1. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  2. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  3. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৬ অপরাহ্ন

ফটিকছড়িতে গাড়ি চাপায় দুই ছাত্রীকে নিহতের ঘটনায় ড্রাইভার গ্রেপ্তার

  • সময় : মঙ্গলবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ১৫৮

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ধানবোঝাই একটি চাঁদের গাড়ি সড়কের পাশে দুই ছাত্রীকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তারা নিহত হয়। গত বুধবার দুপুর একটার দিকে উপজেলার চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের পাইন্দং ইউনিয়নের পেলাগাজী মোড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে।নিহত দুই স্কুলছাত্রী হলো উপজেলার পাইন্দং ইউনিয়নের হাইদচকিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী আবুল বশরের মেয়ে মিশু আকতার ও একই ইউনিয়নের মোহাম্মদ লোকমানের মেয়ে নিশা মনি।


ফটিকছড়ির চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের পাইন্দং ইউনিয়নের পেলাগাজী মোড়ে একটি গাড়ির চাপায় প্রাণ যায় দুই স্কুলছাত্রীর। এরপর ঘটনাস্থলে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী


এ ঘটনায় ঐ দিন দুপুর দুইটা পর্যন্ত চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক এক ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। এ   সময় ট্রাফিক সার্জেন্টের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেন বিক্ষুব্ধরা। এ ছাড়া দুই পুলিশকে আটকে মারধর করেছেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় শত শত গাড়ি আটকা পড়ে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।পরে ফটিকছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), হাটহাজারী পুলিশ সার্কেলের এএসপি ও ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঘটনাস্থলে গিয়ে মাইকে বিক্ষুব্ধ জনতাকে বিচারের আশ্বাস দিলে অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়।


প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঐদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম শহর থেকে আসা পাইন্দং ইউনিয়নের পেলাগাজীদীঘির বাজারের রাইস মিল থেকে দ্রুতগতিতে আসা ধান বহনকারী একটি  চাঁদের গাড়ি  দূর্ঘটনা ঘটিয়ে ঘটনাস্থল থেকে  চালক পালিয়ে যায়। এসময় পথে সড়কের পাশে গাড়ির জন্য অপেক্ষায় থাকা দুই স্কুলছাত্রীকে চাপা দেয় গাড়িটি। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। আর গাড়িটি উল্টে গিয়ে দুমড়েমুচড়ে যায়।ঘটনাক্রমে নিজকাজে যাওয়া  ফটিকছড়ি থানা ট্রাফিক পুলিশের টিআই নিখিল জীবন চাকমা ও সার্জেন্ট মুহাম্মদ আলামিন নিজকাজে ফটিকছড়ি থানাতে যাওয়ার সময় একজন সিএনজি ড্রাইভার জানান, স্যার সামনে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় সংঘটিত হয়।

খবর পেয়ে দুই পুলিশ কর্মকর্তা দূর্ঘটনা স্থানে ছুটে গেলে বিক্ষোভকারী জনতার রোশানলে পড়েন এবং দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে যখম করেন এবং তাদের ব্যবহার করা মোটরসাইকেলে আগুন লাগিয়ে দেন।
ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নাবিল চৌধুরী বলেন, দুই ছাত্রীকে হাসপাতালে আনা হয়েছে মৃত অবস্থায়।নিহত স্কুলছাত্রী মিশুর বাবা আবুল বশর বলেন, ‘আমাদের দুই মেয়েকে যাদের জন্য জীবন দিতে হয়েছে, তাদের বিচার করতে হবে।’ স্কুলশিক্ষক মোহাম্মদ হাসেম বলেন, ‘দুজনই আমার ছাত্রী। তাদের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না।’


ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রবিউল হোসেন বলেন, ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা ট্রাফিক পুলিশের একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। টিআই নিখিল জীবন চাকমাকে মারধর করেন বিক্ষুব্ধরা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
জেলা পুলিশের হাটহাজারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।


পরে ১৪ ফেব্রুয়ারি সোমবার ফটিকছড়ি থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকা থেকে ঘাতক ড্রাইভার মোঃ আলাউদ্দিন, পিতাঃ রুহুল আমিন (তনু ফকির), শৈলকোপা, ফটিকছড়ি চট্টগ্রাম আটক করেন।


ড্রাইভার আলাউদ্দিনের স্বীকারোক্তিতে বলেন, তিনি চৌদ্দ  বছরধরে মোটর লাইনে কাজ করেন এবং সাত বছরধরে ড্রাইভিং লাইসেন্স বিহীন চাঁদের গাড়ী চালাচ্ছেন। তার থেকে দূর্ঘটনার বর্ণনায় জানা যায় বিপরীত দিকথেকে আসা একটি মোটরসাইকেল লংসাইডে এসে পড়লে তাকে বাঁচাতে গিয়ে গাড়ীটি উল্টে গিয়ে দূর্ঘটনা হয়। এবং ঘাতক ড্রাইভারকে পুলিশ  প্রশাসনেক কেউ তাড়া করেছেন কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, না আমাকে কেউ তাড়া করেনি আমি আমার নিজ গতিতে গাড়ী চালিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলাম।
সদ্য সিলেট থেকে বদলি হয়ে গিয়ে  ফটিকছড়ি থানা ট্রাফিক পুলিশে যোগদান করা টিআই নিখিল জীবন চাকমা বলেন-১/ দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন কালে বিনা কারণে উশৃংখল জনতার হামলার শিকার সদ্য যোগদানকৃত টি আই নিখিল  এবং সার্জেন্ট আল আমিন।


২/ অপরিচিত  এক অটো রিক্সা চালক দুর্ঘটনা সংবাদ দিলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং হতাহত দের সহযোগিতা করার জন্য গেলে কোন কিছু বুঝে উঠার আগে উপস্থিত জনগন লাঠিসোঁটা দিয়ে মারধোর করতে থাকে,প্রানে বাঁচতে পালানোর চেষ্টা করে,আর উশৃংখল জনগন প্রচার করতে থাকে যে, পুলিশের তাড়াখেয়ে  গাড়ি টি এক্সিডেন্ট করে, ঘটনাস্থলে দুই জন দশম শ্রেনী ছাত্রীর মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যু হয়। মৃত্যু বা দুর্ঘটনা কারোর কাম্য নয়,তেমনি বিনা আপরাধে বা বিনা কারণে কারোর উপর আক্রমন করা,যাচাই না করে কার উপর দোষ চাপানো,সরকারী সম্পত্তি পুরিয়া দেয়া,বা বিনা উস্কানিতে সুনামধন্য  পুলিশ বাহিনীর উপর আক্রমণ করা কাম্য নয়।


৩/ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র  করে কেও স্বার্থ হাসিল করতে চায় কি-না সতর্কতার সহিত তদন্ত  করা উচিৎ।
৪/ বর্তমানে টি আই নিখিল মারাত্মক  আঘাত প্রাপ্ত হয়ে পুলিশ  হাসপাতালে  চিকিৎসাধীন আসেন।গতকাল পলাতক চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে,তার বক্তব্য নেয়া হয়েছে,তাতে বুঝা গেল দুর্ঘটনার সাথে কোন পুলিশই জড়িত নয়। তাই, টি আই নিখিল এবং সার্জেন্ট আল আমিন উপর বিনাকারণে আক্রমণ, গাড়ী পুড়িয়ে  দেয়ার কারণে  আক্রমণ কারী দের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা উচিত এবং টি আই নিখিল এবং সার্জেন্ট আল আমিন কে তাদের বিরুদ্ধে  আনা অভিযোগ থেকে দ্রুত অবাহতি দেয়া উচিত।
অন্যতাই পুলিশের  দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে মনোবল দুর্বল হতে থাকবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪