রংপুর জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের উত্তরপাড়া পাঁচঘরিয়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের আম বাগানে রংপুর নগরীর কেরানীপাড়ার আলম মিয়ার ছেলে মো. হাফিজুর রহমানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে মিঠাপুকুর থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
মামলার অগ্রগতি না হওয়ায় গত ২১ জুন পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমারের নির্দেশে মামলাটি স্থানান্তর করা হয় জেলা গোয়েন্দা শাখায়। গোয়েন্দা বিভাগের এসআই মনিরুজ্জামান তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আসামি রংপুর নগরীর সাতগাড়া সবুজপাড়ার মো. ফরহাদ হোসেন, দূর্গাপুর বড়বাড়ির মো. জাহাঙ্গীর আলম ওরফে কলক, অটোরিকশা ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িত গুড়াতিপাড়ার সাজেদুল ইসলাম সাজু, মিঠাপুকুর ভাংনী বাজারের মো. সুলতান মিয়া এবং সংগ্রামপুরের সোহেল রানা ওরফে বাবুকে গ্রেফতার করে। সেই সাথে রংপুর নগরীসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে লুণ্ঠিত অটোরিকশাটি উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ।
হাফিজুর রহমান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ৫ আসামি সোমাবার (১০ আগস্ট) রংপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিঠাপুকুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ফজলে এলাহীর কাছে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বর্ণনায় আসামিরা বলেন, ২০ ফেব্রুয়ারি ফরহাদ, সুলতান ও কলক ৩ বন্ধু বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে যান। এক পর্যায়ে তারা অটোরিকশা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে যান। সেখানে হাফিজুরের অটোরিকশায় করে রংপুর নগরী থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে মিঠাপুকুর খোড়াগাছ ইউনিয়নের নির্জন জায়গায় যায়।
পথের মধ্যে তারা হাফিজুরকে অবচেতন করার জন্য গোপনে কোমল পানীয়র সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে খাইয়ে দেয়। এতে হাফিজুর কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। খোড়াগাছ ইউনিয়নের নির্জন রাস্তায় চার্জার অটো রেখে তারা হাফিজুরকে পার্শ্ববর্তী আমবাগানে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে ছিনতাই করে।
রংপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম বলেন, মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তর করার পর আমরা দ্রুততার সাথে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হয়েছি। রংপুর জেলার বিভিন্ন অপরাধ দমনে কাজ করে যাচ্ছে ডিবি পুলিশ। এ জেলা থেকে অনিয়ম, অপরাধ নির্মূলে সাধারণ মানুষের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।