স্পোর্টস ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে হঠাৎই যেভাবে বিদায় বলে দিয়েছিলেন, ঠিক সেভাবেই যেন ফিরে আসার বার্তা দিলেন তামিম ইকবাল। তবে তার এই সিদ্ধান্ত বদলটা এত সহজে হয়নি। যেখানে সংবাদ সম্মেলন ডাকার পর থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগে ব্যর্থ হয়েছিল বিসিবি, সেখানে তাকে ফেরানোটা কঠিনই মনে হয়েছিল। ঠিক তখনই দৃশ্যপটে হাজির বাংলাদেশ ক্রিকেটের সফলতম অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তার মাধ্যমেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডেকে নেন তামিমকে।
এরপর কী ঘটেছে, সেটি নিয়ে ইতোমধ্যে খুশির জোয়ার বইছে তার জন্মভূমি চট্টগ্রামে। তবে অদৃশ্যমান সব দেশীয় ক্রিকেটভক্তের মনেও একই অনুভূতি হওয়ার কথা! দেড়মাস বিরতি দিয়ে যে আবার মাঠে ফেরার কথা জানিয়েছেন লাল-সবুজ জার্সিতে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক ব্যাটার।
তামিমকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছানোর প্রেক্ষাপট নিয়ে দেশের এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ওর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইছিলেন। তামিম তো সবকিছু থেকে দূরে ছিল। প্রধানমন্ত্রী তাই আমাকে বলেছেন ওর সঙ্গে যোগাযোগ করতে। আমি তাকে বলেছি যে, ‘‘তামিমকে আমি নিয়ে আসছি আপনার কাছে।’’ এরপর তামিমকে আমি বলেছি যে, তুই গিয়ে মনের কথা বল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে কথা আছে, সেটা তিনি বলবেন। তারপর যে সিদ্ধান্ত হওয়ার, হবে। আমার দায়িত্ব ছিল ওকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যাওয়া।’
প্রধানমন্ত্রীর গণভবনে দুপুর আড়াইটায় মাশরাফি ও স্ত্রী আয়েশা ইকবালের সঙ্গে প্রবেশ করেন তামিম। দীর্ঘ বৈঠকের একপর্যায়ে সেখানে প্রধানমন্ত্রী বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে ডেকে নিয়ে যান। তাদের উপস্থিতিতে তামিমকে ফের ক্রিকেটে ফেরানোর আলোচনা চলে। শেষমেষ প্রধানমন্ত্রীর আহবানে না করতে পারেননি তামিম। আসন্ন এশিয়া কাপের আগে তার দলে যুক্ত হওয়ার কথা।
সাবেক সতীর্থের এমন সিদ্ধান্ত বদলের বিষয়ে মুর্তজা বলেন, ‘এর চেয়ে ভালো সমাধান আমি আশা করিনি। তামিম বিরতি চেয়েছে, সেটা নিক। পুরো ফিট হয়ে, মানসিকভাবে তরতাজা হয়ে ফিরুক। কিন্তু এভাবে অবসরের মানে নেই। বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেক কিছুই হয়। কোচের সঙ্গে ঝামেলা হতে পারে, বোর্ডের সঙ্গে হতে পারে। আমার ২০ বছরের ক্যারিয়ার আর অধিনায়কত্বের ৫-৬ বছরে তো কম হয়নি এসব। সব দলেই কম-বেশি এসব হয়। এসব সামলেই চলতে হয়।’
তামিমকে তো ফেরানো হলো। পরের কাজটা তামিমকেই করতে হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশকে ৫০টি ওয়ানডে জয়ে নেতৃত্ব দেওয়া মাশরাফি, ‘আমার কথা হলো, সে যেন ট্রেনিং করে পুরো ফিট হয়ে আসে। দায়িত্ব এখন পুরোপুরি ওর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামনেই ওকে বলেছি, ‘‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রান করছিস, তোর ক্যারেক্টারে সেই দাপট থাকা উচিত। এত আমতা আমতা করে, এত সংশয় নিয়ে ক্রিকেট খেলা যাবে না। ক্রিকেটে অভিমানের কোনো মূল্য নেই। এভাবে অবসর নিলে তিন মাস পর তোকে কেউ মনে রাখবে না। মনে রাখার মতো কিছু করতে হবে।’’
বা বু ম / অ জি