আমতা হরলাল উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মার্জিয়া আক্তার। শরীরে জ্বর নিয়ে সাটুরিয়া হাসপাতালে ভর্তি হয় মঙ্গলবার দুপুরে। কোন চিকিৎসা না পেয়ে রাত সাড়ে ৮ টার সময় মারা যায়। করোনা হয়েছে বলে কোন নার্স বা ডাক্তার ওই রোগীকে দেখভাল করেনি। এমনি অভিযোগ মা বাবা ও নারী ওয়ার্ডের রোগীদের।
এদিকে নারী ওয়ার্ডের রোগীরা চোখের সামনে তরতাজা মেয়েটির মৃত্যু দেখে হতবাক। মৃত্যুর সময় নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হলেও নার্স বা ডাক্তারদের ডাকলে তারা কাছে আসেনি। মেয়েটির মৃত্যু দেখে নারী ওয়ার্ডের সকল রোগী কান্নায় ভেঙ্গে পরে। নারী ওয়ার্ডের রোগীদের অভিযোগ, ডাক্তার নার্সদের কোন সমস্যার জন্য ডাকলে তারা রোগীদের সাথে খারাপ আচারণ করেন। সব রোগীদের একই অভিযোগ নার্সদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ রোগীরা।
মার্জিয়ার মা নয়নতারা জানান, ভর্তি হওয়ার পর একবার নার্স এসে স্যালাইন দিয়ে যায়। সন্ধ্যার পর থেকে মেয়ের শারীরিক অবস্থার অবনিত হলে নার্সদের বললে তারা কোন কর্ণপাত করেনি। মেয়েটির যখন নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হয় এবং বিছানায় শুয়ে ছটপট করছে তখন তাকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করতে ব্যস্ত তারা।
মার্জিয়ার মা নয়নতারা বলেন, সময়মতো ডাক্তার নার্স দেখভাল করলে মেয়েটি মরত না। মেয়েটির করুণ মৃত্যুর দৃশ্য দেখতে নারী ওয়ার্ডের সকল রোগী এগিয়ে আসলেও নার্স ডাক্তাররা এগিয়ে আসেনি বলে অভিযোগ করেন।
মার্জিয়ার বাবা রফিক জানায়, সন্ধ্যার সময় মেয়েকে হাসপাতালে ভালো দেখে আমি বাড়ি চলে আসি। বাড়ি আসার পথেই শুনি মেয়ের অবস্থা ভালো না।
পরে হাসপাতালে গিয়ে দেখি মেয়ে মারা গেছে। চিকিৎসার অবহেলার কারণেই তার মেয়ে মারা গেছে বলে অভিযোগ করেন।
দ্বিমুখা গ্রামের পারভীন আক্তার বলেন, মা রওশনারাকে জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন। শরীরে জ্বর থাকায় কোন ডাক্তার বা নার্স তার মাকে চিকিৎসা দিচ্ছে না। দুর থেকে দেখে চলে যায়। নার্সদের ডাকলে তারা খারাপ আচরণ করেন। ডাক্তারের কাছেতো যাওয়াই যায় না। একই অভিযোগ হামদুলিয়া গ্রামের কয়েকজন রোগীর।
এদিকে যেসব রোগী জ্বর নিয়ে ভর্তি হবে তাদের আলাদা রাখার কথা। সাধারণ রোগীদের সাথে জ্বর হাছি বা কাশি রোগীদের একই রুমে রাথা হয়েছে। এতে সাধারন রোগীরা মনে করেন কারোনা হলে সাধারণ রোগীরাও করোনায় আক্রান্ত হবে। রোগীদের অভিযোগ এ হাসপাতালে কোন নিয়ম শৃংঙ্গলা নেই। প্রশাসনিক কাঠামো দুর্বলাতার কারনেই নার্সরা রোগীদের সাথে দুব্যবহার করে থাকে।
সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাঃ মামুন উর রশিদ বলেন, মার্জিয়া নামে যে মেয়েটি মারা গেছে তার করোনার উপসর্গ ছিল। ধারনা করা হচ্ছে সে করোনা পজেটিভ হয়ে মারা গেছে। নার্স ডাক্তারদের অবহেলা ও খারাপ আচারণের কথা জানালে
তিনি বলেন এধরণের অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মারা যাওয়া মেয়েটির করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন পরীক্ষা করা হয়নি।