পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় শুরু হয়েছে “সৌমিত্র স্মরণ” ৷ গতকাল থেকে সেখানে চলচ্চিত্র অনুরাগীদের অন্যতম সংগঠন “সিনে ডেলভ” প্রয়াত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের নানা ছবি দেখানো শুরু করেছে ৷ এই সংগঠনটি বিগত ৪০ বছর ধরে নিয়মিতভাবে আগরতলায় চলচ্চিত্র উৎসব করে থাকে ৷ কিন্তু এ’বছর করোনাকালে সেই উৎসবের পরিবর্তে ৩ দিনব্যাপী যে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়েছে, তার নাম “স্মৃতিতে সৌমিত্র”৷
২৫শে ডিসেম্বর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে একটি আলোচনাসভা আয়োজিত হয় ৷ অংশ নেন ত্রিপুরা হাইকোর্টের বিচারক শুভাশিস তলাপাত্র, পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক অভিজিৎ গুহ, অধ্যাপক সুরজিৎ সেন ও প্রখ্যাত ক্যামেরাম্যান স্বপন নন্দী ৷
শুভাশিস তলাপাত্র সৌমিত্রর জীবনে রবীনদ্রনাথ ঠাকুরের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন ৷ সৌমিত্র যে সারাজীবন নাট্যাচার্য্য শিশিরকুমার ভাদুড়ীকে গুরু হিসেবে মেনে এসেছেন, তারও উল্লেখ করেন ৷ অভিজিৎ গুহ তাঁর ও সুদেষ্ণা রায়ের যৌথ পরিচালনায় নির্মিত “শ্রাবণের ধারা” ছবির একটি দৃশ্যের শ্যুটিং-অভিজ্ঞতা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেন৷ ছবিটির মুখ্য চরিত্রে ছিলেন সৌমিত্রবাবু ৷ অধ্যাপক সুরজিৎ সেন সৌমিত্রের নাট্যজীবন নিয়ে নানা মূল্যবান বক্তব্য পেশ করেন৷ চিত্রগ্রাহক স্বপন নন্দী তাঁর দীর্ঘ কেরিয়ারে সৌমিত্রর সঙ্গে কাজ করার নানা অভিজ্ঞতার কথা বলেন ৷ তিনি জানান, ত্রিপুরার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য দেখে “পুলুদা” মুগ্ধ হয়ে যেতেন৷
এই অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত ভাষণ দেন “সিনে ডেলভ”-এর সভাপতি দুলাল চক্রবর্তী৷ পরে, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা “কবিতা সমগ্র” থেকে পাঠ করেন অনুষ্ঠানের সঞ্চালিকা কাকলি গঙ্গোপাধ্যায় ৷ শেষে প্রদর্শিত হয় সত্যজিৎ রায় পরিচালিত “অপুর সংসার”৷
আজ শনিবার দেখানো হবে সত্যজিৎ রায়ের “জয়বাবা ফেলুনাথ”, গৌতম ঘোষের “দেখা” এবং অভিজিৎ গুহ ও সুদেষ্ণা রায় পরিচালিত “শ্রাবণের ধারা” ৷ আগামীকাল অর্থাৎ শেষদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে নিবেদিত হবে সত্যজিৎ রায়ের “অভিযান” এবং তপন সিংহের “আতঙ্ক”৷ বলা বাহুল্য, প্রত্যেকটি ছবিরই মুখ্য চরিত্রে আছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়৷