নিজস্ব প্রতিবেদক
ঘাতকরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করলেও বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার অপচেষ্টায় সফল হয়নি বলে জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘বাংলদেশকে বিনাশ করার জন্যই ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল। এ দিনটি পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস। ঘাতকরা যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা অস্বীকার করে, তাদের ষড়যন্ত্র ও জিঘাংসাকে বাস্তবায়ন করার জন্য এ দিনটিকেই বেছে নিয়েছিল। কিন্তু আমাদের সৌভাগ্য ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও বাংলাদেশকে তারা ব্যর্থ করে দিতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন।
শোকের মাস আগস্টের প্রথম দিন মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রকাশিত ‘পনেরো আগস্টের নেপথ্য কুশীলব’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আমার স্পষ্ট মনে আছে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরদিন পাকিস্তানের ডন পত্রিকা বড় বড় অক্ষরে হেডলাইন করেছিল-শেখ মুজিব কিলড বাই বেঙ্গলিজ (শেখ মুজিবকে বাঙালিরা হত্যা করেছে)। অর্থাৎ যার জীবনের প্রতিটি স্পন্দন ছিল এ বাঙালির জন্য এবং বাংলাদেশের অভ্যুদয় বা আবির্ভাবের ভেতর দিয়ে যে বিজয় রচিত হয়েছিল, তা স্তব্ধ করার বার্তা তার দিয়েছিল। আমরা কলেজ জীবনে, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে রাজনীতির মাঠে স্লোগান দিতাম যে, জিন্নাহর পাকিস্তান, আদিম যুগের গোরস্তান। এ স্লোগান বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশের জন্ম। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর পাকিস্তানি পত্রিকা এ স্লোগানকে বিদ্রূপ করেই মূলত শেখ মুজিব কিলড বাই বেঙ্গলিজ হেডলাইন লিখেছিল।’
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল বইটি লিখেছেন। গবেষণাভিত্তিক এ বইটি প্রকাশ করেছে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শিলালিপি।
বইটি প্রসঙ্গে মতিয়া চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, ‘বইটি আগেই আমার বাসায় পৌঁছেছে। আমি নাড়াচাড়া করে দেখেছি। মনজুরুল আহসান বুলবুল দেশের একজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক। তার লেখা ও সম্পাদনায় প্রকাশিত বইটিতে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যেসব বিষয়গুলো তৎকালীন পত্র-পত্রিকায় এসেছিল, তার সবই এতে আছে। অন্তত আমার নজরে এমন কিছু পড়েনি, যা বাদ পড়েছে।’
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সেক্টর কমান্ডার রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম প্রমুখ।
বিশেষ আলোচক ছিলেন বঙ্গবন্ধু গবেষক, ইতিহাসবিদ ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন এবং গবেষক, লেখক ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর ছিল ‘মুক্তির পথে’ এবং ‘বাঙালির স্বরাজ ও বঙ্গবন্ধু’ নামের দুটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী।
বা বু ম / অ জি