ডেস্ক রিপোর্ট-
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের হিমঘরে নেয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তার মরদেহ হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছায়। পরবর্তীতে সেখান থেকে সরাসরি তার মরদেহ রাজধানীর শেরে বাংলা নগরীতে অবস্থিত জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে হাদির মরদেহ দেশে পৌঁছানোকে কেন্দ্র করে বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন স্থানে নেয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। যেকোনও ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে বিমানবন্দরের বাইরে আগেই এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়েছিল। দেশে পৌঁছানোর পর বিমানবন্দর ৮ নং গেইট-এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে-ফার্মগেট-মানিক মিয়া এভিনিউ হয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের হিমঘরে পৌঁছায় শহিদ ওসমান হাদির মরদেহ।
অন্যদিকে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যমুনাসহ ঢাকার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা, কারওয়ান বাজার, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, যমুনা ও আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবি সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
এর আগে অবশ্য ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে জানানো হয়েছিল, বিমানবন্দর থেকে ওসমান হাদির মরদেহ সরাসরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নেয়া হবে। এ সময় জুলাই আন্দোলনের প্রাণ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আত্মোৎসর্গকারী অকুতোভয় এই বীরকে গ্রহণ করতে সবাইকে এয়ারপোর্ট থেকে শাহবাগগামী সড়কের দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানানো হয়। পরে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহিদ ওসমান হাদির মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে নেয়া হবে বলেও জানানো হয়।
ইনকিলাব মঞ্চ আরও জানিয়েছে, আগামীকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) জোহরের নামাজের পর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রসঙ্গত, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় মোটরসাইকেলে আসা দুই সন্ত্রাসীর গুলিতে মারাত্মক আহত হন ওসমান হাদি। রিকশায় থাকা অবস্থায় তার মাথায় গুলি লাগে। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারিভাবে তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। তবে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে (এসজিএইচ) তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর ঘটনায় হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে।