1. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  2. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  3. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
তীব্র তাপ প্রবাহের সাথে বেড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ ভারতে দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ শুরু থাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণ নাগরিক জীবনে সর্বত্রই পুলিশের অবদান রয়েছে- ডিএমপি কমিশনার ইউক্রেন-ইসরায়েলের সহায়তা বিলে বাইডেনের স্বাক্ষর আবারও সারাদেশে ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের ২৮৮ সেনা-বিজিপি সদস্যদের হস্তান্তর সম্পন্ন চলমান যুদ্ধ বন্ধে বিশ্ব নেতাদের নিকট প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ-ওবায়দুল কাদের

অলিখিত আখ্যান

  • সময় : বুধবার, ২৬ মে, ২০২১
  • ৭৭৮

সুপ্রিয়া প্রিয়া জ্যোতি:

১.কিছুদিন যাবৎ রতনের কথা ভাবতেই গা গুলিয়ে উঠছে।হয়ত অংক কষছি,চুল আঁচড়াচ্ছি,টিভি দেখছি বা বারান্দায় উদাস দাঁড়িয়ে আছি – হঠাৎ ই তার লোভাতুর চোখদুটো ভেসে উঠে আর ঘেন্নায় মনটা ভরে যায়।আমার সারা শরীরে পাক খায় বিচ্ছিরি এক অনুভূতি।দৌড়ে গিয়ে বাথরুমের বেসিনে উবু হয়ে এক দলা থুথু ফেলি।
চোখেমুখে পানি ছিটকে দেই।ট্যাপ থেকে অবিরাম কলকল পানি পড়ছে।আমি আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজেকে দেখি।কি এমন পরিবর্তণ হয়েছে আমার যে সবাই এখন কেমন চোখে তাকায়।
রতনের মতো হাবা ছেলের চাহনিও অমন কুৎসিত হয়ে যায়।রতন আমার দূর সম্পর্কের ফুপাত ভাই।কিন্তু পারিবারিক ভাবে ওরা আমাদের খুব কাছের। রতন আর রথি পিঠাপিঠি দুই ভাইবোন।আমার বছর তিনেকের বড়।রথি কে আপা ডাকলেও রতন কে কখনো ভাইয়া বা দাদা ডাকিনি।ও লেখাপড়ার যেমন খারাপ তেমনি দেখতে, আচরণেও হাবাগোবা।লম্বায় ছিল আমার চাইতেও ছোট আর লিকলিকে শরীর।
আমরা ওকে তালপাতার সিপাহি বলে ক্ষেপাতাম।আমি যখন ক্লাশ ফোরে পড়ি রতন পড়ে সিক্সে।পর পর দুই বছর অংকে ফেল করে সিক্সেই পরে রইল।এদিকে আমি পাশ করে এগিয়ে যাওয়ায় দুইজন হয়ে গেলাম একই ক্লাশে।তবে আমাদের স্কুল ছিল আলাদা। আমি পড়তাম সিলভারডেল গার্লস স্কুলে।আর রতন জুবলী স্কুলে।
২.
আমরা থাকি ওয়ারীর লারমিনি স্ট্রিট রোডে।পুরনো বাড়ি।শুনেছি অনেক বছর আগে আমার দাদা এক হিন্দু লোকের কাছ থেকে বাড়িটি কিনেছিলেন।তারা এ বাড়ি বিক্রি করে কলকাতায় চলে গেছেন।
মায়ের কাছে শুনেছি।আমার দাদি ছিলেন বৃক্ষপ্রেমি। পুরো বাড়িতে আম,জাম,লিচু,নারকেল,সুপুরি গাছ দেখে আনন্দে আটখানা হয়ে গিয়েছিলেন।বাড়ির সামনে ফুলের বাগান আর পিছনে সবজি দিয়ে পুরো বাড়ি ভরে ফেলেছিলেন।
হিন্দু বাড়িতে যে তুলসি গাছ থাকে সেটা অবধি কাটতে দেন নি।তিনি নাকি বলেছিলেন-” গাছের আবার হিন্দু মুসলিম কি গো!”
মা ও তাই শিখেছেন।বাড়ির গেইটেই দুপাশে লাগিয়েছেন মাধবিলতা।সবুজ পাতায় ছাওয়া সে মাধবিলতা, কি অপূর্ব! আমি যে ঘরটায় থাকি সে জানলা ঘেঁষে একটা হাসনাহেনা আছে।আর কাঠগোলাপ গাছটা বাড়ির দক্ষিণে।পুরো বাড়িতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে রক্তজবা,ঝুমকো জবা,শ্বেত জবা।মায়ের খুব ফুলের শখ কিনা তাই পুরো বাড়িতে ফুলের গাছ।এখন আর সবজি করা হয় না।সেখানে এখন সাত আটটা আকাশি,কড়ই,মেহগনির চারা পুঁতেছেন বাবা।মা বাড়ির নাম দিয়েছেন “সুখনীড়”। হলুদ দেয়ালে বাবা সবুজ নেমপ্লেট করে দিয়েছেন।
পুরো মহল্লায় আমাদের বাড়ি এক নামে সবাই চেনে।
আমার বাবা একমাত্র সন্তান বলে এ বাড়ি আর ভাগ হয়নি।আমরা ৪ ভাইবোন এ বাড়িতেই বড় হচ্ছি।আমার তিন ভাই।আমি সবার ছোট।মায়ের খুব মেয়ের শখ ছিল।আমার জন্মের পর তিনি
সব সময় বলতেন –
সংসারে মেয়ে না থাকলে চলে!মেয়েরা ঘরের শোভা বাড়ায়।সংসারের কাজে সাহায্য করে।ছেলেরা তো আর ঘরে থাকার মানুষ না।

৩.
ছোটবেলায় মা কখনো আমাকে আড়াল হতে দিতেন না।সারাক্ষণ চোখে চোখে রাখতেন।বাবা ছিলেন রেলের চাকুরে।জেলায় জেলায় ছিল পোস্টিং।তিনি সুযোগ বুঝে ঢাকায় আসতেন।আর যোগাযোগ করতেন চিঠি বা টেলিফোনে।আমাদের বাসায় টেলিফোন ছিলো না।ছিলো রতনদের বাসায়।বাবা প্রথমে ফোন করে বলে দিতেন,আবার কখন করবেন।রথি আপা এসে সময় বলে যেত।
মা সে সময় মতো আমাকে ফ্রক পরিয়ে সাথে নিয়ে যেত।আমিও ওদের ঘরে গিয়ে মায়ের পাশে বসে থাকতাম।রতন দূরে দাঁড়িয়ে দেখতো।আমি যদি বলতাম – এই রতন খেলবি?
সে মাথা নেড়ে দৌড়ে পালাত।তখন চুপ করে বসে বসে
দেখতাম কি সুন্দর করে রতনদের বাড়িটা সাজানো।
মেঝেতে কার্পেট,দামি ফার্নিচার, সুন্দর ছিটের পর্দা, রঙ্গিন টিভি,টেলিফোন।
দেখতাম আর মুগ্ধ হতাম।কথা শেষ করে মায়ের হাত ধরে বাড়ি ফেরার সময় মাকে বলতাম
-মা,রতনদের বসার ঘরটা কি সুন্দর না?

  • আমাদেরটাও সুন্দর।
    -ওদের কার্পেট আছে।
    -সবসময় কার্পেট বিছিয়ে রাখলে মেঝে নষ্ট হয়ে যায় বুঝলি।
  • ওদের কি সুন্দর সোফা।
    -আমাদেরও আছে।
  • না, আমাদের তো বেতের সোফা।ওদের গুলো কি সুন্দর। কাঠের।
    -তোর বিয়েতে ঘর ভরে কাঠের ফার্নচার দিবো।যত খুশি সাজাবি।
  • মা দেখেছো, ওদের রঙ্গিন টিভি।আমাদেরটা সাদাকালো।বাবাকে বলো না আমাদেরও রঙ্গিন টিভি কিনে দিতে।
    এবার আর মা কথা বলে না।চুপ করে থাকে।প্রতি শুক্রবারে যখন বাংলা সিনেমা হতো।আমাদের সাদাকালো টিভিতেই সে সিনেমা দেখার জন্য নীলা,
    শরিফা,পুতুল,গৌতম,জয়দেব,নীপা,দীপনরা আসতো।আর সাথে তাদের মায়েরা।
    বিছানা,সোফা,মেঝেতে বসে সবাই একসাথে সিনেমা দেখতো।মহল্লাতে যারা থাকতো তারা প্রতিবেশীর কম আত্মীয়ের মতোই ছিল।এর বাড়ির রান্না তার বাড়ি।এর পিঠা ওর বাড়ি।ঈদ,পূজা,শবে -ব- রাত,বৈশাখ সব কিছুতে সবাই একসাথে।
    সন্ধ্যে বেলা কারেন্ট চলে গেলে আমাদের আনন্দ আর দেখে কে।আমার তিন দাদা আর বাড়িতে আসা ছেলেমেয়েরা মিলে শুরু করতাম নানান খেলা।কানামাছি,ফুলটোক্কা,লুকোচুরি।
    অন্ধকারে গাছের আড়ালে আমরা লুকাতাম।আর বড়রা তখন গল্পে মশগুল।মা নিশ্চিন্ত, কারণ মেয়ে তার চোখের সামনেই খেলছে।
    মা আমাকে সাথে করে স্কুলে নিয়ে যেতেন নিয়ে আসতেন।কক্ষনো একা কোথাও ছাড়েননি।
    আমার খুব একা একা স্কুলে যেতে ইচ্ছে করত।ইচ্ছে করত দাদাদের মতো এ পাড়া ও পাড়া ঘুরে বেড়াতে। ঘুড়ি উড়াতে,ভোঁ কাট্টা করে চেঁচাতে,সাইকেল চালাতে,ঝড় এলে হল্লা করে ঝন্টুকাকাদের উঠোনে আম কুড়াতে।
    মা দিতেন না।বলতেন মেয়েদের অমন ছুটে বেড়ানো ভালো নয়।মেয়েদের একা থাকতে নেই।একা থাকলে বিপদ বাড়ে।
    আমি এর মানে বুঝতাম না।জানতে চাইতাম-
    কিসের বিপদ মা?
    মা আল্লাহ কে ডেকে বলতেন- ” এ মেয়ের একটু বুদ্ধিসুদ্ধি দাও আল্লাহ!

৪.
আমার যখন ১৩ বছর তখন পায়ের শেকল যেন আরো বেশি মজবুত হলো।আমার মনে আছে,সে বছর জন্মদিন গেল তার কিছুদিন পরেই আমার কি একটা হলো।পরে বুঝেছিলাম সেটা ঋতুস্রাব।কিন্তু
মা আমাকে এ ব্যাপারে কিছুই বুঝিয়ে বললেন না।আমি ভয়ে আতঙ্কে যখন কাঁদছি তখন শুধু বললেন-
“এসব কারুকে বলবি না খবরদার।সব মেয়েদের অমন হয়।শোন বড় হচ্ছিস।এখন থেকে আরো সাবধানে থাকবি।”

কি আশ্চর্য! বড় হলে সাবধানে কেন থাকব!আমার তো মনে হয় তাড়াতাড়ি বড় হলেই সুবিধে।স্বাধীন হওয়া যায়। এই যে দাদারা বড় হচ্ছে মা তাদের এখন একা একা সব করতে দিচ্ছে।বড়দা অন্য পাড়ায় ফুটবলব খেলতে যায়।
মেজদা তো সেদিন একা বন্ধুদের সাথে পিকনিকেও গেল।ছোটদা ছুটে বেড়াচ্ছে,এ বাড়ি সে বাড়ি যাচ্ছে অনায়েসে।আমার কোন অনুমতি নেই।এদিকে আমিও তো বড় হচ্ছি। অথচ আমাকে কিনা বলা হলো “আরো সাবধানে থাকবি!”

মা কিসের সাবধানের কথা বলতেন?তখন বুঝতাম না।তবে এখন বুঝি।রতন আমাকে ছুঁয়েছে পরে যে রকম বিচ্ছিরি অনুভূতি হয়েছে।তেমন অনূভুতি আমার আরো বেশ কয়বার হয়েছে।খারাপও লেগেছে। আবার ভুলেও গেছি।
কিন্তু সেসব আর ভুলে থাকতে পারলাম কই!বারংবার ঘুরে ফিরে কেউ না কেউ সে সব বাজে অনুভূতি গুলো জাগিয়ে দেয়।

৫.
প্রথম যেবার এমন অনুভূতি হলো তখন আমি ক্লাশ ফোরে পড়ি।বড় খালা মা কে বলেছিলেন

  • মেয়ে এত্ত বড় হয়ে গেল এখনো কোরান খতম দেয়নি বীনু?
    -না আপা।
    -মজসিদে দিয়ে দে সবার সাথে ভালো পড়া হবে।
    -বাসায় তো টুকটাক পড়ছে।
    -বাসায় পড়লে শুদ্ধ হবে? এটা আল্লার পাক কালাম। তোর গুরুত্ব দেয়া উচিত।
    -আসলে বুঝি কিন্তু….
    -কোন কিন্তু না,মরতে হবে না। কিছু আমল সঙ্গে নিতে হবে না?তুই মারা গেলেও মেয়ে তোর নামে কোরআন খতম দিবে।তোর গোর আজাব কমবে।মেয়েকে গান শিখানোর মাস্টার খুঁজিস আর হুজুরের কাছে কোরআন পড়তে দিতে পারিস না, এটা কোন যুক্তি?

মা আর কথা বাড়ায়নি।ঠিক হলো প্রতিদিন আছরের পর পাড়ার মসজিদের ছোট হুজুরের কাছে দাদাদের সাথে পড়তে যাবো।আমার কি যে ভালো লাগছিল।সেখানে শেফালি,খুকু,তুলি,ওরাও পড়ে। মসজিদে মেয়েরা একপাশে আর ছেলেরা একপাশে বসে।
ওদের সাথে দুলে দুলে কোরআন পড়তাম।আর পড়া শেষে ওদের সাথেই গল্প করতে করতে বাসায় ফিরতাম।
একদিন হুজুর আমার পাশে এসে বসে বললেন
-তুমার নাম জানি কী?

  • বিদিশা
    -এইডা কেমুন নাম!হাদিস কোরানের নাম রাখতে পারে নাই তোমার বাপমায়?কোন কেলাশে পড়ো জানি?
  • ক্লাশ ফোর
    -তোমার ভাই জানি কোনডা?
    আমি তর্জুনি তুলে ইশারায় দেখিয়ে দেই।
    সবাই তখন সুরে সুরে আলিফ জবর আ,বা জবর বা পড়ার ব্যস্ত।চারদিকের কলরবের আড়ালে ফিসফিস কন্ঠে,হুজুর তার পান খাওয়া দাঁত বের করে হাসে আর ভ্রু নাচিয়ে বলে
    -কাল থিকা আরো বড় ওড়না পইরা আসবা। তুমার সইল গতর ভারি ভারি।আমি তো ভাবছি আরো বড় কেলাশে পড়।হে হে হে।

আমি লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে গিয়েছিলাম।পরের দিন থেকে রোজ মায়ের বড় ওড়নাটা মাথায় জড়িয়ে নীচের দিকটা ঝুলিয়ে দিলাম।হুজুর প্রায়ই সবাই কে পড়া দিয়ে আমার পাশে এসে গল্প করতে চাইতেন।সেই একই প্রশ্ন দিয়ে গল্পের শুরু
-তুমার নাম জানি কী?এইডা কেমুন নাম? ধুর ধুর,
নাম হইব আয়েশা,ফাতেমা,খাদিজা।

আমার এত রাগ হতো। আমার পাশে বসলেই হুজুরের গা থেকে আতর আর পান,সুপুরি,জর্দার একটা উৎকট গন্ধ নাকে আসত।
একদিন হলো কি,হুজুর ঠিক করলেন আমাদের সঠিক নিয়মে নামাজ শেখাবেন।হুজুর বললেন

-প্রথমে সবাই খারায়া পড়ো। নামাজের নিয়ত কইরা উভয় হাত কান পর্যন্ত ওঠাও। হেরপর তাকবিরে তাহরিমা কও। পরে বাম হাতের ওপর ডান হাত রাখো।পুলারা নাভির নীচে হাত বাঁধো।আমার মাইয়ারা বুকের উপর।
আমরা সবাই দাঁড়িয়ে তার নির্দেশনা অনুসরণ করছি।
যথাবিহিত ছেলেমেয়ে আলাদা সারিতে।আমি এক কোনায় দাঁড়ানো।হুজুর হঠাৎ করেই আমার কাছে এসে এমন বিস্মিত হয়ে বলেন

  • আরে এই মাইয়া তো কিছুই পারে না।খারাও আমি শিখায়া দিতাছি।বলে তিনি আমার পিছনে গিয়ে উনার এক হাত আমার হাতে ধরে অন্য হাতে আমার বুকে এমন জোরে চাপ দিলেন।আর জোরে জোরে বললেন
    -বুকা মাইয়া।নামাজ সঠিক নিয়মে না পড়লে আল্লাহ কবুক করেন না।বুঝলা।
    বলেই দূরে সরে গেলেন।আবার সে মুখে মুখে নির্দেশনা দিচ্ছেন।সবাই সে মত নামাজ শিখছে।আমিও করছি।রুকু, সিজদা।করেই যাচ্ছি।অথচ রাগে,ঘেন্নায় চোখের পানি উপচে পরছে।
    সেদিন থেকে আর মসজিদে যাই নি।সে বিচ্ছিরি কথা মনে করে কত যে কেঁদেছি!
    মা কখনো জোর করেন নি।শুধু জানতে চেয়েছেন কেন যাবো না।আমি বলিনি। মনে হয়েছিল, মা যদি হুজুরকে জিজ্ঞেস করে, উনি লজ্জা পাবে না!
    ৬.
    আমার ১৪ বছরের জন্মদিনে বাবা আমাকেএকটা হারমোনিয়াম উপহার দিলেন।মা দারুণ গান গাইতেন।শিখেন নি কখনো।তার খুব ইচ্ছে আমি গান শিখি।অনেক দিন যাবৎ গানের শিক্ষক খুঁজছিলেন।পেয়েও গেলেন।ঠিক হলো আমি আর ছোটদা গান শিখবো।দাদা প্রথমে আপত্তি করেছিল।কিন্তু মায়ের চোখ রাঙ্গানিতে সেটা আর টেকেনি।মাস্টারমশাই আমার বাবার বয়সি, মানে চল্লিশ পয়তাল্লিশ বছর হবে।
    মাথায় ঝাকড়া চুল,চিকন গোঁফ।সব সময় পাঞ্জাবি পরেন আর বা কাঁধে ঝুলিয়ে দেন একটা উত্তরী।
    হাবভাব পোশাকে শতভাগ সংস্কৃতমনা।কি চমৎকার রবীন্দ্র সঙ্গীত গান!শুনলে মন ভরে যায়।কথাও বলেন সুন্দর করে।
    মাস্টারমশাই যখন “শুধু তোমার বানী নয় গো হে বন্ধু হে প্রিয় ” গানটা গান আমি আকুল হয়ে শুনি।আর মনে মনে বলি কি দারুণ মানুষটা।
    কিন্তু ধীরে ধীরে আমার দিকে তিনিও কেমন কেমন করে যেন তাকান।আমি বেশ টের পাই।বছর খানেক হলো গান শিখছি।কই আগে তো অমন দৃষ্টি দেখিনি।
    ইদানীং প্রায়ই হারমনিয়াম আড়াল করে তিনি আমার উঁরুর উপর হাত রাখেন।প্রথমে ভেবে ছিলাম বুঝি অন্যমনস্ক ভাবে লেগে গেছে।পরে খেয়াল করলাম ছোটদা কোন কারণে একটু সরলেই তিনি উঁরুর উপর হাত রাখেন আবার চাপ দেন।আমি যে বিরক্ত হচ্ছি।চোখমুখ দেখেও কি তিনি তা বোঝেন না?
    একদিন আমার পাশ থেকে গীতবিতান টা নেয়ার সময় ইচ্ছে করে হাত দিয়ে আমার বুক ছুঁয়ে দিলেন।মাস্টারমশাইয়ের ব্যবহারে
    সেদিন কি কষ্ট যে পেয়েছিলাম!মা কে গিয়ে বললাম আমি আর গান শিখবো না।মা অবাক হয়ে বলেছিলেন তুই না বললি-
    বিটিভিতে নতুন কঁড়িতে গান গাইবি।না শিখলে পারবি?
    আমি সেখান থেকে ছুটে চলে গিয়েছিলাম।ঘরে খিল এঁটে খুব কেঁদেছিলাম সেদিন।সে থেকে আমার গান শেখাও হলো না।এ নিয়ে আমি আফসোস করি না।আসলে গানকে আমি ভালোবাসি।তবে ভালোবাসার জায়গায় গা ঘিনঘিনে ব্যাপার থাকলে সে ভালোবাসাটা পরিপূর্ণ হয় না।

৭.
আমাদের পাড়ায় আশেপাশের সবাই সবার বাড়িতে বেশ আসাযাওয়া! সাথে বাটি চালাচালি তো আছেই।ঘরে যাই রান্না হবে প্রতিবেশী কে ছাড়া যেন কারু মুখে রুচে না।বিশেষ করে মা ফুপুকে ছাড়া কিছুই খাবেন না।ফুপুও তাই।যা রান্না করছে পাঠিয়ে দিচ্ছে।
গেল শবে-ব- রাতে আমার ফুপু।মানে রথি আপার মা এত অসুস্থ ছিলেন,যে কিছুই রান্না করতে পারেন নি।মা রুটি,বুটের হালুয়া,পায়েস,মুরগীর ঝোল আর পোলাউ রান্না করে আমাকে বললেন

  • তুই পারবি দিয়ে আসতে?আমার মেলা কাজ পরে আছে।সব শেষ করে আবার রাতে নামাজ পড়তে হবে।ও বাড়ি গেলে কথায় কথায় দেরি হয়ে যাবে।
    আমি বললাম পারব।
    মা বলে দিলেন যেন দেরি না করি।
    আমি টিফিন ক্যারিয়ার হাতে নিয়ে রতনের বাড়িতে গিয়ে দেখি পুরো বাড়ি সুনসান নিরব।বসার ঘরে ঢুকে দেখি রথি আপা টেলিফোনে নীচু গলায় হেসে হেসে কথা বলছে।আমাকে দেখেই ঠোঁটে আঙ্গুল ছুঁয়ে আমাকে ফিসফিস করে বললো
  • বাবলু ভাইয়ের সাথে গল্প করছি।তুই খাবার টা রেখে চলে যা রে।বিকেলে তোদের বাসায় এসে কথা বলবো।

রথি আপার কথা শুনে আমার খুব মজা লাগছিল।যদিও বাবলু কে আমি জানি না।তবে আন্দাজ করছিলাম হৃদয় ঘটিত কোন ব্যাপার হবে।
আমি মুখ টিপে হাসলাম।হাত ইশারায় বিদায় নিয়ে সবে তেতলার সিঁড়িতে এসেছি।দেখি রতন সামনে দাঁড়ানো।চোখমুখে একটা চোর চোর ভাব।
এ কয় বছরে রতন খুব বদলে গেছে।মেজদার সমান লম্বা।আগের মতোই চিকন তবে চোখমুখে হাবাগোবা ভাবটা নেই। সিঁড়ির পাশেই রতনের ঘর।
আমাকে দেখেই আস্তে করে বললো

  • এই বিদিশা।এদিকে আয়।জরুরী কথা আছে।
    আমি ঝাঁঝালো কন্ঠে বলি
    -কি
    -আরে আয় না।
    -না,মা তাড়াতাড়ি যেতে বলেছে।
    -তুই আমার কাছে আসবি না?
    -না
    আমি না বলতেই রতন ছুটে আমার কাছে এলো প্রথমেই হাত দেয়ার চেষ্টা করল আমার বুকে।আমি চট করে দুইহাতে বুকের সামনে দিয়ে আড়াল করে ফেললাম।রতন আমাকে জড়িয়ে ধরে চিবুক টেনে জোর করে আমার ঠোঁট কামড়ে দিয়ে পালিয়ে গেল।
    আমি লজ্জায় ভয়ে হতভম্ব হয়ে দাঁরিয়ে রইলাম।কোন রকম বাড়ি ফিরেছি।আমার এত জঘন্য লেগেছিল।মনে হচ্ছিল তক্ষুনি মরে যাই।রতনের গা থেকে বিকট ঘেমো গন্ধে পেট উল্টিয়ে বমি পাচ্ছিলো।
    তারপর থেকে যতবার রতনকে দেখেছি ততোবার আমার বমি পেয়েছে।ওকে দেখলে আমার জন্তু মনে হয়।মনে হয় সুযোগ পেলে এক্ষুনি এসে এক খাবলা কাঁচা মাংস কামড়ে খাবে।
    শুধু রতন কেন!বড়দার বন্ধু পিন্টু। সেও কি কম!একদিন বসার ঘরে টিভি দেখতে দেখতে সোফায় শুয়েই ঘুমিয়ে গেছি।ঘুমের মধ্যেই আমার পায়ের নীচে হাঁটু অবধি কেমন ঠান্ডা মত অনুভূত হলো।
    জ্বরে গা কাটা দেয়া শীতের মতো আঁকরে ধরল শরীরটা। চোখ খুলে আমি ভূত দেখার মত চমকে উঠলাম। দেখি পিন্টুদা আমার পায়ে হাত বুলাচ্ছে।আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।সেই একই কান্ড, সেই একই অনুভূতি। তখনো
    মনে হচ্ছিল একটা সাপ আমার হাঁটু থেকে পায়ের পাতা অবধি পেঁচিয়ে বসে আছে।কিছুতেই সাপ টাকে সরাতে পারছি না।
    কতক্ষণ সেভাবে বসে ছিলাম জানিনা।চোখের সামনে মসজিদের ছোট হুজুর,মাস্টারমশাই,রতন আর পিন্টুদার মুখ ভাসছিল।কেন এরা এমন করে।শুধু কি আমাকে দেখলেই করে? নাকি তাদের মেয়ে হলেই হলো।একটু ছুঁয়ে দিতে পারলেই যেন প্রান পায়।এত হাপিত্যেশ কেন এদের?এত ছোঁক ছোঁমেরে ক করা স্বভাব কেন?
    ছোট বেলায় কোন অনুষ্ঠানে বা কারো বাড়ি নেমন্ত্রনে গেছি হোক জ্যেঠু,কাকা,মামা,ফুপা কিংবা কোন বড় ভাই আদর করার ছুতোয় গাল টিপে, কোলে বসিয়ে, জরিয়ে ধরত।আমার অসহ্য লাগতো।কই ছোটদাও আমার কাছাকাছি বয়সের তাকে তো অমন ভাবে আদর করে দেয় না।আমি কি কিছু বুঝি না!সব বুঝি।
    আমি এখন যথেষ্ট বড় হয়েছি।কিছুদিন বাদে কলেজ শেষ করব।মা আমাকে কি চোখে চোখেই না রাখেন।কেন রাখেন এখন বেশ বুঝি।কিন্তু রেখে লাভ টা হলো কি শুনি!
    সালোয়ার কামিজ পরলে মা খেয়াল রাখেন সেটা যেন আটসাঁট না হয়ে যায়।শাড়ি পরলে আঁচলখানা বুকের উপর টেনে রাখতে হয়।কারো সামনে জোরে হাসা নিষেধ, হরবর করে কথা বলা নিষেধ, পা ছড়িয়ে বসা নিষেধ। আর খালি বাড়িতে!
    ওরে বাবা! তাহলে তো শেয়াল কুকুরে একসাথে খাবে।
    এই যে মা এত বিধিনিষেধ জারি করে আমায় বড় করে তুলছেন তবু নিজেকে বাঁচাতে পারছি কই।
    প্রকৃতির কাছে ছেলে আর মেয়েরা এত আলাদা কেন!
    কেন মেয়েদের দেখলেই ছুঁয়ে দেয়ার জন্য ছেলেদের জিভ লিকলিক করে।
    এসব কথা ভাবলে এই বাড়ি মানুষ জন আমার অসহ্য লাগে।ইচ্ছে করে ছুটে পালাই।জন মানবশূন্য কোন জায়গায়। এই লারমিনি স্ট্রিটের বাড়িটাও অসহ্য লাগে।
    ৮.
    বিকেল থেকে ভিষণ বৃষ্টি হচ্ছিল।এখন কমে এসেছে। সবকিছু ধুয়ে মুছে কি দারুণ একটা স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে রেখেছে চারদিকে। কাঠগোলাপ, গন্ধরাজ,হাসনাহেনা ফুলের ঘ্রানে মৌ মৌ করছে চারপাশ। মায়ের ঘর থেকে “মধু মালতি ডাকে আয়” গান ভেসে আসছে।দাদারা যে যার ঘরে।আমি টেবিলে বসে খাতা খুলে কাটাকুটি করছি। যে কেউ দেখলে ভাববে আমি বুঝি মনোযোগ দিয়ে লিখছি।আসলে আমার ভিতরে যে সব জটিলতা চলে,যে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজি তা কাকে বলবো কে বুঝবে!সব কিছু ভুলে যেতে চাই মনে মনে মেঘলা কোন দুপুরে কিংবা ধুধু মাঠের কিনারে অথবা শান্ত কোন পুকুরে বা নদীর সামনে বসে থাকি।খোলা আকাশে মুক্ত পাখির উড়াউড়ি দেখি।হঠাৎ শুনি কার যেন পায়ের আওয়াজ। তাড়াতাড়ি পড়ার ভান করি।মা এসে বললেন রাজশাহী থেকে রওশন খালা এসেছেন।আমি যেন গিয়ে দেখা করি।ইনি মায়ের চাচাত বোন।
    বসার ঘরে ঢুকতেই দেখি রওশন খালা আর তার ছেলে।খালাকে সালাম দিয়ে পাশে বসলাম।খালাই বললেন তার ছেলে বুয়েটে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগে সুযোগ পেয়েছে।আগামী সপ্তাহেই হলে উঠবে।তবে এই এক সপ্তাহ আমাদের বাসায় থাকবে।আমি মনে মনে এত বিরক্ত হচ্ছিলাম।কিন্তু মুখে একটা হাসির রেখা টেনে বসে ছিলাম।

উনার নাম পল্লব।এক সপ্তাহ যাবৎ আমাদের বাড়ি আছেন আজ চলে যাচ্ছেন।দারুণ হাসিখুশি আর মিশুকে গোছের মানুষ।লম্বা,সন্দুর স্বাস্থ্য চেহারায় বুদ্ধিদীপ্ত এবং আভিজাত্যের ছাপ স্পষ্ট।
দাদাদের সাথে তো ভিষণ রকম বন্ধুত্ত্ব করে ফেলেছেন।মা ও পল্লবদার ব্যবহার,কথা,লেখাপড়ায় মুগ্ধ।এই সাত দিনে উনিই যেচে পরে আমার সাথে কথা বলেছেন। আমি উত্তর দিয়েই পালিয়েছি।তবে এটাও খেয়াল করেছি পল্লবদার ব্যবহার খুবই সাবলীল।এক টেবিলে বসে সবাই খেয়েছি, কখনো টিভি দেখেছি বা আড্ডায় বসে সবার কথা শুনছি।পল্লব দা কখনো গা ঘেঁষার চেষ্টা করেনি।

।স্থির দৃষ্টিতে আমার বুকের দিকেও তাকায়নি কখনো।
ভাবলাম যাক বাবা! সব পুরুষ মানুষ তবে এক নয়।

আজ যাওয়ার সময় আমার ঘরের কাছে এলেন বিদায় নিতে। আমাকে বললেন

  • বিদিশা আজ চলে যাচ্ছি।
    বলেই আবার বললেন-
    আচ্ছা, তোমার নাম বিদিশা কেন?তোমার নাম হওয়া দরকার ছিল দিশা।যে কেউ তোমাকে দেখলে দিশা হারিয়ে ফেলবে।

বলেই হাসলেন।
আমিও মৃদু হাসলাম।পল্লব দা আবার বললেন-
-ওহ একটা কথা বলা হয় নি।ভিষণ মিষ্টি হাসি তোমার।
এত কম কম হাসো কেন?
বেশি বেশি হাসবে। হাসলে তোমাকে দেখতে দারুণ লাগে।

বলেই তিনি তরতর করে উঠোনের দিকে চলে গেলেন।
কথাটা শুনে আমার সারা গা যেন ঝনঝনিয়ে উঠল।একটা বিদ্যুৎ তরঙ্গ যেন পা থেকে মাথা অবধি ছড়িয়ে গেল।আমি দেখতে ভালো একথা অনেকের থেকে শুনলেও এত আনন্দ কখনো পাইনি।
আমি পল্লবদার ব্যবহারে অভিভূত হয়ে গেলাম।
৯.
পল্লবদা মাঝে মাঝেই আমাদের বাড়ি আসেন।বাড়ির সবার সাথে তার এমন ভাব হয়েছে!আমিও এখন খুব গল্প করি।পল্লবদা এলেই মনে হয় বাড়ির মধ্যে যেন একটা টাটকা বাতাস ঢুকলো।
একদিন ভর দুপুরবেলা মা গেছেন রথি আপাদের বাড়ি।বড়দা ইউনিভার্সিটিতে, মেজদা টিউশনিতে আর ছোটদা ঘুমাচ্ছে।আমি এই অলস দুপুরে শুয়ে শুয়ে বই পড়ছিলাম।হঠাৎ গেইটে কড়া নাড়ার শব্দ। গেইট খুলেই আমার চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে গেল।
পল্লবদা কে দেখে এত আনন্দ হচ্ছিল!বসার ঘরে আমরা গল্প করছিলাম।পল্লবদা আমাকে বললেন -দিশা চা খাবো।
ছুটে গিয়ে রান্না ঘর থেকে চা করে আনলাম।আমি চা খেয়েই যাচ্ছি।কিন্তু পল্লব দা চায়ের কাপে হাত অবধি ছোঁয়াননি।
বরং এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।আমার কেমন যেন অস্বস্তি হতে লাগলো।তবুও হাসি মুখ করে বললাম চা খাচ্ছেন না যে।
পল্লবদা উঠে দাঁড়িয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বললেন

  • দিশা তোমাকে একটা কথা বলবো?

আমার শরীর মন যেন চমকে উঠল।এ কন্ঠস্বর তো আমি চিনি।এভাবে তো রতন কথা বলেছিল।পল্লবদা তো এভাবে কখনো কথা বলেনি।
আমি কি বলে সেখান থেকে পালাব বুঝতে পারছিলাম না।
পল্লবদা আমার কাছে এসে আমার কাঁধে হাত রেখে নির্মিমেশ তাকিয়ে রইলেন।আমি হাত ছাড়িয়ে পালাতে যাবো তখনই তিনি আমাকে আরো শক্ত করে ধরলেন।আর বললেন

  • দিশা এত সুন্দর তুমি! তোমার জন্য আমার কষ্ট হয়।
    তোমাকে দেখলেই আমার….
    আমি বেশ জোরে জোরেই বললাম
    -কি অসভ্যতা হচ্ছে।ছাড়ুন।প্লিজ অমন করবেন না আমার সাথে।আমার একটা কথা শুনুন।
    -তোমার সব কথা শুনব।এখন না।
    আমি ছটফট করছিলাম।আমার মুখে, গলায় বুকে,হাতে, যেন আগুনের স্ফলুঙ্গি অনুভব করলাম।

কোন রকম সেদিন সে বিশ্রি আলঙ্গন থেকে নিজেকে মুক্ত করেছিলাম।কত যে কাঁদলাম সে রাতে! যাকে ভালোবাসবো বলে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম,বন্ধু ভেবেছিলাম সেও কিনা এমন অসভ্যতা করল!নিজেকে ধিক্কার দিচ্ছিলাম কেন খালি ঘরে একটা পুরুষ মানুষের সাথে গল্প করতে গেলাম! আমি কি জানতাম না এমন হতে পারত।খালি বাড়িতে আমি যে নিরাপদ নই এ কথা ভুলে গেলাম কি করে!হোক সে নিজের বাড়ি।
ভিষণ রাগ হচ্ছে নিজের উপর।মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম বেঁচে থাকতে কখনো কোন পুরুষের প্রেমে পরব না।তারা যদি পায়ে পরে কাতর কন্ঠে প্রেম নিবেদন করে তবুও না। আমার ইচ্ছে অনিচ্ছের সম্মান করার পুরুষ যদি এ পৃথিবীতে না থাকে,তবে কি হবে সে প্রেম বা ভালোবাসার সম্পর্ক দিয়ে!

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪