উজানের ঢল ও ভারী বর্ষনে তিস্তা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়ে গত রোববার রাতে ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে।সোমবার দুপুর থেকে পানি কমতে থাকে সেই সাথে ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। রাতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পানির তীব্র স্রোতে লালমনিরহাট জেলার কাকিনা ইউনিয়নের রুদ্রেশসর গ্রামের একটি ব্রীজের সংযোগ সড়কের দুইপাশ ভেঙ্গে গেছে।
এতে করে গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের বাগেরহাট, ইচলী, শংকরদহ এবং কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা ও চিলাখাল গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার পরিবারের যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। ওইসব গ্রামে ত্রান পৌঁছে দিতেও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।এছাড়া, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পুর্বের ৮ হাজার পরিবারের সাথে নতুন করে আরও প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে পাকা সড়ক ।
বন্যাকবলিত এলাকাগুলো হল লহ্মীটারী ইউনিয়নের চর ইচলী, শংকরদহ, বাগেরহাট, জয়রাম ওঝা, চর চল্লিশাসাল এসব গ্রামে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবার, কোলকোন্দ ইউনিয়নের চিলাখাল, মটুকপুর, বিনবিনার চরের প্রায় দুই হাজার ৫শ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।গজঘন্টা ইউনিয়নের ছালাপাক, জয়দেব, রাজবল্লভের কিছু অংশ নদীর পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
ফলে ওই ইউনিয়নের ১ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। মর্ণেয়া ইউনিয়নের চর মর্ণেয়া, নীলারপারসহ আরো দুটি গ্রামের প্রায় এলাকার ২ হাজার পরিবার, নোহালী ইউনিয়নের চর বাগডোহরা, চর নোহালী, বৈরাতি’র প্রায় ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।এছাড়া বন্যায় ফসলী ক্ষেত, ঘর-বাড়ি ডুবে গেছে। অনেকে উচুঁ স্থানে গবাদীপশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
বন্যায় ঘর-বাড়ি ডুবে যাওয়ায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।উপজেলার লহ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ্ আল হাদী বলেন, রোববার রাতে তিস্তার পানি বেড়ে স্মরণ কালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। আমরা বন্যার পুর্বাভাস পাওয়ায় এলাকায় মাইকিং করে লোকজনকে সতর্ক করি ।
এছাড়া দুর্গম চর থেকে লোকজনকে সড়িয়ে নেই, তাই ক্ষতির পরিমান একটু কম হয়েছে। তিনি আরও জানান, রুদ্রেশসর গ্রামের ব্রীজের সংযোগ সড়ক ভাঙ্গায় তার ইউনিয়নের ৩ টি গ্রামসহ কোলকোন্দ ইউনিয়নের ২ টি গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি হাসান বলেন, রোববার রাতে তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
সোমবার দুপুরে তা বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তিস্তার পানি এখন কমছে। তবে পানি আবারও বাড়তে পারে।