1. boyd94289@gmail.com : Ayon Islam : Ayon Islam
  2. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  3. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  4. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
  5. bangladeshbulleting646@gmail.com : Sohel Desk : Sohel Desk
শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩৭ অপরাহ্ন

জনসম্মুখে ছিনতাইয়ে জড়িত ৫ জন আটকঃ ঘটনায় রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা জড়িত

  • সময় : বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর, ২০২০
  • ২৫৪

ব্যবসায়ী ইকবাল হোসনের পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আরআই ইন্টারন্যাশনাল নামক ফলের দোকানে দৈনিক হাজিরার (দুইশ টাকা) ভিত্তিতে কাজ করতো টিপু (২৪)। ফলের দোকানের প্রতিদিনের লাখ লাখ টাকা লেনদেনের বিষয়টি সে ভালভাবে জানতো। দৈনিক কাজ না করার চেয়ে একদিন ওই টাকা হাতিয়ে নিয়ে সে লাভবান হবে এমন চিন্তা করে। তার ভাবনার ফল স্বরুপ সাজানো হয় ডাকাতির প্রস্তুতি। গত ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুর দুইটার দিকে যশোর জেসটাওয়ারের বিপরীতে ইউসিবিএল ব্যাংকের সামনে ১৭ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার পেছনে টিপুসহ যশোরের বেশ কয়েজন চিহ্নিত অপরাধী জড়িত বলে জানিয়েছেন যশোরের পুলিশ সুুপার আশরাফ হোসেন।


বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিং এ এই সম্পর্কে তথ্য জানান এসপি আশরাফ হোসেন। ঘটনার সাথে জড়িত অভিযোগে ৫ জনকে আটক করা হয়। এছাড়া এই ঘটনার পেছনে যশোরের প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা রয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
আটক ৫জন হলো, শহরের পুলিশ লাইন টালিখোলা এলাকার শফি দারোগার বাড়ির ভাড়াটিয় মুনসুর মোাল্লার ছেলে টিপু, বারান্দী মোল্লাপাড়া কবরস্থান পাড়ার রবিউল ইসলামের ছেলে সাইদ ইসলাম শুভ (২৪), ধর্মতলা হ্যাচারিপাড়ার রুহুল আমিনের ছেলে বিল্লাল হোসেন ওরফে ভাগ্নে বিল্লাল (২২),

সিটি কলেজ পাড়ার নিজাম উদ্দিনের ছেলে রায়হান (২৮) এবং পূর্ববারান্দিপাড়ার মৃত মুফতি আলী হোসেনের ছেলে ইমদাদুল হক (২১)। তাদের কাছ থেকে নগদ ২ লাখ ৪৮ হাজার ৫শ’ টাকা, একটি কালো স্কুল ব্যাগ, ২টি চাকু এবং একটি মোটরসাইকেল (যশোর-ল-১৩-২৬৩৩) জব্দ করা হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিং এ বলা হয়, টিপু দোকানে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে কাজ করার পাশাপাশি নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। শহরের বিভিন্ন অপরাধীর সাথে তার পরিচয় ও সখ্যতা রয়েছে। টাকা ব্যাংকে কখন নেয়া হয়, কে কী ভাবে নিয়ে যায় তা ভালভাবে জেনে নেয় টিপু। এরপর বিষয়টি বারান্দীপাড়া এলাকার রাজ্জাক ওরফে জামাই রাজ্জাককে জানায়।

জামাই রাজ্জাক হত্যাসহ বেশ কয়েকটি মামলার আসামি। তার প্রকাশ্য পেশা ফেরি করে ফল বিক্রি করা। আর গোপনে সে ছিনতাই ডাকাতিসহ নানা অপরাধ মূলক কাজ করে বেড়াই। রাজ্জাক বিষয়টি অন্য অপরাধীর সাথে নিয়ে পরিকল্পনা করে। পুরো এই ঘটনার সাথে ৮/৯জন জড়িত। পরিকল্পনা অনুযায়ী টিপুর কাজ ছিলো টাকা বগনকারীকে চিনিয়ে দেয়। সে মোতাবেক ২৯ সেপ্টেম্বর দুপর একটার পর থেকে জেসটাওয়ারের চারদিক অবস্থান নেয় শুভ, ভাগ্নে বিল্লাল, রায়হান, ইমাদুলসহ ৮/৯ জন। আর মোবাইল ফোনে টিপু তথ্য দিতে থাকে। বেলা দুইটার দিকে ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেনের ভাই এনামুল ও চাচাতো শ্যালক ইমন ১৭ লাখ টাকা নিয়ে ব্যাংকে উঠার মুহুর্তে মোবাইল ফোনে দুইজনের চেনার ওপায় বলে দেয় সে মোতাবেক ছুরিকাঘাত করে বোমা ফটিয়ে ওই টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়।

টাাক ছিনিয়ে নেয়ার সময় তারা যাতে জনগণের রোষানলে না পড়ে সে জন্য আশেপাশে অবস্থান নেয় আরো বেশ কয়েকজন। এর আগে রায়হার তার মোটরসাইকেলে করে তার অনুগতদের আনানেয়ার কাজটি করে।
তিনি বলেন, যারা এই ছিনতাই কাজে জড়িত তারা সবাই সন্ত্রাসী। তাদের প্রত্যেকের নামে থানায় বিভিন্ন অপরাধের মামলা রয়েছে। ঘটনার পর ঘটনাস্থলের সিসি টিভির ফুটেজ এবং প্রযুক্তির ব্যবহার করে আসামিদের শনাক্ত করা হয়। এরপর পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সমন্বয়ে অভিযান চালিয়ে শহরের ধর্মতলা, বসুন্দিয়া, আলাদিপুর, বারান্দিপাড়া, সিটি কলেজ পাড়া ও পুলিশ লাইন টালিখোলা এলাকায় একাধিক অভিযান চালিয়ে জড়িতদের আটক করা হয়।


পুলিশ সুপার জানান, আটককৃতরা শহরের মণিহার এলাকায় চলাফেরা করে। ঐ এলাকাতেই মোটরপার্টস ও ফলের ব্যবসা করেন এনামুল হক। তাদের কাছ থেকেই ২৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশ্য দিবালোকে এরা টাকা ছিনতাই করে। জড়িত অন্যদেরকেও আটক করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। তিনি আরো জানান এঘটনার সাথে ৮/১০ জন জড়িত থাকতে পারে। এছাড়া ডাকাতি করে অপরাধীরা রাজনৈতিক নেতাদের কাছে আশ্রয় নেয়। প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয়ে গিয়ে তারা বাঁচার চেষ্টা করেছিলো। প্রভাবশালীদের পরিচয়ও পুলিশ জানতে পেরেছে।
পুলিশ সুপারের ব্রিফিংয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পূলিশ সুপার (অপরাধ) সালাউদ্দিন শিকদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) তৌহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপু সরোয়ার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক) সার্কেল গোলাম রব্বানী,

কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান, ডিবি পুলিশের ওসি সোমেন দাস, চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর রোকিবুজ্জামান, সদর পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর তুষার কুমার মন্ডলসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
তবে পুলিশের একটি সূত্রে জানাগেছে, ডাকাতির সময় ব্যাগটি কেড়ে নেয় আরাফাত নামে এক সন্ত্রাসী। সেসহ অন্যরা টাকা নিয়ে বারান্দী মোল্লাপাড়া এলাকার এক চিহ্নিত অপরাধীর (গুলিতে পা হারানো) বাড়িতে উঠে। সেখানে বসেই কিছু টাকা ভাগবাটোয়ারা হয়। লুন্ঠিত টাকার একটি বড় অংশ রয়ে যায় ওই অপরাধীর বাড়িতে। তাকে পুলিশ আটক করতে পারেনি। আর আরাফাতের ছবিসহ তার পূর্ণ পরিচয় পুলিশের হাতে আছে তাকে আটকের জন্য বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে।


এদিকে আটক ৫জনের মধ্যে টিপু ও শুভ আদালতে ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুদ্দীন হোসাইন তাদের জবানবন্দী ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করেছেন। এছাড়া সাক্ষী হিসাবে কাল ও বিল্লালসহ ৩জন জবানবন্দী দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪