আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশায় রেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন ২৭৫ জন। তবে নিহত এসব মানুষের সবার মৃত্যু বাহ্যিক আঘাতজনিত কারণে হয়নি। আশঙ্কা করা হচ্ছে, দুর্ঘটনার পর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কমপক্ষে ৪০ জনের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
ভারতীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওড়িশার বালাসোরে তিনটি ট্রেন দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার পর করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনের লাইনচ্যুত বগি থেকে কমপক্ষে ৪০ টি এমন মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে যাদের কোনও বাহ্যিক আঘাত নেই। অর্থাৎ তারা ওভারহেড তারের মাধ্যমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়ে থাকতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
দুর্ঘটনার পর উদ্ধার অভিযানের তদারকি করা একজন পুলিশ অফিসার সোমবার এই তথ্য জানিয়েছেন। মালগাড়িতে ধাক্কা খাওয়ার পর করমণ্ডল এক্সপ্রেসের বগিগুলো যখন এদিক-ওদিক ছিটকে যায়, তখন ওভারহেডের বিদ্যুতের তারের সঙ্গে বগিগুলোর সরাসরি সংস্পর্শ হয়।
আর এর ফলে বগির ভেতরে থাকা বহু যাত্রী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় বলে এফআইআর-এও উল্লেখ করা হয়েছে।
গত শনিবার সরকারি রেলওয়ে পুলিশের (জিআরপি) সাব-ইন্সপেক্টর পাপু কুমার নায়েকের দায়ের করা এফআইআরে বলা হয়েছে, ‘সংঘর্ষের পর আঘাত পেয়ে এবং ট্রেনের বগি ওভারহেড এলটি লাইনের সংস্পর্শে আসার পরে অনেক যাত্রী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার তদন্ত ও মৃতদেহের শনাক্তকরণের কাজ যত এগোচ্ছ, ততই বিভীষিকাময় তথ্য সামনে আসছে। রেলের দাবি, করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২৭৫ জনের। আর এর মধ্যে অন্তত ৪০ জনের মরদেহে ক্ষতের কোনও চিহ্ন নেই।
মূলত দুর্ঘটনার পর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই মৃত্যু হয়েছে তাদের। সম্প্রতি রেলের পক্ষ থেকে এমনই একটি তথ্য সামনে এসেছে। রেলের এক কর্মকর্তা জানান, বগিগুলো যখন ইঞ্জিন থেকে আলাদা হয়ে ছিটকে যায়, তখন বগির মধ্যে থাকা অবস্থাতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই যাত্রীদের।
রেল সূত্রে খবর, মালগাড়িতে ধাক্কা খাওয়ার পর করমণ্ডল এক্সপ্রেসের বগিগুলো যখন এদিক-ওদিক ছিটকে যায়, তখন ওভারহেডের বিদ্যুতের তারের সঙ্গে বগিগুলোর সরাসরি সংস্পর্শ হয়। ফলে বগির ভেতরে থাকা বহু যাত্রী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় বলে প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে। আর এই কারণেই অন্তত ৪০ জন যাত্রীর মরদেহে ক্ষতের কোনও চিহ্ন নেই।
উদ্ধার অভিযানে নিয়োজিত পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘মরদেহগুলো শনাক্ত করার সময় দেখা যায়, ৪০টির বেশি দেহে কোনও ক্ষতচিহ্ন বা রক্তের দাগ নেই। তাদের অধিকাংশেরই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে।’
অবশ্য এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন ইস্ট-কোস্ট রেলের অবসরপ্রাপ্ত চিফ অপারেশন ম্যানেজার পূর্ণচন্দ্র মিশ্র।
এদিকে ওড়িশায় রেল দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ১০১ জনের মরদেহ এখনও শনাক্ত করা যায়নি। এসব মরদেহ একাধিক মর্গে ভাগ করে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে সোমবার বিকেলের পর দুর্ঘটনাস্থলে আবারও ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
বা বু ম / অ জি