ডেস্ক নিউজ:
চলমান কঠোর লকডাউন ১৪ জুলাই পর্যন্ত বর্ধিত করেছে সরকার। ‘করোনাভাইরাসজনিত রোগ (কোভডি-১৯)-এর বিস্তার রোধকল্পে সার্বিক কার্যাবলি/চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপের সময়সীমা বর্ধিতকরণ’ শিরোনামে সোমবার দুপুরে একটা প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এতে বলা হয়েছে আগের বিধিনিষেধগুলো বহাল থাকবে।
আগের বিধিনিষেধগুলোর মধ্যে উল্লখযোগ্য কয়েকটি হলো-
১. সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
২. সড়ক, রেল ও নৌপথে গণপরিবহনসহ সকল প্রকার যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচলও বন্ধ থাকবে।
৩. শপিংমল/মার্কেটসহ সকল দোকানপাট বন্ধ থাকবে।
৪. সকল পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
৫. জনসমাবেশ হয় এই ধরনের সামাজিক (বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান, জন্মদিন, পিকনিক পার্টি ইত্যাদি) রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
লকডাউন বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ বিধানের আওতায় মাঠপর্যায়ের কার্যকর টহল নিশ্চিত করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ প্রয়োজনীয়সংখ্যক সেনা মোতায়েন করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্থানীয় সেনা কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
এতে আরো বলা হয়, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভা করে সেনা-বিজিবি-পুলিশ-র্যাব ও আনসার নিয়োগ এবং টহলের অধিক্ষেত্র, পদ্ধতি ও সময় নির্ধারণ করবেন। সেই সঙ্গে বিশেষ কোনো কার্যক্রমের প্রয়োজন হলে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহ এই বিষয়ে মাঠপর্যায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।
এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধের পঞ্চম দিন আজ। সকালে রাজধানীল বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েক দিনের তুলনায় রিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়ির চলাচল বেশি দেখা গেছে। অনেকে হেঁটেও চলাচল করছেন। এ ছাড়া অন্যান্য দিনের মতো আজো কারওয়ান বাজারে মানুষের উপস্থিতি বেশি ছিল। ব্যাংক খোলা থাকায় চলাচল বেড়েছে বলে কারো কারো অভিমত।
দুপুর ১২টার দিকে দেখা গেছে, মিরপুর-১০, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেটের রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়ি ও রিকশার চাপ। তবে কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু প্রধান সড়কের তুলনায় রাজধানীর অলিগলিতে মানুষের জটলা কিছুটা বেশি চোখে পড়েছে।
ফার্মগেট চেকপোস্টে দেখা যায়, পুলিশ গাড়ি থামিয়ে গন্তব্যে যাওয়ায় সুনির্দিষ্ট কারণ জানতে চাইছে। প্রয়োজনে কাগজপত্রও দেখছে। জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা পরিচয়পত্র দেখিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সোমবারজ সকাল ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত ব্যাংকে লেনদেন করা যাবে। লেনদেন-পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রমের জন্য বেলা ৩টা পর্যন্ত ব্যাংক খোলা থাকবে। তাই ব্যাংকগুলোর সামনে মানুষের লাইন চোখে পড়েছে।
রোববার কঠোর বিধিনিষেধের চতুর্থ দিনে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পুলিশ ৬১৮ জনকে আটক করেছে। ডিএমপির ভ্রাম্যমাণ আদালত ১৬১ জনকে ৫৪ হাজার ৪৫০ টাকা জরিমানা করেছেন। পাশাপাশি সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী বিধি লঙ্ঘন করাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৪৯৬টি বাহন থেকে ১২ লাখ ৮১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।