গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বন্ধুর স্ত্রীকে ধর্ষণ করে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ৯ মাস ধরে নিয়মিত ধর্ষণ করেন ছাত্রদল নেতা খাইরুল আলম সবুজ ও তার দুই বন্ধু।
পরে ধর্ষণের ওই ভিডিও আন্তর্জাতিক কয়েকটি পর্নোসাইটে বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। পরে এ ঘটনায় অভিযুক্ত আসামি সবুজকে বান্দরবান থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতার খাইরুল আলম সবুজ কাপাসিয়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য ও কাপাসিয়ার সাফাইশ্রী গ্রামের শুক্কুর আলীর ছেলে।
কাপাসিয়া থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, সবুজ ভারতে পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বান্দরবানে অবস্থান করছে, এ খবর জানতে পেরে বান্দরবানে একটি হোটেলে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্ত আসামি খাইরুল আলম সবুজের সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেছি।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, দলিল লেখক মাহফুজুর রহমান রাসেল মোল্লার সহকারী হিসেবে কাজ করতেন সাফাইশ্রী গ্রামের এক ব্যক্তি। ২০১৯ সালের ৩ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে রাসেল মোল্লা ওই ব্যক্তির বাড়িতে যান। ওই ব্যক্তি বাড়িতে না থাকার সুযোগে তার স্ত্রীকে জোর করে ধর্ষণ করেন রাসেল মোল্লা। এ দৃশ্য রাসেল মোল্লা মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন। পরে ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে রাসেলের দুই বন্ধু সবুজ ও সোহেলকে নিয়ে প্রায়ই তারা ওই নারীকে ধর্ষণ করতেন।
মামলায় আরো বলা হয়, গত ২২ জুলাই সবুজ ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি ওই নারীর স্বামী জেনে যান। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়। স্ত্রীর বাড়ির লোকজনকে ডেকে এনে তার স্বামী সংসার ভাঙার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। গত ২৪ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে অভিযুক্ত ধর্ষণকারী রাসেল মোল্লা, সবুজ ও সোহেল ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে ওই নারী ও তার স্বামীকে গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে অস্ত্র দেখিয়ে তাদের হত্যার চেষ্টা করেন। পরে ওই নারী এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কাপাসিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
অপরদিকে অভিযুক্ত ধর্ষণকারী রাসেল মোল্লা, সবুজ ও সোহেল ওই নারীকে ধর্ষণ করার ভিডিও বিদেশি কয়েকটি পর্নোসাইটে আপলোড করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। পর্নোসাইটে ধর্ষণের ভিডিও আপলোড করার অভিযোগ এনে গাজীপুর আদালতে ওই নারী বাদী হয়ে পর্নোগ্রাফি আইন ২০১২-এর ৮(১) এবং প্যানেল কোট ৪৪৮/৫০৬ ধারার মামলা দায়ের করেন।
ধর্ষণের শিকার ওই নারীর স্বামী অভিযোগ করে বলেন, রাসেল মোল্লা, সবুজ ও সোহেল মিলে তার স্ত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও আন্তর্জাতিক কয়েকটি পর্নোগ্রাফি সাইটে বিক্রি করে দেন। ইন্দোনেশিয়া ও ভারতের এসব পর্নোসাইটে ধর্ষণের ভিডিও এখন সবার হাতে হাতে।
তিনি বলেন, ওই ঘটনায় ধর্ষণকারী রাসেল মোল্লার বাবা মফিজ উদ্দিন মোল্লা, আসামি সবুজের ব্যবসার ম্যানেজার দুলালসহ অন্যরা নানাভাবে আমাকে ও আমার স্ত্রীর আত্মীয়স্বজনদের হুমকি দিচ্ছে।