করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ৮৪৯ জন কয়েদি মুক্তি লাভ করেছেন। সরকারি আদেশ ও ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মঙ্গলবার( ১৬ জুন) পর্যন্ত ৮৪৯ জন কয়েদি মুক্তি লাভ করেছেন।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেশে শুরু হওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের কাছে একটি তালিকা চায়। সরকারের নির্দেশনার আলোকে বেশ কয়েকজন কয়েদির একটি তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়।সিলেটের জেল সুপার মো. মুজিবুর রহমান জানান, তালিকা থেকে জামিনযোগ্য ছোটখাটো অপরাধে যারা কারাগারে ছিলেন তাদের মধ্যে থেকে ৩৪ জনকে ইতিমধ্যে মুক্তি দেয়া হয়েছে। গত ৭ এপ্রিল থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এদের মধ্যে কয়েকজনকে মুক্তি দেয়ার নির্দেশনা থাকলেও তারা জরিমানা আদায় করতে না পারায় প্রথমে মুক্তি পাননি। পরবর্তীতে কারা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে জরিমানার ৫০ হাজার টাকার মত সংগ্রহ করে। সংগৃহীত টাকা থেকে জরিমানা পরিশোধ করে আটকে পড়াদের মুক্তি দেয়া হয় বলে জানান জেল সুপার মুজিবুর রহমান।
বর্তমানে ভার্চুয়াল কোর্ট চলমান থাকায় এই ৩৪ জন ছাড়াও আদালত মঙ্গলবার পর্যন্ত ৮১৫ জনের জামিন মঞ্জুর করেন। তাদের সবাইকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। সরকারি আদেশে ও ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে সিলেট কারাগার থেকে সবমিলিয়ে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত মুক্তি পেয়েছেন ৮৪৯জন কয়েদি। ১২ এপ্রিল থেকে সিলেটে ভার্চুয়াল কোর্টের কার্যক্রম শুরু হয়। শুধু মাত্র যারা কারাগারে রয়েছেন এবং জামিনযোগ্য তাদের অনেককে আদালত জামিন দিচ্ছেন।
কিন্তু বিভিন্ন মামলার আসামি যারা বর্তমানে বাহিরে রয়েছেন তাদের আদালতে আত্মসমর্পণ করার সুযোগ নেই।যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত ৩০ বছর সাজার মধ্যে ইতিমধ্যে যারা ২০ বছর কারাবাস অতিক্রান্ত করেছেন, ছোটখাটো অপরাধ ও বেশি বয়স্ক (অচলাবস্থায় রয়েছেন) যারা রয়েছেন মূলত তাদের দিয়েই তালিকা করা হয়।করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে কারাগার সংরক্ষিত রাখতে দেশের ৩ হাজার কারাবন্দীকে জামিন দেওয়ার উদ্যোগ নেয় সরকার।
করোনায় সৃষ্ট দুর্যোগের কারণে কারাবন্দীর সংখ্যা কমাতেই দেশের ৬৮ কারাগারে ছোটখাটো অপরাধ ও জামিনযোগ্য ধারায় বিচারাধীন ৩ হাজারের বেশি কারাবন্দীকে জামিন দিতেই এ উদ্যোগ বলে কারা সূত্রে জানা গেছে।অধিক বন্দির কারণে সরকারের বিশেষ নির্দেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগ কারা অধিদফতরের এসব বন্দির তালিকা তৈরি করে পাঠাতে নির্দেশ দেয় বলে জানা গেছে।
যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত ৩০ বছর সাজার মধ্যে ইতিমধ্যে যারা ২০ বছর কারাবাস অতিক্রান্ত করেছেন এদের মধ্যে কেউ সিলেট কারাগার থেকে মুক্তি পাননি। যে ৩৪ জন মুক্তি লাভ করেছেন তাদের কারো সাজা ২ বছরের উপরে ছিল না বলে কারা সূত্র জানিয়েছে।