ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরের নারুই গ্রামের ছাবিকুন্নাহার নীলা নাঈম (৩০)নামে এক নারীর বিরোদ্ধে বিয়ের নাটক সাজিয়ে প্রতারনায় দায়ে আদালতে
মামলা ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা মানব্বন্ধন করেছে। বুধবার সকাল ১১টায় উপজেলার শিবপুর বাজারে এই মানব্বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানবন্ধন ও মামলা সূত্রে জানা যায়, নীলা নাঈম নামে ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী যুবকদের তার খপ্পরে ফেলে ভূয়া এভিডেভিড মাধ্যমে দেনমোহরের নামে
মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বিভিন্ন এলাকার একাধীক যুবক এই প্রতারনার শিকার হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবারা।
সরজমিনে গিয়ে মানববন্ধনে উপস্থিত জানা যায়, এই প্রতারণায় তারা সাথে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র কাজ করে।এই নারী চক্রের প্রতারণার স্বীকার শিবপুর সড়ক পাড়ের ওমান প্রবাসী বাবু’রপিতা কতুব মিয়া বলেন, আমার পুত ওমানে থাহে । ওই মাইয়া হেরে ফান্দ ফালাইয়া আমার মানসম্মান সব শেষ করছে। আমি আগীলা দিনের মানুষ কিছু বুঝিনা।ফেইসবুক থাক্কিয়া ছবি লইয়া আমার পুতেরে স্বামী দাবি করে। পরে ৭০ হাজার টাকায় ওইটা মিমাংসা হয়।
আরেক ভুক্তভোগী উপজেলার বঘডহর গ্রামের বাসীন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি একই কায়দায় গত কয়েক মাস আগে প্রতারণার স্বীকার হয়। তিনি প্রথমে সাংবাদিকদের কাছে বিস্তারিত বলবে বলেও পরে লোক লজ্জার ভয়ে মুখ খুলতে রাজী হয়নি। তবে এ ঘটনা সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত থাকা উনার ভাতিজা ও
স্থানীয় ইসলামি ঐক্যজোট নেতা মাওলানা মেহেদী হাসান বলেন, আমার চাচা সৌদি আরব প্রবাসী। তিনি প্রবাসে থাকা অবস্থায় ফঁাদে ফেলে। তিনি দেশে
আসা মাত্র তার চক্রের সবাইকে নিয়ে একটি মাইক্রোবাসে করে এয়ারপোর্টে থেকে তুলে হবিগঞ্জ নিয়ে যায়। সেখানে দীর্ঘদিন আটকিয়ে রেখে আমার
চাচার কাছে থাকা ৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। এদিকে আমরা চাচাকে খুঁজে না পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে নিখেঁাজ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি মামলা করেছি।
মামলা করার কিছু দিন পার হতেই আমার চাচা কৌশলে বিদেশ যাওয়ার কথা বলে তাদের খপ্পর থেকে বাড়িতে এসে ঘটনার বর্ণনা করলে আমরা সবাই বিষয়টি অবগত হই।
এই সম্পর্কে আদালতে অভিযোগ করা আরোক ভুক্তভোগীর ছোট ভাই মামলার বাদল মাহমুদুল হক রিপন বলেন, এই নারী প্রতারক চক্রের মূলহোতা নিলা নাঈম সে একজন শিক্ষিত ধান্দাবাজ। সে বিভিন্ন কৌশলে উপজেলার আশেপাশের সম্ভান্ত্র পরিবারের প্রবাসী যুবকদের বেছে নিয়ে প্রথমে তাদের ছবি সংগ্রহ করে। আরচক্রের অন্য সদস্যরা খুঁজখবর রাখে ছবি সংগ্রহ করা ব্যক্তটি কবে বিদেশ থেকে ছুটিতে দেশে আসবেন। যেই বিদেশ থেকে দেশে আসলে একটি ভূয়া
নিকাহনামার এভিডেভিড বানিয়ে কিছু দিন পরই স্ত্রী দাবি করে বাড়িতে তাদের চক্রের কাউকে পাঠিয়ে হুমকি দেয়। পরে একটি মহল আড়াল থেকে বিভিন্ন
মাধ্যম বিষয়টি শেষ করার কথা বলে এভিডেভিডে ধাযর্য করা দেনমোহরের টাকায় রফাদফা করে দেয়। রফাদফার টাকা বুজে পেলে তাদের আর কোন আপত্তি থাকে না।আমার ভাইয়ের ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু আমরা এই রফাদফায় রাজী না হওয়ায় আদালতে যৌতুকের দাবিতে মামলা করেন এবং আদালত এই চক্রের মূলহোতা মামলার বাদীনি নিলাকে পর পর চার বার তথ্য প্রমাণ নিয়ে হাজির থাকতে বলার পরও
সে হাজির না থাকায় এই মামলা থেকে আমাদের খালাস প্রদান করেন। পরে আবার গ্রাম্য ণ সালিশেও সে ভাড়া করা গুন্ডাপান্ডা দিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা করলে
গ্রামীণ সালিশে কোন প্রমাণাদি না দিতে পারায় ক্ষমা চেয়ে পালিয়ে যায়। সে এখন নানান ভাবে টাকার জন্য আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে অপ্রচার চালাচ্ছে তাই
আমি বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে ০৪/১০/২০ ইং তারিখে সি আর ২৬৩/২০ মামলা দায়ের করেছি।
এই সম্পর্কে জানতে ছাবিকুন্নাহার নীলা নাঈমের গ্রামের বাড়ি উপজেলার নারুই গ্রামে যোগাযোগ করা হলে তার নিকট আত্মীয় তাজুল ইসলাম জানান, আমি জানি না সে কোথায় থাকে তার মা আমার চাচাতো ভাইয়ের বউ
ছিল।
মামলার বাদীর আইনজীবী এড.দেলোয়ার হোসেন দুলাল বলেন,মামলাটি আমার মাধ্যমে হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি পুলিশি তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেছেন।