নিজেস্ব প্রতিবেদক
এবারের ঈদযাত্রা আগেরবারের চেয়ে চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁদের মতে, বৃষ্টি, পশুবাহী গাড়ি, ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও সড়কের পাশে গরুর হাট যানবাহন চলাচলকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এতে সৃষ্ট যানজট ঈদযাত্রায় ভোগান্তিতে ফেলতে পারে ঘরমুখী মানুষকে।
আসন্ন ঈদে ঘরমুখী মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব কথা উঠে এসেছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে এ বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এবারের ঈদযাত্রা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে। কারণ, এবার বর্ষা মৌসুম। বৃষ্টি হলেই গাড়ির গতি কমে যায়। আর গাড়ির গতি কমে গেলেই যানজট তৈরি হয়ে যাবে। আমাদের গলার কাঁটা গাজীপুরের বিআরটি প্রকল্প। সেখানে একটু নজর দিতে হবে, যেন যানজট না হয়। তা ছাড়া ঈদের আগে দুর্ঘটনা কম হলেও ঈদের পরে ফিরতি যাত্রায় দুর্ঘটনা বেশি হয়। এদিকে নজরদারি বাড়তে হবে।’
ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বৈঠকে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঈদের আগের ৭ দিন, ঈদের দিন ও পরের ৭ দিন মিলিয়ে মোট ১৫ দিন সিএনজি ফিলিং স্টেশন ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। যদিও গ্যাস সংকটের কারণে বর্তমানে বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সিএনজি ফিলিং স্টেশন বন্ধ রাখা হয়।
মন্ত্রী জানান, ঈদের সময় গরুবোঝাই গাড়ি ছাড়া পণ্যবাহী যান, বিশেষ করে ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকবে মোট সাত তিন। ঈদের আগে তিন দিন, ঈদের দিন ও পরের তিন দিন এই নিষেধাজ্ঞা থাকবে বলে জানান তিনি।
সভায় হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেন, ‘এবারের ঈদে ঘরমুখী মানুষ যেমন রাজধানী ছাড়বে, একই সঙ্গে সড়কপথে গরুর ট্রাকও রাজধানীতে প্রবেশ করবে। ফলে সড়কপথে যানবাহনের চাপ কিন্তু দ্বিগুণ থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের একটা জরিপে দেখা গেছে মহাসড়কের কাছে পশুর হাট বসে ২১৩টি। এর মধ্যে ৫৫টি হাট বসে সড়কের খুবই কাছে, যেখানে যানজট তৈরি হয়। তা ছাড়া সড়কের প্রায় ৭৭টি যানজটপ্রবণ এলাকা আছে। তবে মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে হাইওয়ে পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে।’
গতবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হয়েছে বলে মনে করেন সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা। বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়।
এদিকে ঈদের সময় বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কথা উঠলে সভায় বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ দাবি করেন, ঈদের সময় ছাড়া অন্য সময় সরকারের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কম নেওয়া হয়। কিন্তু ঈদের আগে সরকার নির্ধারিত ভাড়াই নেওয়া হয়।
ঈদের সময় ঢাকা শহরের লক্কড়ঝক্কড় বাস মহাসড়কে চলাচল করে। এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপরে বাস নষ্ট হলে পুরো পথেই যানজট লেগে যায়। পরিবহন মালিকদের বলব, আপনারা ঢাকা শহরের ফিটনেসবিহীন গাড়ি মহাসড়কে চালাতে দেবেন না।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘অনিয়ম যে করবে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের আপত্তি নেই। আমরাও চাই সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি না চলুক।’
বা বু ম / অ জি