সেই মুক্তিযুদ্ধ থেকে আজ অবধি দেশের মানুষের জানমাল রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। বিশেষ করে, সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতিতে তাদের দায়িত্ব আরো বেড়ে গেছে। এ কাজ করতে গিয়ে আক্রান্ত ও প্রাণ বিসর্জন দিতেও হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের।
দেশের এই ক্রান্তিকালে ৬৬০টি থানার ওসিদের (অফিসার ইনচার্জ) নিয়ে বৈঠক করেছেন পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত প্রায় ৩ ঘণ্টাব্যাপী একযোগে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। যা দেশের ইতিহাসে প্রথম ঘটনা।
বৈঠকে আইজিপি ওসিদের উদ্দেশে বলেন, বর্তমানে সরকারের যে বেতন কাঠামো ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে তাতে সুন্দরভাবে জীবন চালানো সম্ভব। এ জন্য একজন সরকারি কর্মচারীর আয়ের সঙ্গে ব্যয় সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে। পুলিশের চাকরি করে অবৈধ অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে বিলাসী জীবন-যাপন যারা করতে চান, তাদের জন্য পুলিশের চাকরি নয়। যারা দুর্নীতিবাজ তারা পুলিশে থাকতে পারবে না। কেউ যদি বড়লোক হতে চান, তারা পুলিশের চাকরি ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা করতে পারেন।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, আপনারা কেউ অবৈধ উপায়ে যেমন অর্থ উপার্জন করবেন না, তেমনি কাউকে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের সুযোগ করেও দেবেন না।
তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কোনো পুলিশ কর্মকর্তা যদি আপনাদের কাছে ঘুষ বা মাশোয়ারা চান, তাহলে আমাকে নির্ভয়ে জানাবেন। আমি বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে দেখব।
আইজিপি আরো বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিচ্ছবি হলো ৬৬০টি থানার ওসি। সুতরাং বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি নির্ভর করছে আপনাদের ওপরই। জনগণ আপনাদের ওপর যাতে আস্থা রাখতে পারে এবং প্রত্যেককে সমাজের একজন নেতা হিসেবে সম্মান করে, সেভাবেই আপনাদেরকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
করোনাকালে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, বিগত তিন মাসে জনগণের পাশে থেকে পুলিশ সদস্যরা যা করেছে তা সত্যিই অভূতপূর্ব। জনগণও পুলিশকে তার প্রতিদান দিয়েছে। মানুষের অগাধ বিশ্বাস, সম্মান ও আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। যা টাকা দিয়ে কেনা যায় না।
ড. বেনজীর আহমেদ আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত ইচ্ছা ও অনুপ্রেরণায় আমরা সবাই বাংলাদেশকে দুর্নীতি ও মাদকমুক্তকরণে কাজ করছি। তবে এ জন্য পুলিশকে সবার আগে হতে হবে দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত। দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স।