লিবিয়ায় এক মানবপাচারকারী পরিবারের সদস্যদের গুলিতে ২৬ বাংলাদেশি এবং ৪ আফ্রিকান অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি। এদের মধ্যে আহত ১১ জন ও ‘নিখোঁজ বা মৃত’ ২৪ বাংলাদেশির পরিচয় পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
‘নিখোঁজ বা মৃত’ ২৪ জন হলেন- গোপালগঞ্জের সুজন ও কামরুল, মাদারীপুরের জাকির হোসেন, সৈয়দুল, জুয়েল ও ফিরুজ, রাজৈরের বিদ্যানন্দীর জুয়েল ও মানিক, টেকেরহাটের আসাদুল, আয়নাল মোল্লা (মৃত) ও মনির, ইশবপুরের সজীব ও শাহীন, দুধখালীর শামীম, ঢাকার আরফান (মৃত), টাঙ্গাইলের মহেশপুরের বিনোদপুরের নারায়ণপুরের লাল চান্দ, কিশোরগঞ্জের ভৈরবের রাজন, শাকিল, সাকিব ও সোহাগ, রসুলপুরের আকাশ ও মো. আলী, হোসেনপুরের রহিম (মৃত) এবং যশোরের রাকিবুল।
আহত ১১ জন হলেন- মাদারীপুর সদরের তীর বাগদি গ্রামের ফিরোজ বেপারী, ফরিদপুরের ভাঙ্গার দুলকান্দি গ্রামের মো. সাজিদ, কিশোরগঞ্জের ভৈরবের শম্ভপুর গ্রামের মো. জানু মিয়া, ভৈরবের জগন্নাথপুর গ্রামের মো. সজল মিয়া, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বামনডাঙ্গা বাড়ির ওমর শেখ, টাঙ্গাইলের মহেশপুরের বিনোদপুরের নারায়ণপুরের মো. তরিকুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার বেলগাছির খেজুরতলার মো. বকুল হোসাইন, মাদারীপুরের রাজৈরের কদমবাড়ির মো. আলী, কিশোরগঞ্জের ভৈরবের সখিপুরের মওটুলীর সোহাগ আহমেদ, মাদারীপুরের রাজৈরের ইশবপুরের মো. সম্রাট খালাসী এবং চুয়াডাঙ্গার বাপ্পী।
আহতরা সবাই বর্তমানে ত্রিপোলি মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার লিবিয়ার সাহারা মরুভূমি অঞ্চলের মিজদা শহরে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
দ্য লিবিয়া অবজারভার জানায়, দেশটির একটি মানবপাচারকারী চক্র টাকার জন্য কয়েকজন বাংলাদেশি ও আফ্রিকান অভিবাসী শ্রমিককে মিজদা শহরের একটি জায়গায় জিম্মি করে রেখেছিল। গত মঙ্গলবার ওই চক্রটির সঙ্গে অভিবাসী শ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়। এতে এক মানবপাচারকারী মারা যায়।
পরে বৃহস্পতিবার ওই পাচারকারীর সহযোগী ও পরিবারের সদস্যরা প্রতিশোধ হিসেবে ওই ক্যাম্পে নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে ২৬ জন বাংলাদেশি ও ৪ জন আফ্রিকান অভিবাসী শ্রমিক মারা যায়।
এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) লিবিয়া কার্যালয়ের মুখপাত্র সাফা সেহলি গতকাল বলেন, তারা ঘটনাটি শুনেছেন এবং এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছেন। যারা এই নির্মম হত্যাকাণ্ড থেকে প্রাণে বেঁচে গেছেন তাদের সাহায্য করা হচ্ছে।