যশোরে ব্যাংকের সামনে থেকে জনসম্মুখে ছুরি ও বোমা মেরে ১৭ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের নেপথ্যে গডফাদাররা চিহ্নিত হয়েছে। টাকার ভাগও পায় তারা। প্রাথমিকভাবে পুলিশ এমন ৪ জনের পরিচয়ও নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। এই গডফাদাররা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে যশোরের নানা অপরাধ নিয়ন্ত্রন করে। তাদের ক্যাডারদের বিভিন্ন ঘটনায় অশান্ত যশোর শহর। এদিকে, এই মামলার তিন সাক্ষি শুক্রবার আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে।
জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহাদী হাসান তাদের জবানবন্দী ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করেছে। স্বাক্ষীরা হলেন, শহরের পূর্ববারান্দী মোল্লাপাড়া খালপাড় এলাকার শাহজাহানের তিন ছেলে কালু, বিল্লাল ও শুকুর। জবানবন্দীতে তারা ছিনতােইয়ের টাকা ভাগাভাগির বিস্তারিত প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর তুষার কুমার মন্ডল। তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, টাকা ছিনিয়ে নেয়ার মামলায় শুক্রবার পর্যন্ত আর কোন আসামি আটক হয়নি। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছেন, স্বাক্ষীদের জবানবন্দী মতে ঘটনার দিন ব্যাগভর্তি টাকা কেড়ে নেয়ার পর আরাফাত নামে এক সন্ত্রাসী বারান্দীপাড়ার দিকে চলে যায়। বারান্দী মোল্লাপাড়া এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা এই ঘটনার সাথে জড়িত।
আরাফাত সরাসরি ওই টাকা নিয়ে কালুর বাড়িতে উঠে। কালুর বন্ধু আরাফাত। সেই সূত্রে সেখানে গিয়ে ওই টাকার একটি ভাগাভাগি হয়। পরে টাকার বাকি অংশ হয় অন্য স্থানে। ছিনতাই করা টাকার ভাগ কোন নেতা ও প্রভাবশালীরা পেয়েছে পুলিশ সেই সম্পর্কে
নিশ্চিত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, টাকার ভাগ পাওয়াদের মধ্যে রয়েছে শহরের মন্ডলগাতী এলাকার এক চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মোল্লাপাড়া এলাকার এক পরিবহন শ্রমিক নেতার ছেলে, তাঁতীলীগের নেতা পরিচয়দানকারী এক দুর্বৃত্ত্ব (যিনি এক সাংবাদিক নেতাকে লাঞ্চিত করে আলোচনায় আসেন), একটি ছাত্র সংগঠনের সাবেক নেতা, মোল্লাপাড়া এলাকার এক চিহ্নিত সন্ত্রাসীর (দেশের বাইরে থেকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের নিয়ন্ত্রক) ভাই, আত্মীয়সহ বেশ কয়েকজন রয়েছে। বর্তমানে তারা পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে। যে কোন সময় তারা গ্রেফতার হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর যশোর শহরের এমকে রোডের অবস্থিত ইউসিবিএল ব্যাংকের সামনে ব্যবসায়ী এনামুল হককে ছুরিকাঘাত করে ও বোমা মেরে প্রকাশ্যে ১৭ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। মামলা হওয়ার পর পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত ৫ জনকে আটক করে। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পুলিশ তাদের শনাক্ত করেছিলো।