নিজস্ব প্রতিবেদক
সারা দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে মোট ৭ হাজার ১টি মামলা দায়ের হয়েছে বলে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আজ সোমবার জাতীয় সংসদে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের প্রশ্নের আইনমন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়।
মোকাব্বির খান তাঁর প্রশ্নে জানতে চেয়েছিলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এখন পর্যন্ত কতটি মামলা হয়েছে এবং কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জবাবে আইনমন্ত্রী মামলার সংখ্যা জানালেও গ্রেপ্তারের সংখ্যা জানাননি। আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ পর্যন্ত কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এ–সংক্রান্ত প্রশ্নের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সংশ্লিষ্টতা থাকায় উক্ত অংশ সচিবালয় নির্দেশমালা ২০১৪ এর অনুচ্ছেদ ২১৩(২) অনুযায়ী জননিরাপত্তা বিভাগে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পাস হয় এবং ওই বছর ৮ অক্টোবর থেকে আইনটি কার্যকর হয়। এর তিন দিনের মাথায় ১১ অক্টোবর প্রথম এই আইনের অধীনে মামলা দায়ের হয়।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের অধস্তন আদালতগুলো চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৩৬ লাখ ৭০ হাজার ৬৭০টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে দেওয়ানি মামলা হলো ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ১৬০টি এবং ফৌজদারি মামলা ২০ লাখ ৮৬ হাজার ৫১০টি।
আইনমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ঢাকায় সর্বোচ্চ ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৩৩টি মামলা চলমান রয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চট্টগ্রামে ২ লাখ ৭১ হাজার ৬০৬ মামলা চলমান। সর্বনিম্ন খাগড়াছড়িতে ৬ হাজার ৬৩০ টি মামলা চলমান রয়েছে।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার বিচারপ্রার্থী জনগণের ভোগান্তি লাঘবের জন্য একটি আধুনিক বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী্র গতিশীল নেতৃত্বে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে সারা দেশে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা একটি সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে এবং মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কার্যকর ও দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধিত হবে।
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য হাজি মো. সেলিমের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে তিনটি বেঞ্চ এবং হাইকোর্ট বিভাগে ১৮টি একক ও ৩৩টি দ্বৈত বেঞ্চ কাজ করছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্ট বিভাগে মোট ৫৪টি বেঞ্চে ৯৮ জন বিচারক বিচারকাজ পরিচালনা করছেন। এতে পাঁচ লাখের বেশি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। বিচারকের সংখ্যা বাড়ানো গেলে বেঞ্চের সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব হবে।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, ২০১০ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত (২৮তম থেকে ৪০তম) বিসিএস পরীক্ষায় ৪১ হাজার ৫৬৬ জনকে ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। একই সময়ে প্রথম শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে ৫ হাজার ৭০৯ জন এবং দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৭ হাজার ১৬১ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি) কোনো পদে সরাসরি নিয়োগ প্রদান করে না। ক্যাডার ও নন ক্যাডার পদ ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত নবম ও তদূর্ধ্ব গ্রেডে ৪ হাজার ৫৬৬ জনকে এবং দ্বিতীয় শ্রেণির (দশম ও এগারোতম) বিভিন্ন নন ক্যাডার পদে ৪৩ হাজার ৪১২ প্রার্থীকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।