বিনোদন প্রতিবেদক
করোনার মন্দা কাটিয়ে চলচ্চিত্রশিল্প আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এখন লক্ষ্য বিশ্ব অঙ্গনে জায়গা করে নেওয়া এবং সেটি সম্ভব। বরেণ্য অভিনয়শিল্পী, মুক্তিযোদ্ধা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক স্মরণসভায় তথ্যমন্ত্রী ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বুধবার এমন মন্তব্য করেন।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ আয়োজিত ‘হৃদয়ে জাগ্রত তুমি’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। এ সময় প্রয়াত চিত্রনায়ক ফারুকের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে চলচ্চিত্র ও রাজনীতিতে তাঁর কর্মময় জীবনের নানা দিক নিয়ে কথা বলেন হাছান মাহমুদ।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘করোনায় আমাদের আড়াই বছর মন্দা গেছে। এখন মহামারি কেটে গেছে, সিনেমাশিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে। প্রদর্শক সমিতি বলছে, এখন অনেক সিনেমা হচ্ছে। সিনেপ্লেক্স-সিনেমা হল নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণের জন্য স্বল্পতম সুদে এক হাজার কোটি টাকার ঋণ তহবিল হয়েছে। এক হাজার আসনের মিলনায়তন, চারটি শুটিং ফ্লোর, দুটি সিনেপ্লেক্স, দুটি সুইমিংপুলসহ বিএফডিসিতে নতুন কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হচ্ছে।’
আলোচনায় চলচ্চিত্রে সরকারি অনুদানের প্রসঙ্গও উঠে আসে। সরকারের পক্ষ থেকে সিনেমার অনুদানও বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, এ বছর ২৩টি পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবিতে অনুদান দেওয়া হয়েছে। আগে ১০টি ছবিতে দেওয়া হতো। তবে সিনেমাশিল্প কখনো অনুদাননির্ভর হতে পারে না, সে কথাও তিনি স্মরণ করিয়ে দেন।
দেশের চলচ্চিত্রের অঙ্গনকে মেধাসমৃদ্ধ বর্ণনা করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পরিচালক, অভিনয়শিল্পী, কলাকুশলীরা যেভাবে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পুরস্কার পাচ্ছেন, তা তাঁদের মেধার পরিচয়। এই মেধা কাজে লাগালে আমাদের সিনেমাশিল্প বিশ্ব অঙ্গনেও জায়গা করে নেবে। আসুন, সবাই মিলে সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করি।’
চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী ফারুকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘ফারুক ভাই অনেক কালজয়ী ছবিতে অভিনয় করেছেন। বিশেষ করে “গোলাপী এখন ট্রেনে”, “সারেং বৌ”, “সুজন সখী” সিনেমাগুলো তাঁকে বাঁচিয়ে রাখবে। সহজাত নেতৃত্বের এই মানুষটি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, সংসদ সদস্য ছিলেন এবং সবাইকে আপন করে নিতে পারতেন। কখনো ভাবিনি যে ফারুক ভাই এত তাড়াতাড়ি চলে যাবেন। কারণ, আপাতদৃষ্টিতে তাঁকে অসুস্থ মনে হতো না। প্রায় দুই বছর তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মাঝেমধ্যে আমি খবর নিতাম। শেষ পর্যন্ত তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। তিনি চলচ্চিত্রে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন এবং চলচ্চিত্রশিল্পের উন্নয়নের জন্য আজীবন সোচ্চার হয়ে কাজ করে গেছেন। আমরা তাঁকে ভুলব না।’
সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের আহ্বায়ক খোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শাহ আলম কিরণ, কাজী হায়াৎ, রোজিনা, রিয়াজ, অরুণা বিশ্বাস, নিপুণ, মুশফিকুর রহমান, প্রযোজক-পরিবেশক মোহাম্মদ হোসেন, চিত্রগ্রাহক আবদুল লতিফ, চিত্র সম্পাদক আবু মুসা, বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন। অতিথিরা তাঁদের চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী ফারুকের স্মৃতিচারণা ও তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করেন।
বা বু ম / অ জি