যা কৃষকদের মাঝে ব্যপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে এবং দেশের কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখছে।