শুক্রবার যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ সেবিকা বেনাপোল ইমিগ্রেশনের সাব ইনসপেক্টর ও ব্যাংক কর্মকর্তাসহ যশোরে নতুন করে ১১ জন কোভিড-১৯ নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে নমুনা পরীক্ষায় তাদের পজেটিভ শনাক্ত হয়। ১১ জনের মধ্যে যশোর সদর উপজেলার ৪ জন, শার্শা উপজেলার ২ জন, ঝিকরগাছা উপজেলার ১ জন, ও অভয়নগর উপজেলার ৪ জন রয়েছেন। এছাড়া নড়াইলে ১ জন, মাগুরায় ৫ জন ও সাতক্ষীরা জেলার ৭ জনের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছেন।
যশোর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা ডা. রেহেনেওয়াজ জানান, শুক্রবার সকালে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টার থেকে ৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাঠানো হয়। এছাড়া খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (যমেক) ল্যাব থেকে আসা ১৫ নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে কারো শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মেলেনি।
এদিন নতুন করে সুস্থ হয়েছেন ১ জন। তিনি আরো জানান, শুক্রবার নতুন করে ২০ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য যবিপ্রবি ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে নতুন করে যে ১১ জন আক্রান্ত হয়েছেন তারা হলেন যশোর শহরের ধর্মতলা বাসিন্দার যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জেষ্ঠ্য সেবিকা সাবিনা ইয়াসমিন (৪৯), হাসপাতালের পরিছন্নকর্মী স্বপন (৪৩), শহরের ঘোপ এলাকার রায়হান উদ্দিন (২৬), বেজপাড়া মেইনরোডের ব্যাংক কর্মকর্তা খান ওয়াহিদ এনাম (৩২) , শার্শা উপজেলার তরিকুল ইসলাম (৩৮), শওকত আলী (৪৮), ঝিকরগাছা উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের ইকবাল হোসেন (৫৯) ও অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌর এলাকার সঞ্জয় (৪০), তানভির হোসেন (৩০), মুন (৩৩) ও নজীব (৭)।
শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইউসুফ জানিয়েছেন, নতুন করে আক্রান্ত ৩ জনের মধ্যে তরিকুল ইসলাম বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের সাব ইনসপেক্টর (এএসআই) পদে কর্মরত রয়েছেন। অপরজন শওকত আলীর বাড়ি শার্শা উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের শওকত আলীর ওষুধ ফার্মেসীর দোকান রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাদের বাড়ি লকডাউন করেছে।
অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুর রহমান রিজভী জানিয়েছেন, তানভির ও মুন সম্পর্কে ভাই বোন। তাদের পিতা আব্দুল গনির করোনা শনাক্ত হয়েছিলো ৯ জুন। পিতার সংস্পর্শে তারা করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। এছাড়া শিশু নজীবের মা রোজিনা খাতুনও ৯ জুন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) এনএফটি বিভাগের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষণ দলের সদস্য ড. শিরিন নিগার জানান, জিনোম সেন্টারে যশোর জেলার ৬৮ নমুনা পরীক্ষায় ১১ জন ছাড়াও নড়াইল জেলার ২৮ নমুনা পরীক্ষা করে ১ জন, মাগুরা জেলার ৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫ জন ও সাতক্ষীরা জেলার ১২৫ নমুনা পরীক্ষা করে ৭ জনের পজেটিভ পাওয়া যায়। এছাড়া বাগেরহাট জেলার ২৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করলে সবগুলো নেগেটিভ শনাক্ত হয়। অর্থাৎ ৫ জেলার ২৮৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৪ জন পজেটিভ ও ২৬৫ জন নেগেটিভ ফলাফল এসেছে।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানান, শুক্রবার পর্যন্ত যশোর জেলায় মোট ১৮২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়েছেন ১০০ জন। মৃত্যু হয়েছে ১ জনের।