ময়মনসিংহের ত্রিশালে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে নির্যাতিত স্ত্রী মাহমুদা আক্তারের (৩০) মামলা করলে ত্রিশাল থানা পুলিশ তদন্ত করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট প্রদান করে। চার্জশিট দাখিলের পর সরকারি চাকুরীর নিয়মানুযায়ী বরখাস্ত হওয়ার কথা থাকলেও তিনি স্বপদে বহাল এবং সরকারি সুবিধা পেয়ে যাচ্ছেন।এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার নূর মোহাম্মদ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
মামলার বিবরণ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় ত্রিশাল উপজেলার বাগান গ্রামের মাহমুদা আক্তারের বিয়ে হয় ২০১৮ সালের জুলাই মাসের ১১ তারিখ ত্রিশাল বাজারের আব্দুল বারেকের ছেলে বড়মা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান বেলাল এর সাথে । বিয়ের সময় মিজানুর রহমান বেলাল শ্বশুরের কাছ থেকে দু লাখ টাকা যৌতুক নেন। পরবর্তীতে তাদের একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। এরপর আবারো যৌতুকের জন্য বেলাল স্ত্রীকে চাপ প্রয়োগ ও প্রায়ই মারধর করতো। গত ২০১৯ সালে ১২ অক্টোবর রাত দশটার পর স্ত্রী মাহমুদা আক্তারকে অমানুষিক নির্যাতন এবং ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। এ সময় বেলালের বাবা বারেক ও মা রোশনারা গরম খুন্তি দিয়ে ছেখা দেন এবং অজ্ঞান অবস্থায় মেঝেতে ফেলে রাখেন।
এ ঘটনার খবর পেয়ে মাহমুদার বাবা মেয়েকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করান এবং বেলাল সহ তার বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। তারপর থেকে পলাতক থাকা অবস্থায় ১৯ নভেম্বর ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ তারিখে হাইকোর্ট থেকে জামিন আনেন মিজানুর রহমান বেলাল। গত ৩০ জানুয়ারি আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে ত্রিশাল থানা পুলিশ। চার্জশিট দাখিলের পর সরকারি কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত বলে বিবেচিত হওয়ার বিধান থাকলেও মিজানুর রহমান বেলাল স্বপদে বহাল আছেন এবং সরকারী সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করছেন।
মামলা দায়েরের পর তিনি দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসনে আরা পারভীন জানান সেই সময় তিনি অসুস্থতার জন্য ছুটিতে ছিলেন।