রফিক সরকার, গাজীপুর
বন্যায় ও ভারি বৃষ্টির কারণে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তুরাগের পানি বেড়ে তলিয়ে গেছে কয়েকটি আঞ্চলিক সড়ক। সেইসাথে নিম্নাঞ্চলের ফসলী জমি ও মৎস্য খামার তলিয়ে গেছে।
কালিয়াকৈর পয়েন্টে তুরাগ নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নদীর দুই পাশে বহু ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। নদী ভাঙনও দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কালিয়াকৈর পৌরসভার সাহেব বাজার, শ্রীফলতলী জমিদারবাড়ী এলাকার নিন্মাঞ্চল, সদরের গোলামনবী স্কুল, মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটসহ চাপাইর, শ্রীফলতলী, মৌচাক, মধ্যপাড়া, বোয়ালী, আটাবহ, ঢালজোড়া ইউনিয়নের বড়ইবাড়ী, খালপাড়, বোয়ালী, গাবতলী, কুন্দাঘাটা, গোলয়া, রঘুনাথপুর, টালাবহ, চান্দাবহ, বলিয়াদী, সেওড়াতলী সাদুল্লাপুর, ভৃঙরাজ এলাকাসহ বেশকিছু অঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে বন্যা কবলিত এলাকায় নানা দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটের পাশাপাশি গবাদী পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বন্যাদুর্গতরা। সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় নৌকায় চলাচল করছেন পানিবন্দি মানুষেরা।
স্থানীয় মাছ চাষীরা জানিয়েছেন, মাছের ঘের ভেসে যাওয়ায় লাখ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা। অনেকেই বড় ধরনের লোকশানের মুখে পড়েছেন।
কালিয়াকৈর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আশীষ কুমার কর জানান, বন্যার পানিতে সবজির ক্ষেত, আউশ ধানের মাঠসহ ফসলী জমি প্লাবিত হয়েছে। পানি দ্রুত সরে না গেলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রবীর কুমার সরকার জানান, বন্যা কবলিত এলাকায় পানিবাহিত নানা রোগ দেখা দিতে পারে। এছাড়াও বিষাক্ত সাপ-পোকা মাকড়ের দ্বারা ক্ষতির শিকার হতে পারে মানুষ। তবে বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্যোগে একটি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে বন্যাকবলিতরা মেডিকেল টিমের সাহায্য নিতে পারবেন।
কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী হাফিজুল আমীন জানান, বন্যার পানিতে কয়েকটি গ্রামের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এ কারণে মানুষের চলাচলে ভোগান্তি হচ্ছে। তবে ঘরবাড়ি তলায়নি।
তিনি আরও জানান, বন্যা দুর্গত এলাকাগুলোতে এখনও খাদ্যের অভাব দেখা দেয়নি। প্রত্যেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের জানানো হয়েছে। প্রয়োজনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।